ফেলুপ্রেমীদের জাতীয় পুরস্কার উৎসর্গ করলেন সাগ্নিক

কলকাতা: একটি নয়, দু’টি জাতীয় পুরস্কার তাঁর ঝুলিতে। সত্যজিৎ রায় সৃষ্ট গোয়েন্দা ফেলুদার গল্প প্রথম প্রকাশের ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে সাগ্নিক চট্টোপাধ্যায় তৈরি করেছেন পূর্ণদৈর্ঘ্যের তথ্যচিত্র ‘ফেলুদা: ফিফটি ইয়ারস অফ রে’জ় ডিটেকটিভ’। এই ছবিই এবার সাগ্নিককে এনে দিল চলচ্চিত্রে শ্রেষ্ঠ নবাগত পরিচালকের জাতীয় পুরস্কার। এছাড়াও শ্রেষ্ঠ প্রথম নন-ফিকশন ছবির পুরস্কার পেয়েছে এই তথ্যচিত্রটি। ছোটবেলা থেকে ফেলুদার গল্প পড়ে বড় হয়ে ওঠা সাগ্নিক অনেকটা গঙ্গাজলেই গঙ্গাপুজো সারলেন তথ্যচিত্রটি বানিয়ে।

“এই ছবিটি করার ইচ্ছে আমার অন্তরের। বরাবরই ফেলুদাকে নিয়ে কিছু করব ভেবেছিলাম। আজ আমার স্বপ্ন স্বার্থক,” রেডিওবাংলানেট-কে বললেন সাগ্নিক।




বাংলায় এই প্রথম কোনও কাল্পনিক চরিত্রকে কেন্দ্র করে নির্মিত হল তথ্যচিত্র। “এই পুরস্কার সম্পূর্ণভাবে আমি ফেলুপ্রেমীদের উৎসর্গ করতে চাই। এছাড়া আমার টেকনিশিয়ন বন্ধুরা এবং সন্দীপ রায় ও ললিতা রায়ের কাছে আমি কৃতজ্ঞ। এঁরা না থাকলে এই ছবি তৈরি সম্ভব হত না,” জানালেন পরিচালক।

সত্যজিৎ পরিচালিত ‘সোনার কেল্লা’ ও ‘জয় বাবা ফেলুনাথ’-এর শ্যুটিংয়ের জায়গা, ফেলুদাকে নিয়ে বিশিষ্ট ব্যক্তিত্বদের অভিজ্ঞতা, এসবই উঠে এসেছে তথ্যচিত্রটিতে। ফেলুদার বিভিন্ন ছবির অভিনেতারা রয়েছেন এই ছবিতে। এছাড়াও আছেন সাহিত্যিক স্মরণজিৎ চক্রবর্তী, অভিনেতা ঋত্বিক চক্রবর্তী, বিশিষ্ট শিল্পী দেবাশিস দেব ও আরও অনেকে।

আরও পড়ুন: ‘আমার শিক্ষাগুরু ঋত্বিক ঘটক, কর্মগুরু তপন সিংহ’

সাগ্নিকের কথায়, তাঁর এই ছবি ফেলুদার জার্নির গল্প। কাশী থেকে শুরু করে জয়সলমির হয়ে প্রায় সাতটি শহর ঘুরে শেষ হয় এই জার্নি।

“২০০৮ সাল নাগাদ এই তথ্যচিত্রটি নিয়ে চিন্তাভাবনা শুরু করি,” জানালেন সাগ্নিক। “কাজ শুরু হয় ২০১৪-তে। যখন প্রায় অর্ধেক কাজ শেষ, সেই সময় প্রযোজক হাত তুলে নিলেন ছবি থেকে। তারপর নিজের সঞ্চিত অর্থ দিয়ে, ক্রাউডফান্ডিংয়ের সাহায্য নিয়ে শেষ করি এই ছবির কাজ। আজ যখন দেখছি যে ছবিটা জাতীয় স্তরে সম্মানিত, তখন সত্যিই ভীষণ আনন্দ হচ্ছে কাজটা আমি শেষ করতে পেরেছি ভেবে।”

আরও পড়ুন: জনপ্রিয় মেগা-ধারাবাহিকে স্টেপ ইন সৌরভের

পুরস্কার পাওয়ার পর সন্দীপ, সুদেষ্ণা রায়, অভিজিৎ গুহর মত অনেকেই শুভেচ্ছা জানিয়েছেন তাঁকে। “বাবুদা (সন্দীপ) তো মুখে সেভাবে কিছু বলেন না। তবে তিনি খুবই খুশি,” বললেন সাগ্নিক। তবে সত্যজিতের ‘সোনার কেল্লা’ ও ‘জয় বাবা ফেলুনাথ’-এ ফেলুদার চরিত্রের অভিনয় করা সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে এখনও কথা হয়নি সাগ্নিকের।

ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন ইনস্টিটিউটে এডিটিং বিভাগের প্রধান যোগেশ মাথুরের ছাত্র ছিলেন সাগ্নিক। আজ তাঁর এই সাফল্য তিনি ভাগ করতে চাইলেন তাঁর শিক্ষাগুরুর সঙ্গেও। আগামী দিনে বিদেশেও প্রদর্শিত হবে ‘ফেলুদা: ফিফটি ইয়ারস অফ রে’জ় ডিটেকটিভ’, জানালেন সাগ্নিক।

Amazon Obhijaan



Like
Like Love Haha Wow Sad Angry
2

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *