রবীন্দ্রনাথের কবিতাকে ব্যঙ্গ, প্রতিবাদে বিজ্ঞাপন সরাতে বাধ্য হল সংস্থা
RBN Web Desk: নানান স্বাদের টেলিভিশন বিজ্ঞাপন সেই সত্তরের দশক থেকেই দর্শকদের মনোরঞ্জন করে চলেছে। বহু ক্ষেত্রে জাতীয় আবেগকে আশ্রয় করে যেসব বিজ্ঞাপন তৈরি হয় তা দেশবাসীর মন ছুঁয়ে যায়। কিন্তু কখনও কখনও উল্টো ফলও হয়। যেমন সম্প্রতি হয়েছে একটি ভারতীয় বহুজাতিক সংস্থার টুথপেস্টের বিজ্ঞাপনে।
ক্রিকেট বিশ্বকাপ চলাকালীন অন্য দেশকে নিয়ে মজা করে অনেক সংস্থাই বিজ্ঞাপন তৈরি করে থাকে। ভারতের মত প্রতিবেশী দেশগুলিও এই ধরণের বিজ্ঞাপন তৈরি করে। সেভাবেই আজ ভারত-বাংলাদেশ ম্যাচের আগে ৩০ জুন এই টুথপেস্ট প্রস্তুতকারক সংস্থাটি তাদের বাংলাদেশ বিষয়ক বিজ্ঞাপনটি প্রকাশ করে। প্রকাশের সঙ্গে সঙ্গে ভারতের বাঙালিদের মধ্যে সমালোচনার ঝড় বয়ে যায়। বিজ্ঞাপনে বাংলাদেশকে নিয়ে মজা করতে গিয়ে বাংলা সংস্কৃতি ও রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কবিতাকে ঠেস দেওয়া হয়েছে বলে ক্ষোভ জমা হতে থাকে সোশ্যাল মিডিয়ায়। শেষ পর্যন্ত আজ কয়েক ঘন্টা আগে ফেসবুক কর্তৃপক্ষ ওই বিতর্কিত বিজ্ঞাপনটি সরিয়ে দিতে বাধ্য হয়। ইউটিউব থেকেও ওই বিজ্ঞাপনের ভিডিওটি সরিয়ে নেওয়া হয়।
বাবার ‘লক্ষ্মী ছেলে’ উজান
বিজ্ঞাপনটিতে দেখা যাচ্ছে অভিনেতা মনোজ পাহওয়া সোফায় বসে এক বাটি তিলের নাড়ু খেতে ব্যস্ত। এই সিরিজ়ের সবকটি বিজ্ঞাপনেই নির্দিষ্ট বিপক্ষ দেশের কোনও একটি মুখরোচক খাবার খেতে দেখা যায় এই অভিনেতাকে। এখানেও তিনি তিলের নাড়ুর সঙ্গে বিপক্ষ দেশকে চিবিয়ে খাবার ইঙ্গিত দেন। এরই সঙ্গে রবীন্দ্রনাথের লেখা পংক্তি ‘বৃষ্টি পড়ে টাপুর টুপুর’-এর উল্লেখ করে বক্রোক্তি করেন।
এখানেই ক্ষোভ ফেটে পড়েন ভারতের বাঙালিরা। রবীন্দ্রনাথের কবিতাকে এভাবে ছোট করার কোনও অধিকার ওই সংস্থার নেই বলে অভিযোগ করেছেন তারা। এছাড়াও তিলের নাড়ু বাঙালিদের অতি প্রিয় একটি খাদ্য। এই দুই উপমাকে ব্যবহার করে বাঙালিদের অপমান করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন অনেকেই। সব থেকে বড় কথা, রবীন্দ্রনাথ ভারত ও বাংলাদেশ দুই দেশেরই জাতীয় সঙ্গীতের রচয়িতা। তাঁর রচনা নিয়ে ঠাট্টা-তামাশা করার সাহস কোনও সংস্থা পায় কি করে, প্রশ্ন করেছেন অনেকেই।
নতুন গোয়েন্দা ছবিতে খলনায়ক সৌমিত্র
পরিচালক সৃজিত মুখোপাধ্যায় বিজ্ঞাপনটির প্রতিবাদ করে ফেসবুকে স্বাধীনতা সংগ্রামে বাঙালিদের অবদানের কথা তুলে ধরে ক্ষোভ উগরে দেন। টুথপেস্ট প্রস্তুতকারী ও বিজ্ঞাপনটির নির্মাণকারী সংস্থার আন্দামানে সেলুলার জেলে গিয়ে দেখা উচিত যে কত শত বাঙালি স্বাধীনতা সংগ্রামীর শেষ ইচ্ছা ছিল তাঁদের মায়ের হাতের তৈরি তিলের নাড়ু খাওয়ার, যাঁদের অবদানে আজ ভারত স্বাধীন হয়েছে এবং ভারতবাসী এই ধরণের নিম্নরুচির বিজ্ঞাপন তৈরি করার সাহস দেখাতে পারছে, বলেন সৃজিত।
Good news .