জেলভাঙা দুর্গা! নামকরণেই বাজিমাৎ করতে চাইছে চিৎপুর
RBN Web Desk: “সে সব দিন গেছে প্রিয়তোষ,” অত্যন্ত আক্ষেপ নিয়ে বলেছিলেন সত্যজিৎ রায়ের পরশ পাথর ছবিতে তুলসী চক্রবর্তী অভিনীত চরিত্র পরেশচন্দ্র দত্ত। নিজের একসময়ের অভিনয় দক্ষতা বোঝাতেই পরেশবাবুর এই খেদোক্তি। সত্যজিৎ আজ বেঁচে থাকলে পরেশবাবুর মুখে কি সংলাপ বসাতেন বলা কঠিন, তবে এটা ঘটনা, যাত্রায় অভিনয় এখন গৌণ। নামকরণেই একে অপরকে টেক্কা দিতে নেমেছে চিৎপুরের যাত্রা সংস্থাগুলি।
দু’দশক আগেও পৌরাণিক পালা ছিল বাংলার যাত্রার মূল ভিত। সেই দিন আজ অতীত। টেলিভিশনের ক্রমবর্ধমান জনপ্রিয়তার সাথে পাল্লা দিতে, আর যাত্রাশিল্পকে বাঁচিয়ে রাখতে, সামাজিক পালাই এখন যাত্রার চালিকাশক্তি। তবে এখন নামকরণের ওপরই জোর দিচ্ছে যাত্রাপাড়া। তা ছাড়া টিভির অনেক তারকাই নিয়মিত যাত্রা করে থাকেন। এই শিল্পে বিপুল আয়ের দিকটা উপেক্ষা করা সম্ভব হয় না অনেকেরই। আর তাই গত বেশ কয়েক বছর ধরে টিভি সিরিয়ালের অভিনেতা-অভিনেত্রীদের দরজায় কড়া নাড়ছে দল মালিকরা। গ্রামবাংলার দর্শকরাও চাইছেন যাদের টিভির পর্দায় দেখেন, তাঁদের চোখের সামনে দেখতে।
অ্যাডভেঞ্চারের খোঁজে এবার পরম, কোয়েল, গৌরব
তবে নামকরণই যে বাংলার যাত্রাপালার ইউ এস পি, সেটা এক বাক্যে মেনে নিচ্ছে প্রায় সব দলই। এই মরসুমে কয়েকটি পালার নাম এরকম: বৌদি নাম্বার ওয়ান, পল্লীগাঁয়ের ময়লা মেয়ে, পতিত পাবনী গঙ্গা, ভোরের আকাশে একমুঠো আবীর, জেলভাঙা দুর্গা, সাথীহারা সাহেব, হিসাব কষা ভালবাসা, রাজপথের রাজা, মেঘলা রাতের একলা পথিক, রাঙা মেয়ের ভাঙা জীবন, বাপেরও বাপ আছে।
কুমোরটুলি মৃৎশিল্পীদের নিয়ে ফিরছেন সুদীপা
কিন্তু এরকম চটকদার নাম ঠিক করেন কারা? চিৎপুরের এক দল মালিকের বক্তব্য, পালার নামকরণ পালাকারই করেন। আবার কখনও কখনও মালিকও করে থাকেন। নাম দেওয়ার আগে বেশকিছু দিক বিবেচনা করা হয় যেমন—নামটি আকর্ষণীয় কি না, উচ্চারণ করা সহজ কি না, দর্শকের মনে রাখতে কতটা সুবিধা হবে—এই সব বিষয়। যেহেতু যাত্রাপালা এখনও মূলত গ্রামের মানুষের মনোরঞ্জনের জন্য লেখা হয়, তাই চটকদার নামের ওপর জোর দেন লেখক, মালিকপক্ষের দাবী।