‘আঞ্চলিক ছবি’র তকমা কেন? প্রশ্ন অনুভবের

RBN Web Desk: ভারতের বিভিন্ন ভাষার ছবিগুলিকে আঞ্চলিক ছবির পর্যায়ে ফেলে দেওয়ার বিরোধিতা করলেন পরিচালক অনুভব সিনহা। সম্প্রতি কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে সত্যজিৎ রায় স্মারক বক্তৃতায় মূলধারার ছবির সামাজিক দায়িত্ব বিষয়ে বলতে গিয়ে এই প্রশ্ন তুললেন ‘রা ওয়ান’, ‘গুলাব গ্যাং’, ‘আর্টিকল ১৫’–এর পরিচালক।

তাঁর মতে সমাজ বলতে মানুষ কি শুধু তার গন্ডিটুকু নাকি তার চেয়ে বৃহত্তর কিছুকে বলে? “আমি যখন ইঞ্জিনিয়রিং পড়তাম, সেইসময় আমার অনেক বাঙালি বন্ধু ছিল। তারা নিজেদের মধ্যে বাংলায় কথা বলতো,” বললেন অনুভব। “অন্যরা তাদের নিয়ে মজা করলে তারা একজোট হয়ে তার বিরোধিতাও করতো। এটা অন্য কমিউনিটিতেও দেখা যায়। আসলে এটা আমাদের মধ্যে আপনিই গড়ে উঠেছে যেখানে এটা ধরে নেওয়া হয় যে হিন্দীভাষী রাজ্যগুলিই আসলে মূল ভারত। আর অন্য ভাষা সেখানে আঞ্চলিক ভারত হয়ে থেকে যায়। তাহলে সমাজ বলতে কী বুঝব আমরা? আমাদের সমাজ কতটুকু?”

আরও পড়ুন: অনির্বাণের উদ্যোগ, ব্রহ্মপুর রাঙালেন চার তরুণ

তাঁর নিজের মতে, “অথচ আমাদের সংস্কৃতিতেই রয়েছে ‘বসুধৈব কুটুম্বকম’ অর্থাৎ সারা পৃথিবী তোমার আপনজন। সেভাবে দেখলে তো সমাজ বলতে সারা পৃথিবীকেই বুঝতে হবে, সমস্ত মানবতাকেই বুঝতে হবে। তাই সেই দায়িত্ববোধ সারা পৃথিবীর নিরিখেই হওয়া উচিত।”

এবারের উৎসবে অনুভব পরিচালিত ‘মুল্ক’ ছবিটি দেখানো হয়। এই ছবি তৈরির পিছনে এক সত্য ঘটনা রয়েছে বলে জানালেন তিনি। বেশ কিছু মূলধারার ছবি করার পরে ২০১৬-তে তিনি মনস্থির করেন এরকম ছবি আর করবেন না। “একদিন লখনউয়ের এক সংবাদপত্রে একটি খবর আমার চোখে পড়ে। সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের এক ব্যক্তি তাঁর পুত্রের মৃতদেহ নিতে অস্বীকার করেছেন এই যুক্তিতে যে সেই ছেলে দেশদ্রোহীতার সঙ্গে যুক্ত ছিল। ঘটনাটা আমাকে ‘মুল্ক’-এর গল্প লিখতে অনুপ্রাণিত করে। এরকম ঘটনা দেশের আমজনতা জানতে পারেন না,” বললেন অনুভব।


‘মুল্ক’ ছবির মুখ্য ভূমিকায় অভিনয় করেছিলেন ঋষি কাপুর, তাপসী পান্নু, প্রতীক বব্বর, মনোজ পাহওয়া ও আশুতোষ রানা। তবে যাদের জন্য ‘মুল্ক’ বানিয়েছিলেন তাঁরা কতজন ছবিটি দেখেছেন সেই নিয়ে অনুভব নিজেই সন্দিগ্ধ। তবে তিনি কোনও সামাজিক বার্তা দিতে ছবি করেন না, বরং সেই নিয়ে দর্শকের মধ্যে আলোচনা চলুক এমনটাই তাঁর উদ্দেশ্য বলে জানালেন অনুভব। 

ছবি: গার্গী মজুমদার

Amazon Obhijaan



Like
Like Love Haha Wow Sad Angry

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *