নির্বাক, ব্যতিক্রমী ভাবনার নাটক ‘কনডেমড সেল’
RBN Web Desk: সাহিত্য রচনার ক্ষেত্রে একটি বিশেষ রূপশ্রেণী হলো নাটক। অনেকের মতে নাটক একপ্রকার দৃশ্যকাব্যও বটে। বর্তমান সময়ে দাঁড়িয়ে টেলিভিশনের মাধ্যমে নাটক পরিবেশিত হলেও, মঞ্চই নাটকের প্রকৃত ও যথার্থ পরিবেশনার স্থল। নাটকের পরিবেশন ও অভিনয় ক্ষমতা একজন অভিনেতার দক্ষতা বিচারের আদর্শ জায়গা। সেই দক্ষতাকেই আরও এককাঠি বাড়িয়ে দেওয়ার উদ্দেশ্যে মঞ্চস্থ হতে চলেছে দেবকুমার পালের ব্যতিক্রমী ভাবনার নাটক ‘কনডেমড সেল’।
দেবকুমারের নাটকটি সম্পূর্ণভাবে নির্বাক। শুধুমাত্র কয়েকটি ঘটনা, আবহ সঙ্গীত এবং দৃশ্যায়নের মাধ্যমে এগিয় চলে নাটকটি। কারাগারে বন্দী দুই নারী-পুরুষের প্রেমের কথা নিয়ে এই নাটক। দুজনের মধ্যে কোনও কথা হয় না, এমনকি কেউ কাউকে কোনওদিন দেখেনি। তাও ভালোবাসতে তো কোনও বাঁধা নেই। দুটি চরিত্রের মধ্যে ব্যবধান বলতে শুধু একটি দেওয়াল। মেয়েটি একজন নৃত্যশিল্পী এবং ছেলেটি ছবি আঁকে। দুজনেরই একটি অতীত আছে যার জন্য আজ তারা কারাগারে বন্দী। এরপরেও মেয়েটি চায় ছেলেটির তুলির টানে ঘুঙুরের শব্দ তুলতে। ছেলেটির ক্যানভাস ভরে ওঠে মেয়েটির স্বপ্নিল নৃত্যভঙ্গিমায়। এর মাঝে জন্ম নেয় অনেক দ্বন্দ্ব। নাটক যত এগিয়ে চলে, সেই দ্বন্দ্বও ক্রমে ঘনীভূত রূপ লাভ করে একটি উত্তুঙ্গ অবস্থানে পৌঁছনোর পর।
আরও পড়ুন: জল্পনার অবসান, ‘ফেলুদা ফেরত’-এ মগনলাল চরিত্রের অভিনেতা বাছলেন সৃজিত
রেডিওবাংলানেট-কে দেবকুমার জানালেন, “স্বাধীনতা সংগ্রামী ও বিশিষ্ট মালায়লী লেখক ভৈকম মহম্মদ বশিরের একটি লেখার কিছু ঘটনা থেকে এই নাটকটি অনুপ্রাণিত। নাটকটির বাংলা রূপান্তর করেছেন বিপ্লব বন্দ্যোপাধ্যায়।”
নাটকের ক্ষেত্রে তো সংলাপ ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ। সেখানে সংলাপহীন ‘কনডেমড সেল’ দর্শকদের কাছে পৌঁছে দিতে কোনো সমস্যা হচ্ছে না? “এখনও পর্যন্ত যাঁরা ‘কনডেমড সেল’ দেখেছেন, প্রত্যেকেই এই নাটকের কাছে পৌঁছতে পেরেছেন। আমরা বিভিন্ন দৃশ্য ও আবহের মাধ্যমে এমন কিছু দৃশ্য দেখাতে সক্ষম হয়েছি যেটা দর্শকদের এই নাটক বুঝতে সাহায্য করছে,” জানালেন দেবকুমার।
আরও পড়ুন: ভয় পাওয়াতে আসছে নতুন মিনি সিরিজ়
২৬ জানুয়ারি সল্টলেকে প্রাচ্য গোষ্ঠী আয়োজিত ‘ঘরে বাইরে’ নাট্যোৎসবে মঞ্চস্থ হবে ‘কনডেমড সেল’। নয় দিনের এই উৎসবে থাকছে চন্দন সেনের ‘আর্কিমিডিসের মৃত্যু’, অঞ্জন দত্তর ‘রঘুপতি’, খরাজ মুখোপাধ্যায়ের ‘পড়ে পাওয়া ষোলো আনা’, সুজন মুখোপাধ্যায়ের ‘মাগন রাজার পালা’, গৌতম হালদারের ‘কাব্যে গানে’, ব্রাত্য বসুর ‘সিনেমার মতো’, রুদ্রপ্রসাদ সেনগুপ্তর ‘পৃথিবী-রাস্তা-শব্দ’, শান্তনু চট্টোপাধ্যায়ের সুজন ‘হরবোলা’, বিপ্লব বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘খেলাঘর’ ও কৌশিক চট্টোপাধ্যায়ের ‘কোজাগরী’।