সংকটে ভূমিকন্যা
কলকাতা: ৩০ জুলাই থেকে শুরু হয়েছে সম্প্রচার। বড় পর্দার এক ঝাঁক তারকার উপস্থিতি। নামভূমিকায় সোহিনী সরকার, সঙ্গে অনির্বাণ ভট্টাচার্য, কৌশিক সেন ও সুদীপ্তা চক্রবর্তী। জনপ্রিয় টেলিতারকা রূপাঞ্জনা মিত্র ও অঙ্কিতা চক্রবর্তীও আছেন দুটি গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে। এছাড়াও আছেন চিরঞ্জিৎ চক্রবর্তী, যিনি বহু বছর পর টেলিভশনে ফিরলেন। কিন্ত শুরু হওয়ার এক মাসের মধ্যেই বেশ কিছু কারনে সংকটে ভূমিকন্যা ।
টেলিভিশন ধারাবাহিকের চেনা ছকের বাইরে গিয়ে, যথেষ্ট ঢাকঢোল পিটিয়ে শুরু হয়েছিল রূপক সাহার তরিতা পূরাণ উপন্যাস অবলম্বনে এই ধারাবাহিক। কম্বোডিয়ার আঙ্কোর ভাট-এ আউটডোর শ্যুটিং, উন্নতমানের প্রোডাকশন ডিজ়াইন, সিনেমা দেখার মত অভিজ্ঞতা, সব মিলিয়ে এক ভিন্ন স্বাদের ধারাবাহিক তৈরি করতে চেয়েছিলেন পরিচালক অরিন্দম শীল। ভূমিকন্যার প্রযোজকও তিনিই।
কিন্তু এত করেও কেন সমস্যায় এই ধারাবাহিক?
তৈরি হল না যে ঘরে বাইরে
প্রধান সমস্যা টিআরপি। প্রায় এক মাসের কাছাকাছি সম্প্রচার হওয়ার পরও এখনও অবধি ব্রডকাস্ট অডিয়েন্স রিসার্চ কাউন্সিলের প্রথম দশের টিআরপি তালিকায় নাম তুলতে পারেনি ভূমিকন্যা। যদিও এটি সীমিত পর্বের ধারাবাহিক এবং টিআরপি নির্ভর নয়, তা সত্ত্বেও যে কোনও ধারাবাহিকেরই এই তালিকার ওপরের দিকে থাকা অত্যন্ত জরুরি। অরিন্দম এবং সোহিনী যতই জোর গলায় দাবী করুন না কেন যে অনেকেই ভীষণ প্রশংসা করছেন তাদের কাজের, বাস্তব চিত্রটা কিন্তু অন্য। বিশেষজ্ঞদের মতে, কোন ধারাবাহিকে প্রচার করলে বিজ্ঞাপনদাতা সংস্থা সবথেকে বেশি লাভবান হবেন, সেটা তারা ঠিক করেন টিআরপি দেখে। সোজা কথায়, যত ভালো টিআরপি, সেই ধারাবাহিকের তত ভালো আয়। এটা ভূমিকন্যার জন্য বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ কারন এই ধারাবাহিকের প্রোডাকশন খরচ অন্য যে কোনও ধারাবাহিকের থেকে অনেকটাই বেশি। তাই ভালো টিআরপি না পেলে, ভূমিকন্যাকে অপেক্ষাকৃত কম গুরুত্বপূর্ণ স্লটে সরিয়ে দেওয়া হতে পারে, এমন সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।
Advertisement
এছাড়াও ইতিমধ্যেই তিনবার পরিচালক বদল হয়েছে ভূমিকন্যার। শুরুতে অরিন্দম শীল এই ধারাবাহিকটির পরিচালনার দায়িত্বে থাকলেও, পরের দিকে পরিচালক হন অরিন্দম দে। সূত্রের খবর, তিনিও কিছুদিনের মধ্যেই ছেড়ে দেন। নতুন পরিচালক হিসেবে যোগ দেন অভিনন্দন সেন, এবং তিনিও ব্যক্তিগত কারন দেখিয়ে ছেড়ে দেন এই ধারাবাহিক।
অন্য সমস্যাও আছে। সূত্রের দাবী, সম্প্রতি একটি পর্বের শ্যুটিংয়ে মেকআপ নিয়ে অঙ্কিতা তার সংলাপ নিতে যান এক সহকারী পরিচালকের কাছে। সেই সহকারী পরিচালক তাকে নাকি অনেকক্ষণ অপেক্ষা করিয়ে রাখেন। অভিযোগ, এরকম ঘটনা না কি আগেও ঘটেছে তার সাথে। বিরক্ত অঙ্কিতা তারপরেই সেট ছেড়ে বেরিয়ে যান।
গান শেষ আর জান শেষ তো একই কথা রাজামশাই
প্রশ্ন উঠছে দর্শকদের পছন্দ-অপছন্দ নিয়েও। সীমিত পর্বের ধারাবাহিক দেখতে কতটা আগ্রহী বাংলার দর্শক? না কি মেগাসিরিয়াল দেখতেই তারা বেশি পছন্দ করেন? অতীতে প্রসেনজিৎ, পাওলি দাম, তনুশ্রী চক্রবর্তী অভিনীত মহানায়ক ধারাবাহিকটিও বেশিদিন চলেনি। জনপ্রিয়তা নিম্নমুখী হওয়ায় বেশি রাতের স্লটে সরিয়ে দেওয়া হয় ধারাবাহিকটি এবং কিছুদিনের মধ্যে তড়িঘড়ি শেষও করে দেওয়া হয়।
সেরকমই কিছু হবে না তো ভূমিকন্যার?