বাংলা টেলিভিশন ইন্ডাস্ট্রির ছয়টি জ্বলন্ত সমস্যা
কয়েকশো কোটি টাকার বিনিয়োগ। বিপুল কর্মসংস্থান। বিনোদন ছাড়াও একটা বিরাট অর্থনৈতিক অবদান আছে বাংলা টেলিভিশন ইন্ডাস্ট্রির। অভিনেতা, অভিনেত্রী, কলাকুশলীর উপার্জন তো বটেই, বিভিন্ন বহুজাতিক সংস্থার পণ্য প্রচারের প্রধান মাধ্যম জনপ্রিয় ধারাবাহিকগুলি। সন্ধ্যাবেলা টিভির পর্দার সামনে বসলে ধারাবাহিকগুলি দেখতে যতই ঝকঝকে লাগুন না কেন, পর্দার আড়ালে কিন্তু রয়ে যায় কিছু জ্বলন্ত সমস্যা।
১. পারিশ্রমিক
বর্তমানে প্রযোজক-অভিনেতার মূল দ্বন্দ্বের জায়গা এটিই। নিয়ম অনুযায়ী প্রতি মাসের ১৫ তারিখের মধ্যে পারিশ্রমিক দেওয়ার কথা প্রযোজক সংস্থার। শিল্পীদের অভিযোগ, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই পারিশ্রমিক পেতে দেরি হয়। এমনকি মাসের পর মাস বেতনও বাকি থেকে যায়। শিল্পী সংস্থার দাবী, ইচ্ছে করেই পারিশ্রমিক বাকি রাখেন প্রযোজক। এই মুহূর্তে টালিগঞ্জে ধারাবাহিকের শ্যুটিং বন্ধ এই কারণেই।
২. বেতনের মাপকাঠি
টেলিভিশন ধারাবাহিকে অভিনয় করেন যে সব শিল্পীরা, তাদের পারিশ্রমিকের কোনও মাপকাঠি নেই। কে কত টাকা পাবেন সে বিষয়ে সম্পূর্ণ সিদ্ধান্ত নেন শুধুমাত্র প্রযোজক। সিনিয়রিটি বা অভিনয় গুণের ওপর পারিশ্রমিক বা মাসিক বেতন নির্ভর করে না। জনপ্রিয়তাকেই বেতনের মাপকাঠি হিসেবে ধরা হলেও, সেই জনপ্রিয়তা মাপারও কোনও ব্যবস্থা নেই। এমনও হয়, নায়ক/নায়িকার ভূমিকায় যিনি অভিনয় করছেন, সারাদিন কাজ করেও তার পারিশ্রমিক সেই একই ধারাবাহিকে পার্শ্বচরিত্রে অভিনয় করা কোনও শিল্পীর থেকে অনেকটাই কম। এই কারণেই প্রতিষ্ঠিত শিল্পীরা অনেকেই কোনও ধারাবাহিকের মুখ্য চরিত্রে অভিনয় করতে চান না, কারণ পার্শ্বচরিত্রে অনেক কম কাজ করে বেশি অর্থ উপার্জন করা যায়।
চিত্রনাট্য তৈরি, তবুও আসছে না অদম্য সেন
৩. শ্যুটিংয়ের উর্ধ্বসীমা
সম্প্রতি টিভি ধারাবাহিক শ্যুটিংয়ের উর্ধ্ব সময়সীমা বেঁধে দিয়েছে শিল্পীদের একটি সংগঠন। নতুন নিয়মে, দিনে ১০ ঘন্টার বেশি কোনও শিল্পীয়কে কাজ করানো যাবে না। এতদিন প্রায় বিরামহীন শ্যুটিং করে এসেছেন টেলি-তারকারা। সকাল আটটায় ফ্লোরে এসে পরদিন ভোর চারটেয় ছাড়া পেয়েছেন, এমন ঘটনা আকছারই ঘটে থাকে টেলি-জগতে। নতুন নির্দেশনামার পর চালু হয়েছে ওভারটাইমের নিয়ম। কিন্তু অনেক প্রযোজকই ওভারটাইম পারিশ্রমিক দিতে রাজি নন।