আত্মহত্যার প্রবণতা কমাতে রণদীপের নতুন ছবি
RBN Web Desk: বর্তমান সমাজে আত্মহত্যার প্রবণতা খুব চিন্তার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিশেষ করে যুবসমাজের অনেকেই কোনও ছোটখাটো মনখারাপের কারণ হলে বা ভেঙে পড়লে আত্মহত্যার পথ বেছে নেন। তাঁরা সবাই ভুলে যান যে অতি বড় সমস্যা হলেও আত্মহত্যা কখনওই তার সমাধান নয়। সেই বার্তাই এবার নিয়ে আসছে রণদীপ সরকারের নতুন ছবি ‘আদেলান্তে’। এই ছবিতে অভিনয় করেছেন সুজ়ি ভৌমিক, সায়ন্তনী গুহঠাকুরতা ও অভিনন্দন সরকার।
সুজ়ি রূপান্তরকামী। ছবিতে তাঁর নিজের নামের চরিত্রেই রয়েছেন তিনি। ছবির সুজ়িকে প্রায়ই সমাজের নানা অংশ থেকে টিটকিরি শুনতে হয়। এমনকি সে মানসিক ও শারীরিকভাবে অত্যাচারিতও হয়। ক্রমাগত তা চলতে থাকায় একসময় আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত নেয় সুজ়ি। সত্যিই কি সে আত্মহত্যা করবে? নাকি জীবনের অর্থ বুঝতে পারবে? এই বিষয় নিয়েই রণদীপ তৈরি করছেন ‘আদেলান্তে’।
আরও পড়ুন: নব্বইয়ের ‘সত্যান্বেষী’, বাদ পড়লেন ব্যোমকেশ
ছবি সম্পর্ক বলতে গিয়ে রণদীপ জানালেন, “বর্তমান সমাজে আত্মহত্যা প্রবণতা কর্কট রোগের মতো ছড়িয়ে পড়েছে সকলের মননে। কীভাবে মানুষ এই রোগ থেকে মুক্তি পেতে পারে এবং সব নেগেটিভিটি সরিয়ে রেখে ইতিবাচক মানসিকতাকে পাথেয় করে এগিয়ে যেতে পারে, সেটাই বোঝাবে ‘আদেলান্তে’।”
লড়াই করে বেঁচে থাকাটাই হলো জীবনের মূল মন্ত্র এবং সেটাই এই ছবির মাধ্যমে দেখানোর চেষ্টা করেছেন রণদীপ। “অবশ্য সেটা একা করা সম্ভব নয়। এর জন্য ভালো মানুষ, ভালো বন্ধুর প্রয়োজন যাঁরা মানসিক কষ্টে থাকা মানুষদের সবকিছু ভুলিয়ে নতুন করে বাঁচার অনুপ্রেরণা দেবে,” বললেন রণদীপ।
আরও পড়ুন: কলকাতার বুকে ক্যাফে থিয়েটারের অভিনব প্রয়াস
তবে ‘আদেলান্তে’ শুধুমাত্র যুবসমাজের আত্মহত্যার প্রবণতাকেই দেখায় না, পাশাপাশি সমাজের আর এক অবহেলিত গোষ্ঠী, রূপান্তরকামীদের কথাও বলে। “মহাভারতের সময়ে শিখণ্ডীকে মানুষ মেনে নিলে, ২০২১-এ দাঁড়িয়ে রূপান্তরকামীদের মানতে বাধা কোথায়? সমাজ যদি তাঁদের না মানে, তা এক নবজাগরণ ও বিপ্লবের আকার নেবে। রূপান্তরকামীরাও যে প্রতিভাবান হতে পারেন, তা সমাজকে মানতে শিখতে হবে,” বললেন রণদীপ।
‘আদেলান্তে’ কথাটির অর্থ হলো ‘এগিয়ে চলো’। সেই এগিয়ে চলার গল্পই বলবে এই ছবি।
সুজ়ি জানালেন, “ছবির কেন্দ্রীয় চরিত্র আর আমার মধ্যে অনেকটা মিল রয়েছে। তবে গল্পের সুজ়ি আত্মহত্যাপ্রবণ, অভিমানী। তার আত্মসম্মানবোধ প্রবল। জীবনের একাকীত্ব, প্রেমহীনতার সঙ্গে সমাজ, কর্মক্ষেত্র, সব জায়গায় আপনজনদের অপমান আর অবহেলা তার জীবনে গভীর অবসাদ নিয়ে আসে। জীবনের প্রতি একরাশ ঘৃণা নিয়ে সে আত্মহত্যা করতে উদ্যত হয়। তবে শেষ মুহূর্তে কোথাও যেন তার জীবনের মোড় ঘুরে যায়। তাছাড়া বাংলায় এই প্রথম কোনও রূপান্তরকামী পরিচালকের ছবিতে অভিনয় করছেন আর এক রূপান্তরকামী।”
পরিচালনা ছাড়াও ছবির কাহিনী বিন্যাস করেছেন রণদীপ। চিত্রনাট্য ও সংলাপ লিখেছেন সম্রাটশেখর মণ্ডল। চিত্রগ্রহণের দায়িত্বে রয়েছেন তনয় রায়। ছবির আবহ প্রতীক কর্মকারের।
শীঘ্রই মুক্তি পেতে চলেছে ‘আদেলান্তে’।