সাহিত্য কখনওই অশ্লীল হতে পারে না: সুব্রত সেন
RBN Web Desk: দিনটা ছিল ১৯৮৫ সালের ২৪ ডিসেম্বর। সে দিন দীর্ঘ ১৮ বছর ধরে অশ্লীলতার দায়ে নিষিদ্ধ থাকা সমরেশ বসুর উপন্যাস ‘প্রজাপতি’র পুনর্বাসন ঘটেছিল। আদালত তার রায়ে জানিয়েছিল, অমার্জিত লেখা মাত্রই অশ্লীল নয়। সেই উপন্যাসকে নতুন করে বড়পর্দায় নিয়ে আসছেন পরিচালক সুব্রত সেন। সম্প্রতি ২৮তম কলকাতা আন্তজার্তিক চলচ্চিত্র উৎসবে দেখানো হল তার নতুন ছবি ‘সমরেশ বসুর প্রজাপতি’। এই উৎসবে দু’দিন দেখানো হয় ছবিটি। দু’দিনই দর্শকের ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। ছবির মুখ্য চরিত্রে অভিনয় করেছেন সুব্রত দত্ত, মুমতাজ সরকার, ঋতব্রত মুখোপাধ্যায় ও শ্রীতমা দে।
বর্তমানে রহস্য বা গোয়েন্দাভিত্তিক গল্প ছাড়া সেভাবে সাহিত্যকেন্দ্রিক ছবি দেখা যায় না। সকলেই চায় মৌলিক গল্প। সেখানে দাঁড়িয়ে এতবছর ধরে নিষিদ্ধ থাকা গল্পকে কেন ফিরিয়ে আনলেন সুব্রত?
“আমি মনে করি সাহিত্য কখনওই অশ্লীল হতে পারে না। আর অশ্লীলতার দায়ে কোনও সাহিত্যকেই কখনও নিষিদ্ধ করা যায় না। অঞ্চল বিশেষে সাহিত্যের প্রয়োজনে সাহিত্যের ভাষার বদল ঘটবেই। বৈষ্ণব পদাবলীতে থাকা নারী শরীরের পুঙ্খানপুঙ্খ বর্ণনার সঙ্গে একজন কারখানার কর্মীর বর্ণনা কখনওই মিলবে না। সেটা সাহিত্যের স্বার্থেই। এছাড়া বাংলা সাহিত্যে এমনিতেই অনেক গল্প রয়েছে। তাই আমার নতুন কোনও গল্প লেখার কথা মনে হয়নি,” জানালেন পরিচালক।
আরও পড়ুন: লাল স্যুটকেস নিয়ে বিপাকে সোহম, সায়নী
এমনিতে খুব বেশি ছবি করেন না সুব্রত। তাঁর পরিচালিত প্রথম ছবি ‘এক যে আছে কন্যা’ বিপুল প্রশংসিত হয়। সুব্রতর কথায়, ‘সমরেশ বসুর প্রজাপতি’ তাঁর পরিচালিত ১১ তম পূর্ণদৈর্ঘ্যের ছবি। তাঁর অন্যান্য ছবির তুলনায় এই ছবি একেবারেই আলাদা বলে দাবি করলেন তিনি।
উপন্যাসটি যে কারণে নিষিদ্ধ ঘোষিত হয়েছিল, তার প্রায় অনেককিছুই সুব্রত তাঁর ছবিতে রাখেননি। এর কারণ জিজ্ঞাসা করাতে সুব্রত জানালেন, “আমি উপন্যাসটির ন্যারেটিভ নিয়ে অন্যভাবে কাজ করার চেষ্টা করেছি। উপন্যাসটি পড়ার পরই আমার মনে প্রশ্ন জেগেছিল, আমাদের জন্ম যখন আমাদের ইচ্ছায় হয় না, তখন সে জন্মের দায় আমাদের কেন নিতে হবে? লেখক নিজেও এই প্রশ্নই করেছেন তাঁর উপন্যাসে।”
আগামী বছর প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পেতে চলেছে ‘সমরেশ বসুর প্রজাপতি’।
ছবি: গার্গী মজুমদার