রেডিওর নস্টালজিয়া মেখে শুটিং করলেন প্রিয়াঙ্কা, অনিন্দ্য, ঈশানরা
RBN Web Desk: গাড়ির সাউন্ড সিস্টেমে চলছে এফএম। ড্রাইভ করতে-করতে আরজের বলে যাওয়া কথাগুলো মন দিয়ে শুনছিল হিয়া। রেডিও থেকে ভেসে আসা প্রতিটা কথা হিয়ার মধ্যে এক অদ্ভুত ভাবান্তর তৈরি করছিল। শুটিং চলছিল রাজারহাটের রাস্তায়, পরিচালনায় শিলাদিত্য মৌলিক। হিয়ার ভূমিকায় রয়েছেন প্রিয়াঙ্কা সরকার। শিলাদিত্য তাঁকে দৃশ্যটা বুঝিয়ে দেওয়ার পর কয়েকটা টেকে শট ওকে হলো।
পরের শটের ঠিকানা হরিশ মুখার্জী রোড। জনৈক তুষারকান্তি গাঙ্গুলীর খোঁজে একটা পুরোনো বাড়ির কলিং বেল বাজায় অরিত্র। সে বাড়ির লোকেরা তাঁকে জানায় যে তুষারবাবুরা আর সেখানে থাকেন না। অরিত্র অপ্রস্তুত। বিভিন্ন অ্যাঙ্গেল থেকে দৃশ্যগ্রহণের পর ‘কাট’ বললেন পরিচালক। অরিত্রর ভূমিকায় রয়েছেন ঈশান মজুমদার।
আরও পড়ুন: সব কান্নার শব্দ হয় না, বেজে উঠল পটদীপ
ছবির নাম ‘রেডিও’। তারই শুটিং চলছিল কলকাতার বিভিন্ন লোকেশনে। সেদিন প্রিয়াঙ্কা ও ঈশানের নানা মুহূর্ত ক্যামেরাবন্দী হওয়ার সাক্ষী ছিল রেডিওবাংলানেট। প্রিয়াঙ্কা ও ঈশান ছাড়াও এই ছবির অন্যান্য চরিত্রে রয়েছেন অনিন্দ্য চট্টোপাধ্যায়, সুমনা দাস, মোমো ও মৌমিতা বসু।
ছবির গল্প হিয়া, অরিত্র, প্রিয়াংশু ও রেডিওকে নিয়ে। হিয়া এক বিজ্ঞাপনী সংস্থার কপিরাইটার। সেই সংস্থার মালিক অরিত্র। হিয়ার প্রতি তার দুর্বলতা রয়েছে। এদিকে প্রিয়াংশুর (অনিন্দ্য) সঙ্গে হিয়ার সম্পর্কে ছেদ পড়ায় সে যখন অবসাদগ্রস্ত, তখন তার জীবনে আসে একটি রেডিও। এই রেডিও কীভাবে ক্রমশ হিয়ার জীবনে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে ও এই তিনজনের গল্পকে এগিয়ে নিয়ে যায়, তাই দেখা যাবে ছবিতে।
প্লেলিস্টে গান শোনার চেয়ে রেডিও শোনা বেশি পছন্দ করে বলে জানালেন প্রিয়াঙ্কা। রেডিও শোনার পেছনে একটা আলাদা চমক থাকে বলেই মানুষ তার হাতে নিজেকে ছেড়ে দেয় বলে মনে করেন তিনি। “রেডিও প্রতি মুহূর্তে আমাদের নতুন কিছু দেয়,” বললেন প্রিয়াঙ্কা। “এই ছবিতেও সেরকমই রেডিও একটা নতুন গল্প বলবে। হিয়ার চরিত্রটা বেশ কঠিন। যে কোনও শট দেওয়ার সময় উল্টোদিকের অভিনেতার সঙ্গে একটা রসায়ন কাজ করে। এখানে একা-একা সেই শটগুলো আমাকে দিতে হয়েছে, কারণ হিয়া তখন রেডিওর সঙ্গে কথা বলছে। এই ব্যাপারটা বেশ কঠিন ছিল।”
ছবিতে রেডিওকে ঘিরে পুরোনো ও নতুন নানা সময়ের কথা উঠে আসবে, থাকবে চেনা অনুষ্ঠানের স্মৃতিও।
“একটা সময় আমিন সায়ানীর গলা শোনার জন্য শ্রোতারা অপেক্ষায় থাকতো, বিনাকা গীতমালা অনুষ্ঠানের মূল আকর্ষণই ছিলেন তিনি,” স্মৃতিতে ডুব দিয়ে বললেন ঈশান। “এই ছবিতেও রেডিও সেরকম একটা চরিত্র হয়ে উঠছে। এছাড়া হিয়া, অরিত্র ও প্রিয়াংশুর একটা ত্রিকোণ সম্পর্কের গল্পও থাকছে। একটা অন্যরকম টুইস্টও থাকছে ছবিতে। আর প্রিয়াঙ্কার সঙ্গে প্রথমবার কাজ করার অভিজ্ঞতা দারুণ। ও খুব ফ্রেন্ডলি একজন মানুষ, সহঅভিনেতাকে ভীষণভাবে জায়গা দেয় কাজ করার।”
আরও পড়ুন: নব্বইয়ের ‘সত্যান্বেষী’, বাদ পড়লেন ব্যোমকেশ
শুটিং-এর ব্যস্ততার ফাঁকে কিছুক্ষণের জন্য পাওয়া গেল শিলাদিত্যকে। “গল্পটা কয়েকমাসের সময়কালকে ঘিরে। রেডিও এখানে রূপক। সেটা দর্শককে বিশেষ-বিশেষ সময়ে নিয়ে যাবে। রেডিও মানে এখানে শুধুই গান নয়। রেডিও মানে কথাও। এক একটা কথা একটা বিশেষ সময়ে নিয়ে যাবে দর্শকদের। অনেকগুলো গান থাকবে ছবিতে। নতুন ও পুরোনো মিলিয়ে। তবে পুরোনো গানগুলোও নতুন করে গাওয়ানো হয়েছে” বললেন শিলাদিত্য।
পরিস্থিতি ঠিক থাকলে বছরের শেষে মুক্তি পেতে পারে ‘রেডিও’।