“আমি চাই ব্যর্থতা আসুক, সাফল্য থেকে কিছু শেখা যায় না”
একই প্রযোজনা সংস্থার আগামী দুটো ছবির নায়ক তিনি। গতবছর অপরাজিত রায় চরিত্রে প্রভূত প্রশংসা পাবার পর পরিচালক অংশুমান প্রত্যুষের দুটো ছবি, ‘আপনজন’ ও ‘বাবুসোনা’র মূল চরিত্রে রয়েছেন অভিনেতা জিতু কমল। আজ দুটো ছবির মহরতে উপস্থিত ছিলেন তিনি। কথা বললেন রেডিওবাংলানেট-এর সঙ্গে
‘অপরাজিত’ ছবিতে ওরকম আইকনিক চরিত্রে অভিনয়ের পর এখানে একটা ছবিতে তোমার চরিত্র কিডন্যাপারের। এরকম দুই মেরুর দুটো চরিত্র করতে নিজেকে কতটা পাল্টে ফেলতে হলো?
জিতু: ‘অপরাজিত’র পরেই যে এটা করছি তা কিন্তু নয়। সত্যজিৎ রায়ের ওপর ভিত্তি করে যে চরিত্রটা আমি করেছিলাম সেটার পরে আরও তিন-চারটে ছবির কাজ করেছি। ছবিগুলো এখনও মুক্তি পায়নি। আর যখন অপরাজিত রায়ের চরিত্র করতে এলাম, তখনও তো অন্য একটা চরিত্র করছিলাম। কাজেই সেটার থেকে নিজেকে যেভাবে অপরাজিততে ধীরে-ধীরে পাল্টে ফেললাম এই প্রক্রিয়াটাও সেই একইভাবে হয়েছে।
এই দুই ছবিতে তোমার চরিত্রদুটো একেবারেই আলাদা। দুটো চরিত্র সম্পর্কে তোমার নিজের কী মনে হয়েছে?
জিতু: হ্যাঁ, দুটো দু’রকম চরিত্র এবং একেবারেই কোনও মিল নেই। ‘বাবুসোনা’তে আমার চরিত্রটা একজন কিডন্যাপারের। একটা ছেলে যে প্রেম করতে ভালোবাসে, মজাদার কথাবার্তা বলে। আর ‘আপনজন’র ছবির প্রেক্ষাপট খুব সিরিয়াস। সেখানে আমি একজন সিঙ্গল পেরেন্ট। আমার বাচ্চার জন্য আমি তার মায়ের অভাব পূরণ করছি, একটা শিশুর আশ্রয় হয়ে উঠছি, এটা খুব গভীর একটা চরিত্র।
আরও পড়ুন: জয়সলমেরে সত্যজিৎ রায়ের মূর্তি, উদ্যোগী রাজস্থান সরকার
‘বাবুসোনা’ কি সেদিক থেকে দেখলে তোমার প্রথম অ্যাকশন ছবি হতে চলেছে?
জিতু: না এটা প্রথম অ্যাকশন ছবি নয়। ‘অরণ্যের দিনরাত্রি’ করার সময় বেশ কিছু অ্যাকশন করেছি। আর ‘তিতুমীর’-এর জন্য তো ঘোড়া চালানো, অ্যাকশন, লাঠি চালানো সবই শিখতে হয়েছে। এই যে তোমাকে সাক্ষাৎকার দিচ্ছি, এটাও শিখতে হয়েছে। তবে যে কোনও ক্ষেত্রেই অনুশীলনই আসল বলে আমি মনে করি।
আরও পড়ুন: টেলিভিশনে ফিরল তাপসী-কিরীটির কাহিনী
‘আপনজন’ ছবির বিষয়টা খুব পরিণত একটা সামাজিক অবস্থার কথা বলে। দর্শক কি এই ছবি থেকে কোনও বিশেষ বার্তা পাবেন?
জিতু: ‘আপনজন’ অবশ্যই সমাজে একটা নতুন বার্তা দেবে। সেই জন্যেই এই ছবিটা করা। একটা ছবিতে অভিনয় করা বা ছবি বানানোর মানে তো শুধুমাত্র দর্শককে আনন্দ দেওয়া নয়। যদিও অন্যতম প্রধান উদ্দেশ্য, তবু কিন্তু তার পাশাপাশি সমাজের প্রতি একটা দায়িত্বও থেকেই যায়। সেই ধরণের ছবি যেখানে সামাজিক কিছু বক্তব্য থাকে, সেই ছবির প্রতি আমার আগ্রহ একটু বেশিই থাকবে।
তোমার প্রথম ছবি ‘অপরাজিত’ একজন অভিনেতা হিসেবে তোমাকে বিশাল সাফল্য এনে দিয়েছে। সেই সাফল্য তোমার জীবনে কতটা প্রভাব ফেলেছে?
জিতু: দেখো, সাফল্য ব্যাপারটা খুব আপেক্ষিক। বরং ব্যর্থতা আমাকে অনেক ভাবিয়েছে, পড়াশোনা করিয়েছে এবং শিখিয়েছে। আমি চাই ব্যর্থতা আসুক। ব্যর্থতা মানুষকে তৈরি করে। সাফল্য থেকে কিছু শেখা যায় না।
ছবি: প্রতিবেদক