₹২ কোটির ওপর বকেয়া, কাজ বন্ধের হুঁশিয়ারি টেলিপাড়ায় সরঞ্জাম সরবরাহকারী সংগঠনের

কলকাতা: বকেয়া পেরিয়েছে ₹২ কোটি, আর তারই জেরে ফের সংকটের মুখে বাংলা টেলিভিশন ইন্ডাস্ট্রি। সংকট এতটাই তীব্র যে এই টাকা এখনই না মেটালে ৪ জুলাই থেকে কাজ বন্ধ করে দেওয়া ছাড়া তাঁদের আর কোনও উপায় থাকবে না বলে জানিয়েছে টালিগঞ্জ স্টুডিওপাড়ায় সরঞ্জাম সরবরাহকারী সংগঠন সিনে ভিডিও অ্যান্ড স্টেজ সাপ্লায়ার ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন।

সংগঠনের তরফে আজ শহরে এক সাংবাদিক সম্মেলনে জানানো হয় যে দীর্ঘদিন ধরে বকেয়া মেটানোর জন্য বিভিন্ন বেসরকারী বিনোদনমূলক চ্যানেলকে বহুবার অনুরোধ করা সত্বেও এর কোনও সুরাহা হয়নি।

বিভিন্ন ছবি ও টেলিভিশন ধারাবাহিকে ক্যামেরা, আলো, পোশাক, আসবাব, যানবাহন ও অন্যান্য সরঞ্জাম সরবরাহ করে থাকে সাপ্লায়ার ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন। বর্তমানে এই সংগঠনের সদস্য সংখ্যা প্রায় ৭০।

দুটো নয়, এবার পুজোয় সম্ভবত একটাই ব্যোমকেশ

অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক নীত পাল জানান, “আমাদের মোট বকেয়া ₹২,১১,৯৫,৬৬৭। এর মধ্যে ₹১,৩৫,৩০,৭৮২ বকেয়া সংক্রান্ত সমস্ত ভাউচার, রশিদ, ইমেল ও অন্যান্য কাগজ আমাদের কাছে আছে। এই ₹১.৩৫ কোটি টাকা তিনদিনের মধ্যে মিটিয়ে দেওয়ার দাবী জানাচ্ছি আমরা। অনাদায়ে সরঞ্জাম সরবরাহের কাজ বন্ধ করে দেওয়া হবে। এই কারণে বাংলা টেলিভিশন ইন্ডাস্ট্রি ক্ষতিগ্রস্ত হলে তার সম্পূর্ণ দায় চ্যানেল কর্তপক্ষের।”

অ্যাসোসিয়েশনের অভিযোগের তীর মূলত প্রযোজক রানা সরকারের দিকে। রানার সংস্থা দাগ মিডিয়া দ্বারা প্রযোজিত ‘জয় বাবা লোকনাথ’, ‘আমি সিরাজের বেগম’, ‘খনার বচন’, ‘মহাপ্রভু শ্রীচৈতন্য’ ও ‘প্রথম প্রতিশ্রুতি’ ধারাবাহিকগুলিতে কর্মরত শিল্পী, কলাকুশলী, টেকনিশিয়ন ও সরঞ্জাম সরবরাহকারীদের টাকা বকেয়া রাখার অভিযোগ বহুদিনের। এর মধ্যে ‘প্রথম প্রতিশ্রুতি’ ও ‘আমি সিরাজের বেগম’-এর সম্প্রচার বন্ধ হয়ে গেছে বেশ কিছুদিন আগে। বাকি ধারাবাহিকগুলি ১৬ মার্চ থেকে দায়িত্ব নিয়েছে অন্য প্রযোজনা সংস্থা। সরঞ্জাম সরবরাহকারীরা ছাড়া বাকি সব পক্ষই তাঁদের বকেয়া অর্থের কিছুটা পেয়েছেন বলে খবরে প্রকাশ।

সাইকো থ্রিলারের মোড়কে সুদেষ্ণা-অভিজিতের নতুন ছবি, মুক্তি পেল ট্রেলার

তবে রানা সরকার ছাড়া প্রযোজক সুব্রত রায়ের বিরুদ্ধেও একই অভিযোগ উঠছে টেলিপাড়ায়। বকেয়া পারিশ্রমিকের জেরে মাঝেমধ্যেই বন্ধ থেকেছে তাঁর প্রযোজিত ‘দেবী চোধুরানী’, ‘করুণাময়ী রাণী রাসমণি’ ও ‘ভানুমতীর খেল’-এর মত ধারাবাহিকগুলি।

অ্যাসোসিয়েশনের সহ-সম্পাদক অর্ঘ্য মিত্র জানান, “ধারাবাহিকের সব স্বত্ব চ্যানেলের হলেও, সরঞ্জাম সরবরাহের জন্য আমাদের চুক্তি করতে হয় প্রযোজনা সংস্থার সঙ্গে। ১২ মার্চ ও ১৫ এপ্রিল আমরা বকেয়া অর্থের দাবীতে কাজ বন্ধ রাখতে বাধ্য হই। চ্যানেলগুলির তরফ থেকে তখন আমাদের বারবার আশ্বাস দেওয়া হয় যে শীঘ্রই বকেয়া মেটানোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কিন্তু আমাদের সম্পূর্ণ অন্ধকারে রেখে রানার প্রযোজিত ধারাবাহিকগুলি বিভিন্ন অন্য প্রযোজনা সংস্থার হাতে তুলে দেওয়া হয়। এখন চ্যানেলগুলি বলছে, রানার কাছ থেকে বকেয়া সংক্রান্ত নো অবজেকশন সার্টিফিকেট না আনলে কোনও টাকাই মেটানো সম্ভব নয়। এদিকে রানা দীর্ঘদিন বেপাত্তা। তাঁর অফিস, মোবাইল ফোন দুই বন্ধ।”

সব থেকে অপছন্দের বিষয়ে ফার্স্টক্লাস ফার্স্ট হয়েছিল গিরিশ: অপর্ণা

টাকা বকেয়া রাখা ছাড়া রানার বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগও উঠেছে। অর্ঘ্যর দাবী, “দাগ মিডিয়ার একাধিক চেক নির্ধারিত তারিখে বাউন্স করেছে।”

এমতাবস্থায় চ্যানেলগুলিকে এক সপ্তাহের মধ্যে রানার সঙ্গে ১৪ জন মূল ক্ষতিগ্রস্ত সরঞ্জাম সরবরাহকারীদের বৈঠক আয়োজনের দাবী জানিয়েছে অ্যাসোসিয়েশন। তাঁদের অবস্থানে সমর্থন জানিয়েছে আর্টিস্টস ফোরাম। নীত পাল জানালেন, “আজ সকালেই এই ব্যাপারে ফোরামের সাধারণ সম্পাদক অরিন্দম গঙ্গোপাধ্যায়ের সঙ্গে কথা বলেছি আমরা। বকেয়া টাকা উদ্ধার সংক্রান্ত সমস্ত কর্মসূচীতে ফোরাম আমাদের পাশে থাকবে বলে তিনি জানিয়েছেন।”     

Amazon Obhijaan



Like
Like Love Haha Wow Sad Angry

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *