ফেডারেশনের তোপের মুখে ‘মিঠাই’ সহ একাধিক ধারাবাহিক
RBN Web Desk: করোনার দ্বিতীয় ঢেউ সামলাতে হিমশিম খাচ্ছে গোটা দেশ। এরইমধ্যে আবার পশ্চিমবঙ্গে নতুন করে ১ জুলাই পর্যন্ত লকডাউনের মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে। অবশ্য জরুরী পরিষেবা ছাড়াও অনেক কিছুতেই ছাড় মিলেছে। ব্যবসা-বাণিজ্যের দিকে তাকিয়ে শর্তসাপেক্ষে শপিং মল, রেস্তোরাঁ খোলারও অনুমতি দেওয়া হয়েছে।
এদিকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে শুটিং শুরু করার আবেদন জানিয়েছিলেন সিনেমা ও টেলিভিশন সিরিয়ালের প্রযোজক এবং পরিচালকরা। সেই আবেদনে সাড়া দিয়ে শর্তসাপেক্ষে শুটিং চালু করার অনুমতি দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। গতকাল নবান্নের বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে যে সর্বাধিক ৫০জন সদস্য নিয়ে শুটিং করা যাবে। তবে এর মধ্যে শিল্পী ও টেকনিশিয়নের সংখ্যা কত হবে সে বিষয়ে স্পষ্ট করে কিছু জানানো হয়নি। টিকা নিয়ে তবেই শুটিং ফ্লোরে আসা যাবে এবং কোভিড সংক্রান্ত যাবতীয় বিধিনিষেধ মেনে তবেই শুটিং এর কাজ করা যাবে সে ব্যাপারে রাজ্য সরকারের তরফ থেকে স্পষ্ট নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: শেষের সেদিন, উপস্থিত ছিলেন শুধু মহেশ ও ড্যানি
চলতি মাসেই পরমব্রত চট্টোপাধ্যায় এবং বনি সেনগুপ্ত অভিনীত ‘জতুগৃহ’ ছবির শুটিং শুরু হওয়ার কথা। এই বিষয়ে ইস্টার্ন ইন্ডিয়া মোশন পিকচারর্স অ্যাসোসিয়েশনের (ইম্পা)সভাপতি পিয়া সেনগুপ্ত জানিয়েছেন যে শিল্পী ও টেকনিশিয়নদের স্বাস্থ্যবীমা সংক্রান্ত যাবতীয় কাজ শেষ করে তবেই শুটিং শুরু করা যাবে।
তবে টেকনিশিয়ন ফেডারেশনের তোপের মুখে পড়েছে মিঠাই সহ একাধিক ধারাবাহিক। তাঁদের দাবি, গত বছরের মতো মেগাধারাবাহিকের পুরনো পর্বের পুনরাবৃত্তি না দেখিয়ে দর্শককে নতুন এপিসোড উপহার দেওয়ার জন্য ‘মিঠাই’, ‘কৃষ্ণকলি’, ‘তিতলি’, ‘অপরাজিতা অপু’, ‘গ্রামের রানী বীণাপাণি’, ‘বরণ’, ‘খেলাঘর’, ‘যমুনা ঢাকি’, ‘গঙ্গারাম’, ‘জীবনসাথী’, ‘সাঁঝের বাতি’, ‘খড়কুটো’, ‘শ্রীময়ী’, ‘দেশের মাটি’ ‘ওগো নিরুপমা’ ও ‘কি করে বলবো তোমায়’ ধারাবাহিকের শিল্পীরা প্রত্যেকে বাড়িতে থেকে দূরত্ব বিধি মেনে শুটিং করেছেন বলে জানানো হলেও, ফেডারেশন মনে করে অনেক ধারাবাহিকেই বাড়ি থেকে কাজ করার জন্য ক্যামেরা, লাইট, সাউন্ডের কাজে যথেষ্ট দক্ষ এবং পেশাদার টেকনিশিয়নদের নিযুক্ত করা হয়েছে। তার যথেষ্ট প্রমাণ তাঁদের কাছে রয়েছে বলে দাবি করেছে ফেডারেশন। আজকের মধ্যে এই অভিযোগের উত্তরে যথাযথ প্রমাণ দিয়ে প্রযোজক, নির্মাতাদের ফেডারেশনকে জানানোর কথা ছিল। “সন্তোষজনক উত্তর না পাওয়া গেলে করোনা বিধিভঙ্গের অভিযোগে নির্মাতাদের বিরুদ্ধে ফেডারেশন উপযুক্ত ব্যবস্থা নেবে বলে জানিয়েছেন ফেডারেশনের যুগ্মসচিব সুজিত কুমার হাজরা।
আরও পড়ুন: বেহিসেবী জীবনযাপন, আজ স্মৃতির অতলে সৌমিত্র
এছাড়া করোনা আবহে শিশুশিল্পী নিয়ে ধারাবাহিকে কাজ করানোর মতো গুরুতর অভিযোগও রয়েছে। সরকারের কাছে এ বিষয়ে পূর্ণাঙ্গ তদন্ত করার ও আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার আবেদন করেছে ফেডারেশন।
গত বছর থেকে পর্যায়ক্রমে করোনা আছড়ে পড়ার প্রভাব পড়েছে টালিগঞ্জে। আক্রান্ত হয়েছেন বহু মানুষ। বাংলা চলচ্চিত্র জগৎ হারিয়েছে কিংবদন্তি অভিনেতা সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়কে। এই পরিস্থিতিতে সবদিক বিচার করে, সকলের সুরক্ষার কথা মাথায় রেখে কোভিড বিধি মেনে কাজ চালিয়ে যাওয়াটাই এখন বিশাল বড় চ্যালেঞ্জ।