মে মাসের গরমে কোট মাফলার পরে রামদেওরার শট দিয়েছিলাম: সিদ্ধার্থ
RBN Web Desk: মাঝরাতে রামদেওরা স্টেশেন এসে দাঁড়াল জয়সলমিরগামী ট্রেন। অপেক্ষারত ফেলু, তোপসে আর লালমোহনবাবু উঠে পড়ল তাতে। আড়ালে লুকিয়ে থাকা মন্দার বোসও ফেলুকে খতম করার লক্ষ্যে লাফ দিয়ে উঠল ট্রেনের পাদানিতে। ১৯৭৪ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত সত্যজিৎ রায়ের ‘সোনার কেল্লা’ ছবির ক্লাইম্যাক্স শুরু এখানেই। কীভাবে হয়েছিল রামদেওরা স্টেশনের শুটিং?
ছবিতে নাম রামদেওরা হলেও, ‘সোনার কেল্লা’র এই অংশের শুটিং হয়েছিল লাঠি নামের এক প্রান্তিক স্টেশনে। “তবে রামদেওরার শীতের রাতের বেশিরভাগ দৃশ্য কলকাতায় তোলা হয়েছিল,” রেডিওবাংলানেট-কে জানালেন ‘সোনার কেল্লা’ ছবিতে তোপসে চরিত্রের অভিনেতা সিদ্ধার্থ চট্টোপাধ্যায়। সত্যজিৎ পরিচালিত ‘জয় বাবা ফেলুনাথ’ ছবিতেও তোপসের ভূমিকায় ছিলেন সিদ্ধার্থ।
“সেটা ছিল মে মাস। কলকাতায় তখন সাংঘাতিক গরম। অথচ আমাদের শট দিতে হবে প্রচণ্ড শীতের। অগত্যা ওই গরমে কোট মাফলার পরেই শীতকালের শট দিতে হয়েছিল,” হাসতে-হাসতে বললেন সিদ্ধার্থ। “সৌমিত্রকাকু (চট্টোপাধ্যায়) যেখানে রিভলভার বার করে দেখাচ্ছে, সেই দৃশ্যটা প্রায় পুরোটাই তোলা হয়েছিল টালিগঞ্জে। ওই গরমে কোট মাফলার পরে আমাদের তখন হাঁসফাঁস অবস্থা। ঘেমেই ঠান্ডা লেগে যাওয়ার উপক্রম। শীতের অভিনয় করব কী, ঘেমে-ঘেমেই আমরা তখন নাজেহাল। যদিও দৃশ্যটা দেখে কেউ সেটা বুঝতে পারেনি।”
আরও পড়ুন: জটায়ুর সাহস
যে দৃশ্য দর্শক পর্দায় মাত্র তিন মিনিট দেখছে সেটা তুলতে অনেক সময় লেগে যায় বলে জানালেন অভিনেতা। “’সোনার কেল্লা’য় বেশ কিছু দৃশ্য আছে যেগুলো দেখে কেউ ধরতেই পারবে না কোনটা রাজস্থানে তোলা আর কোনটা স্টুডিওতে। লাঠিতে একটা খুব লম্বা ট্রলি শট ছিল যেটা আমাদের বেঞ্চটা পার করে—যেখানে মন্দার বোস রাজস্থানী পোশাক পরে বসে আছে—সেটা দেখানো হয়। এখানে আমাদের অংশটুকু টালিগঞ্জে তোলা হয়েছিল। আমাদের ঘুমিয়ে পড়া, ট্রেন চলে যাওয়া এইসব এখানে রয়েছে। যতদূর মনে পড়ে, আগুয়ান ট্রেনের লাইটটাও স্টুডিওতেই ব্যবস্থা করে তোলা হয়েছিল। শুধু ট্রেনটা আসার পর যেটুকু আছে, সেখান থেকে মন্দারের ওই লাঠি ফেলে দিয়ে ট্রেনে ওঠা পর্যন্ত লাঠিতে শুট করা হয়েছিল। বাকি শটগুলো ওখানে নেওয়ার সময় ছিল না,” জানালেন সিদ্ধার্থ।