আলগা করে রাখা হয়েছিল নাক: সন্দীপ রায়
‘বার্তামন্ত্রী?’
‘মহারাজ…’
‘এইবার তোমারে শুধাই।’
‘মহারাজ কোনও চিন্তা নাই। রাজ্যে রাজ্যে চলে গেছে দূত, আর অন্য সব প্রায় প্রস্তুত। তোরণ, আতসবাজি, রঙিন ফানুস, পাঁচশত নতুন নিশান, অতিকায় মূর্তি নির্মাণ… ‘
উৎফুল্ল রাজা খুশিতে দুলে ওঠেন।
‘মূর্তি হবে জবরদস্ত, মহারাজ মস্ত, প্রায় বিশ হস্ত!’
‘এই মূর্তি দেখে লোকে পায় যেন টের, কত শক্তি ধরে রাজা হীরকের।’
সত্যজিৎ রায় পরিচালিত ‘হীরক রাজার দেশে’ ছবিতে রাজার দাপটের সব থেকে বড় নিদর্শন ছিল এই মূর্তি। ছবির শেষে উদয়ন পণ্ডিত ও তার ছাত্ররা, গুপী গাইন ও বাঘা বাইনের সাহায্যে সেই মূর্তি ভেঙে রাজার দাপট মিশিয়ে দিচ্ছে ধুলোয়। মুক্তির ৪০ বছর পরেও, মূর্তি ভেঙে পড়ার দৃশ্যে ‘দড়ি ধরে মারো টান, রাজা হবে খান খান’ সংলাপ আজও মানুষের মুখে মুখে ঘোরে।
কি ভাবে তৈরি হয়েছিল এই অতিকায় মূর্তি?
পরিচালক সন্দীপ রায় রেডিওবাংলানেট-কে জানালেন, “মূর্তিটি তৈরি করেছিলেন জিতেন পাল। সেই মূর্তির নাক এমনভাবে আলগা করে রাখা হয়েছিল যাতে সামান্য আঘাতেই তা খুলে পড়ে যায়। ফলে উদয়নের এক ছাত্র গুলতি দিয়ে তাক করতেই নাক খুলে পড়ে গেল।”
১০০ দিন অতিক্রম করল ‘তৃতীয় অধ্যায়’
কিন্তু শেষ দৃশ্যে তো মূর্তি ভেঙে ফেলতে হবে। অত বড় মূর্তি এক কথায় ভেঙে ফেলা কি করে সম্ভব?
এ প্রসঙ্গে এক চমকপ্রদ তথ্য পাওয়া গেল। “একটা নয়, হীরক রাজার দুটি মূর্তি তৈরি করা হয়েছিল। দ্বিতীয়টি আকারে অনেকটাই ছোট। বড় মূর্তির কোমরে দড়ি পরিয়ে টানাটানি করলেও, পা থেকে ভেঙে পড়ার দৃশ্যে ক্লোজ় শটে দেখানো হয়েছিল ছোট মূর্তিটাই। ছবিতে অবশ্য সেটা বোঝা যায়নি,” জানালেন সন্দীপ।
তবে পরে ওই অতিকায় মূর্তিটির কি হয়েছিল তা এতদিন পরে আর মনে করতে পারলেন না তিনি।