ছোটদের জন্য ছবি প্রযোজনায় এগিয়ে এলেন গ্রামের সাধারণ মানুষ
কলকাতা: নজিরবিহীনই বলা যায়। একের পর এক নামজাদা পরিচালকের ছবি যখন মুখ থুবড়ে পড়ছে বক্স অফিসে, তখন ক্রাউডফান্ডিংয়ের মাধ্যমে ছোটদের জন্য একটি ছবি প্রযোজনার বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন নদীয়ার আড়াংঘাটা গ্রামের মানুষ। পরিচালক উজ্জ্বল বসুর ছবি ‘দুধপিঠের গাছ’-এর প্রযোজনার খরচ বাবদ আড়াংঘাটার ৯২০ জন গ্রামবাসী মিলে তুলে দিলেন প্রায় ২০ লাখ টাকা।
উজ্জ্বল সংবাদমাধ্যমকে জানালেন, “গ্রামের মানুষ ছবি বোঝেন না এমন কথা প্রায়ই শোনা যায়। তাই এমন একটা ছবি করার ইচ্ছে ছিল যেটা গ্রাম ও শহর দু’জায়গার মানুষই দেখবেন। সেই ভাবনা থেকেই আমি ওই গ্রামের মানুষদের ছবি প্রযোজনায় নিয়ে আসি। ছবির সঙ্গে যুক্ত থাকলে তাঁরা নিজেদের তাগিদেই ছবিটা দেখতে আসবেন।”
‘দুধপিঠের গাছ’-এর গল্পটা কি নিয়ে?
গ্রামের ছেলে বছর আটেকের গৌর জিভের সমস্যার দরুণ ঠিক করে কথা বলতে পারে না। এদিকে পিঠে খেতে সে খুব ভালোবাসে। তার বিশ্বাস, ফলের বীজ পুঁতলে যেমন গাছ হয়ে সেই ফলই পাওয়া যায়, তেমনই পিঠে পুঁতে রাখলে নিশ্চয়ই পিঠেরও গাছ হবে। তাহলে ইচ্ছে হলেই গাছ থেকে পিঠে পেড়ে খাওয়া যাবে। শুরুতে তার শিশুমনের কল্পনাকে কেউ পাত্তা না দিলেও, ধীরে ধীরে বড়দের মনেও বিশ্বাস জন্মাতে শুরু করে এই পিঠেগাছকে নিয়ে। দিদার সঙ্গে কাশী যাওয়ার আগে সে সত্যিই একটা পিঠে মাটিতে পুঁতে দিয়ে যায়।
হারতে হারতেও জিতিয়ে দেয় সোয়েটার
তারপর কি হল, তাই নিয়েই এই ছবির গল্প।
বাংলায় যেখানে শিশুদের জন্য ছবি তৈরি হওয়া প্রায় বন্ধই হয়ে গেছে, সেখানে ‘দুধপিঠের গাছ’ একেবারেই অভিনব একটি প্রচেষ্টা।
উজ্জ্বল জানালেন, “ছবির শ্যুটিংয়ের কাজ প্রায় শেষ। তবে পোস্ট-প্রোডাকশনের জন্য আরও টাকার প্রয়োজন। সেই টাকা তোলার জন্য অনলাইনে অগ্রিম টিকিট বুকিং শুরু করেছি আমরা। আশা করছি সেপ্টেম্বরে মুক্তি পাবে ছবিটি।”
‘দুধপিঠের গাছ’-এ বিভিন্ন ভূমিকায় অভিনয় করেছেন বেনী বসু, কৌশিক রায়, শিবানী মাইতি ও আড়াংঘাটা গ্রামের মানুষরা।