ফ্যান্টাসি ছবি নয় ‘জ়ম্বিস্তান’, দাবী পরিচালকের
বেশি দিন বাকি নেই। ২০৩০ সাল আসতে আর মাত্র ১১ বছর, যখন বায়োকেমিক্যাল তেজস্ক্রিয় ভাইরাসে আক্রান্ত হবে সমগ্র মানবজাতি। গোটা পৃথিবীর বেশিরভাগ অংশই ধ্বংস হয়ে গেছে ততদিনে। অবশিষ্ট কয়েকজন মানুষ এক অভূতপূর্ব ভাইরাসের কারণে একে একে পরিণত হচ্ছে বোধহীন, হিংস্র প্রেত বা জ়ম্বিতে।
না, কোনও বিদেশী বৈজ্ঞানিক সংস্থার গবেষণার রিপোর্ট নয়। এ হলো অভিরূপ ঘোষের আগামী ছবির প্রেক্ষাপট। বাংলায় প্রথম জ়ম্বি বিষয়ক ছবি ‘জ়ম্বিস্তান’-এর সময়কাল ২০৩০। ছবিতে বায়োকেমিক্যাল ভাইরাসে ক্ষতিগ্রস্ত মানবজাতির ভয়ঙ্কর পরিণতির গল্প বলেছেন অভিরূপ। সম্প্রতি মুক্তি পেয়েছে এই ছবির টিজ়ার।
‘জ়ম্বিস্তান’-এ দেখা যাবে এমনই এক পৃথিবী যেখানে সেই বিশেষ ভাইরাসের সংক্রমণ মহামারীর আকার নিয়েছে। বিভিন্ন দেশে মানুষের মৃত্যুর হার বাড়তে বাড়তে মানব সভ্যতা প্রায় ধ্বংসের মুখে। যারা বেঁচে আছে, তাদের মধ্যে বেশিরভাগই রক্তখেকো হিংস্র জ়ম্বিতে পরিণত হয়েছে। মাংসের লোভে যে কোনও সময় এরা আক্রমণ করতে পারে সুস্থ স্বাভাবিক মানুষকে। গুটিকতক সুস্থ মানুষ যারা এখনও বেঁচে রয়েছে এই পৃথিবীতে, তারাই এক হয়ে প্রতিরোধ গড়ে তোলার চেষ্টায় লড়াই করে যায় জ়ম্বিদের বিরুদ্ধে।
আরও পড়ুন: মহালয়ায় ‘উমা’ নিয়ে আসছেন ঋদ্ধি
তেমনই একটি মেয়ে আকিরা সম্ভাব্য আশ্রয়ের খোঁজে গ্রাম বাংলার রাস্তা দিয়ে এগিয়ে যায় অজানা আতঙ্ক নিয়ে। তার চলার পথে আসে নানান বাধা, দেখা হয়ে যায় অনিল চ্যাটার্জী নামক এক ব্যক্তির সঙ্গে যিনি এই অসম যুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলা অসম্ভব বলেই ধরে নিয়েছেন। এরপর আকিরার সঙ্গে দেখা হয় এক প্রাইভেট এস্টেটের রাজা হরিদাসের সঙ্গে, যিনি এ যুগেও বিনিময় প্রথার মাধ্যমে যৌনদাসী কেনাবেচা করেন। এইভাবে এক অচেনা ও ভয়াবহ ভবিষ্যতের সামনে দর্শককে দাঁড় করিয়ে দেয় ‘জ়ম্বিস্তান’।
অভিরূপ নিজেই লিখেছেন ‘জ়ম্বিস্তান’-এর কাহিনী। ছবির বিভিন্ন ভূমিকায় অভিনয় করেছেন তনুশ্রী চক্রবর্তী, রুদ্রনীল ঘোষ, রজতাভ দত্ত, দেবলীনা বিশ্বাস, জিনা তরফদার, সৌরভ সাহা, সৌমেন বোস ও অন্যান্যরা। সঙ্গীতের দায়িত্বে রয়েছেন মেঘ বন্দ্যোপাধ্যায়য় ও অভিরাজ সেন।
আরও পড়ুন: নিঃস্ব জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত সুরকার, অর্থ সংগ্রহে শুভানুধ্যায়ীরা
“এই ছবির মাধ্যমে আমি বর্তমান পৃথিবীতে যা কিছু ঘটে চলছে তার কুপ্রভাব নিয়ে বলতে চেয়েছি,” রেডিওবাংলানেট-কে জানালেন অভিরূপ। “যেভাবে পারমানবিক মারণাস্ত্রের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে, একটা সময় হয়তো আসবে যখন এর শক্তিশালী প্রভাব থেকে মানবজাতিকে আর বাঁচানো সম্ভব হবে না। তখন কী হতে পারে সেই ভেবেই এই গল্পটা লেখা হয়েছে। ‘জ়ম্বিস্তান’-কে তাই ফ্যান্টাসি ছবি বলা উচিত হবে না। বর্তমানে সামাজিক ও রাজনৈতিক ক্ষেত্রে যা ঘটছে, তাকে যদি থামানো বা পাল্টানো না যায় তাহলে পৃথিবীর শেষ হতে আর বেশী দেরি নেই, এটাই আমার ছবির মূল বক্তব্য। কিছুটা কল্পবিজ্ঞান আর কিছুটা বাস্তব ঘটনার সম্ভাব্য সুদূরপ্রসারী ফলাফলকে মিলিয়ে ছবিটা তৈরি করেছি আমি।”
ছবির মূল সূত্রধর আকিরার ভূমিকায় থাকছেন তনুশ্রী। তার সঙ্গে সঙ্গেই ছবির গল্প এগোবে বলে জানালেন অভিরূপ।
সম্ভবত নভেম্বরে মুক্তি পেতে চলেছে ‘জ়ম্বিস্তান’।