মানিকজেঠুকে ওরা ভাস্কো দা গামা বলে: কুশল

RBN Web Desk: তাঁর মানিকজেঠু অর্থাৎ সত্যজিৎ রায়ের (Satyajit Ray) প্রতি জয়সলমেরের মানুষের শ্রদ্ধা এমনই যে কিংবদন্তি পরিচালককে তাঁরা ভাস্কো দা গামা বলে থাকেন। সত্যজিৎ পরিচালিত ‘সোনার কেল্লা’ (Sonar Kella) ছবি নিয়ে স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে এমনটাই বললেন কুশল চক্রবর্তী (Kushal Chakraborty)। ১৯৭৪ সালে মুক্তি পেয়েছিল ‘সোনার কেল্লা’ যার একটা বড় অংশের শুটিং হয়েছিল এই মরুশহরে। ছবির অর্ধশতক উদযাপনে, সুদীপ্ত চন্দর বিশেষ সোনার কেল্লা ক্যালেন্ডার প্রকাশ উপলক্ষে সম্প্রতি দক্ষিণ কলকাতার পদ্মপুকুর এলাকায় একজোট হয়েছিলেন কুশল, পরিচালক সন্দীপ রায় (Sandip Ray) ও ‘সোনার কেল্লা’র তোপসে অর্থাৎ সিদ্ধার্থ চট্টোপাধ্যায় (Siddhartha Chatterjee)। ছবির কেন্দ্রীয় চরিত্র মুকুল ধরের ভূমিকায় অভিনয় করেছিলেন কুশল।

পদ্মপুকুরেই হয়েছিল ছবির দ্বিতীয় মুকুল, উকিল শিবরতন মুখুজ্যের নাতির অপহরণের দৃশ্যের একাংশের শুটিং। সেই বাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে কুশল বললেন, “আমি ভাগ্যবান যে নিজের ছবির পঞ্চাশতম বছরের উদযাপন দেখে যেতে পারছি।”

আরও পড়ুন: রক্তাক্ত শাকিব খান! কী হলো অভিনেতার?

কিছুদিন আগে একটি তথ্যচিত্রের কাজে সন্দীপের সঙ্গে জয়সলমের গিয়েছিলেন কুশল। ‘সোনার কেল্লা’র শুটিংয়ের সেবারই তাঁর প্রথম জয়সলমের যাওয়া। “আমি কেল্লায় ঢুকতে যাব, দেখি কয়েকজন হাতে ফুলের মালা নিয়ে দাঁড়িয়ে আছেন। তাঁরা আমাকে সংবর্ধনা দিতে চান। তাঁরা বললেন, জয়সলমেরকে একসময় লোকে বলত ‘যা সালে মর’, অর্থাৎ ওখানে গেলে মৃত্যু নিশ্চিত। কারণ শুষ্ক মরুভূমি ছাড়া সেখানে আর কিছুই ছিল না। গত পঞ্চাশ বছরে, এই একটিমাত্র ছবি তাঁদের জীবন পাল্টে দিয়েছে। এই ছবির কারণেই অজস্র পর্যটক প্রতিবছর বাংলা থেকে জয়সলমের পাড়ি দেন।”

Satyajit Ray

সন্দীপ রায়ের সঙ্গে

কুশল জানালেন, “ওঁরা দুটো ভারী সুন্দর কথা বললেন। নিচে রয়েছে জয়সলমের ওপরে আছেন ভগবান আর দুইয়ের মাঝে রয়েছেন সত্যজিৎ রায়। মানিকজেঠু ওঁদের কাছে ভাস্কো দা গামা। ওঁরা মনে করেন, ভাস্কো ভারতকে খুঁজে বার করে তার সঙ্গে বাকি পৃথিবীকে সংযুক্ত করেছিলেন, মানিকজেঠুও ঠিক সেভাবেই জয়সলমেরকে সারা পৃথিবীর সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেন।” 

কলকাতায় ‘সোনার কেল্লা’ কোনও আউটডোর শুটিংয়ে ছিলেন না কুশল। তাঁকে নিয়ে কলকাতায় দুটো দৃশ্যের শুটিং হয়েছিল। একটা যেখানে মুকুল মাঝরাতের ছবি আঁকছে এবং অন্যটা সাংবাদিকের সঙ্গে কথা বলার দৃশ্য। 

“আমার মনে আছে, ওই দুটো দৃশ্যের সংলাপ মানিকজেঠু নিজে হাতে লিখে আমার বাবাকে দিয়ে বলেছিলেন, এই দুটো লাইন কুশলকে পড়িয়ে রাখবে কিন্তু কখনওই মুখস্থ করাবে না। আমার কাছে আজও সেই লেখা রয়েছে। আসলে উনি চাননি মুখস্থ করার ফলে আমার স্বাভাবিক অভিনয় নষ্ট হয়ে যাক। বাচ্চাদের ভেতর থেকে অভিনয়টা কীভাবে বার করে নিতে হয় উনি জানতেন” বললেন কুশল। 

ছবি: প্রবুদ্ধ নিয়োগী




Like
Like Love Haha Wow Sad Angry

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *