আমার আশেপাশে আর কেউ ছিল না: সুমিত
RBN Web Desk: নব্বইয়ের দশকের বাংলা ছবিতে ভিলেন বলতেই মনে পড়ত কটা চোখের সুমিত গঙ্গোপাধ্যায়কে। বেশ কয়েক বছর হলো, ছবিতে তেমনভাবে তাঁকে দেখা যাচ্ছে না। তবে পরিচালক নেহাল দত্তের ‘অপরাজেয়’তে অভিনয় করছেন তিনি। এই ছবির কেন্দ্রীয় চরিত্রে রয়েছেন রঞ্জিত মল্লিক। অন্যান্য চরিত্রে অভিনয় করছেন সাবিত্রী চট্টোপাধ্যায়, লাবণী সরকার, মৃণাল মুখোপাধ্যায়, ফাল্গুনী চট্টোপাধ্যায়, সায়ন বন্দোপাধ্যায়, বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য, রঞ্জন ভট্টাচার্য, গোপাল তালুকদার ও ওরিন।
সেই ভয়ঙ্কর খলনায়কের চরিত্রগুলো কি মিস করেন? “সত্যি কথা বলতে কী এখন আর সেরকম চরিত্র তৈরি হয় না,” রেডিওবাংলানেট-কে বললেন সুমিত। “সেই সময় একটা ট্রেন্ড এসেছিল, দক্ষিণের ছবির আদলে। আর সেখানে আমি মানিয়ে যেতাম। সেই সময় আমার আশেপাশে আর কেউ ছিল না। এখন আবার ভালো চরিত্র করছি।”
এই ছবিতে তাঁর দুটি শেড আছে বলে জানালেন সুমিত। প্রথমে গুন্ডা আর পরে বই বিক্রেতা। “রঞ্জিতদার সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়াই করব,” বললেন সুমিত।
আড়ও পড়ুন: শেষের সেদিন, উপস্থিত ছিলেন শুধু মহেশ ও ড্যানি
ভালো মানুষের চরিত্রে তাঁকে দর্শক কতটা নেবেন বলে মনে হয়? হাসতে-হাসতে সুমিতের দাবি, “দুশো শতাংশ নেবে। আমাকে নায়ক করে কোয়েলকে (মল্লিক) নায়িকা করুন আর দেবকে ভিলেন বানান। ছবি হিট হবেই। সৃজিতকে (মুখোপাধ্যায়) ছবিটা পরিচালনা করতে হবে। ও তো বলেছিল আমার ছবিতে ভিলেন করার জন্য কোনও নীল চোখের দরকার হয় না। শেষে রোগা দেখে একজন কমেডিয়ানকে ভিলেন করতে হয়। তাহলে নায়ক করতে দেব, জিৎ, প্রসেনজিতের কী দরকার? সুমিতকে দিয়েই হয়ে যাবে। ওই জন্যই চ্যালেঞ্জটা দিলাম।”
আগামীদিনে তাঁর অভিনীত বেশ কিছু ছবি মুক্তি পেতে চলেছে বলে জানালেন সুমিত।
‘অপরাজেয়’র গল্প এক আইনজীবীর জীবনকে কেন্দ্র করে। সৎ ও সত্যবাদী আইনজীবী শুভঙ্কর সান্যাল (রঞ্জিত) কখনও অন্যায়ের সঙ্গে আপোষ করেননি। কিন্তু বহু বছর মাথা উঁচু করে কাজ করার পর একটা সময় অনৈতিকভাবে তার মক্কেল টাকার জন্য কেস তুলে নেওয়ায় অবসর নেন শুভঙ্কর। ওদিকে একমাত্র ছেলে তার পরিবার নিয়ে বিদেশে গিয়ে পেশার চাপে ফিরতে না পারায় শুভঙ্করের স্ত্রী (লাবণী) নিজেকে শেষ করে দেন। তাহলে কি শেষ হয়ে যাবেন শুভঙ্কর? নাকি আবার ঘুরে দাঁড়াবেন তিনি?
আরও পড়ুন: শেষ যাত্রায় ব্রাত্য, পথ হেঁটেছিলেন মাত্র কয়েকজন
“রঞ্জিত আঙ্কলকে তরুণ মজুমদারের সহকারী হিসেবে কাজ করার সময় থেকেই চিনতাম,” বললেন নেহাল। “উনি তখনই বলেছিলেন আমার সঙ্গে ছবি করবেন। কিন্তু তারপরেও আটটা ছবিতে ওঁকে আমি পাইনি কারণ চরিত্র পছন্দ না হলে উনি ছবি করেন না। শেষে এই ছবিতে শুভঙ্কর সান্যালের প্রতিবাদী চরিত্রটা ওঁর পছন্দ হয়।”
চরিত্রের নাম এক হলেও এই ছবিকে ‘শত্রু’ ছবির সিক্যুয়েল বলতে চান না নেহাল। তাঁর মতে ওখানে ছিল পুলিশের উর্দি আর এখানে কালো কোট।
বহুদিন বাদে বড়পর্দায় ফিরছেন রঞ্জিত। কেরিয়ারের কারণে এই প্রজন্মের বিদেশে থেকে যাওয়া বা সময়ে বাড়ি ফিরতে না পারাকে কীভাবে দেখেন তিনি? “আমি মনে করি না এর জন্য ওদের দায়ী করা উচিৎ। আমরাই ওদের পড়াশোনা শিখিয়ে বাইরে পাঠাচ্ছি। ওখানে কতটা কাজের চাপ বা জীবনযাত্রার মান কেমন সে সম্পর্কে এখানে বসে ধারণা করা যায় না। আর বিদেশ থেকে চাইলেই তো চলে আসা যায় না। অবশ্যই দুপক্ষেরই এই ব্যাপারে কথা বলে মধ্যস্থতায় আসা উচিত বলে আমি মনে করি। বাড়ি আসতে না পারলে ওদেরও খারাপ লাগে এটা আমাদের বোঝা দরকার,” বললেন রঞ্জিত।