ফেলুদা নিয়ে আমি নিজেও খুব রক্ষণশীল: সৃজিত
RBN Web Desk: গত কয়েকমাস ধরে বাড়ছিল প্রত্যাশার পারদ। অবশেষে বড়দিনে মুক্তি পেয়েছে সৃজিত মুখোপাধ্যায়ের ‘ফেলুদা ফেরত’-এর প্রথম সিজ়ন। দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর সত্যজিৎ রায় সৃষ্ট ফেলুকে সর্বসমক্ষে হাজির করার মুহূর্তে বাংলার জনপ্রিয়তম এবং সর্বাধিক সমালোচিত পরিচালক যে চাপা উত্তেজনায় থাকবেন, সে কথা বলার অপেক্ষা রাখে না। এই প্রথম সংবাদমাধ্যমের জন্য কোনও বাংলা ওয়েব সিরিজ়ের প্রেক্ষাগৃহে প্রিমিয়র করা হলো। বড়দিনের প্রাক্কালে দক্ষিণ কলকাতার হলে উপস্থিত ছিলেন সৃজিত ও টিম ফেলুদা।
এক সাক্ষাৎকারে নতুন ফেলুদা টোটা রায়চৌধুরী জানিয়েছিলেন যে ২০০৮-এ যখন ‘টিনটোরেটোর যীশু’ মুক্তি পায়, সেই সময় সৃজিত তাঁকে বলেছিলেন তিনি কোনওদিন ফেলুদা নিয়ে ছবি করলে সেই চরিত্রে টোটাকেই নেবেন। তখনও সৃজিতের প্রথম ছবি ‘অটোগ্রাফ’ মুক্তি পায়নি। ফলে তাঁকে তখন কেউই চিনত না। কথা রেখেছেন সৃজিত। তখন থেকেই কি ভেবে রেখেছিলেন ফেলুদা করবেন? রেডিওবাংলানেট-কে সৃজিত জানালেন, “ফেলুদা করার ইচ্ছেটা বহুদিন আগে থেকে থাকলেও ২০০৮ থেকে সেটা যেন বেড়ে গিয়েছিল। আমার বরাবরই মনে হয়েছে টোটা খুব আন্ডাররেটেড অভিনেতা। সত্যজিতের ফেলুদা স্কেচের সঙ্গে ওর চেহারার খুব মিল রয়েছে। তার সঙ্গে ওর ফিটনেস তো আছেই। উচ্চতায় সামান্য কম হলেও সেটা পর্দায় দেখার সময় কোনও সমস্যা হবে না। কাজেই সব মিলিয়ে ওর চেয়ে ভালো ফেলু আর হয় না।”
আরও পড়ুন: জটায়ুর সাহস
এর আগে কাকাবাবু কাহিনীতে সন্তুর বান্ধবী যোগ করায় তুমুলভাবে সমালোচিত হয়েছিলেন সৃজিত। ফেলুদার ক্ষেত্রে তেমন কোনও বদলের সম্ভাবনা কি থাকবে? সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের কাকাবাবু সিরিজ় নিয়ে তাঁর প্রথম ছবি ‘মিশর রহস্য’কে কেরিয়ারের সবচেয়ে বড় হিট বলে উল্লেখ করে সৃজিত জানালেন, “সন্তুর ক্ষেত্রে যেটা হয়েছে সেটা এখানে হবে না। ফেলুদার ক্ষেত্রে আমি নিজেও খুব ক্লাসিকাল ও রক্ষণশীল। দর্শকের ভালো লাগলে ফেলুদা আবারও আসবে। তবে এটা কোনওভাবেই ব্যাবসায়িক সাফল্যকে মাথায় রেখে বানানো হয়নি। এটাকে আমার ছোটবেলার নস্ট্যালজিয়ার উদযাপন বলা যেতে পারে। আসলে ফেলুদা এতটাই ব্যক্তিগত যে সেখানে ব্যক্তি আগে আসে। সেই আবেগ থেকেই ফেলুদা বানানো।”
এই সিরিজের পরের সিজ়ন ‘যত কাণ্ড কাঠমাণ্ডুতে’ মুক্তি পাবে আগামী বছর। এছাড়াও ‘দার্জিলিং জমজমাট’, ‘টিনটোরেটোর যীশু’, ‘হত্যাপুরী’, ‘কৈলাসে কেলেঙ্কারি’ ও ‘এবার কাণ্ড কেদারনাথে’ তাঁর পছন্দের তালিকায় রয়েছে বলে জানালেন সৃজিত। ফেলুদা সিরিজ়ের সমস্ত গল্পের ডিজিটাল স্বত্ব তাঁর কাছে থাকলেও দর্শকের পছন্দ বুঝে তবেই তিনি আগামী পরিকল্পনা নেবেন।
‘যত কাণ্ড কাঠমাণ্ডুতে’ মগনলাল মেঘরাজের ভূমিকায় খরাজ মুখোপাধ্যায়ের উপস্থিতি নিঃসন্দেহে দর্শকের মূল আগ্রহের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ফেলুকাহিনীর ধূর্ততম চরিত্র মগনলাল মোট তিনবার ফিরে আসেন তিনটি আলাদা গল্পে। এর মধ্যে ‘জয় বাবা ফেলুনাথ’ নিয়ে সত্যজিৎ নিজেই ছবি করেছেন। এরপর সন্দীপ রায়ের পরিচালনায় ‘গোলাপি মুক্তো রহস্য’ গল্পে মগনলাল শেষবারের মতো ফিরে আসেন। সেই কাহিনী নিয়ে কাজ করার প্রসঙ্গে সৃজিত জানালেন, “আপাতত এই নিয়ে আমি কিছু ভাবছি না। ‘যত কাণ্ড কাঠমাণ্ডুতে’ আসুক আগে। দর্শকের যদি মগনলালকে ভালো লাগে তাহলে হয়তো আবারও তিনি ফিরে আসবেন।”
ছবি: গার্গী মজুমদার