অরুণাচলের লৌকিক কথা, ক্রিচার কমেডিতে ভরসা রাখছে টিম ‘ভেড়িয়া’
কলকাতা: করোনাকাল পার করে একটা লম্বা সময় হিন্দি ছবি দর্শক আনুকূল্য থেকে বঞ্চিত রয়েছে। ওয়েব সিরিজ়ের দাপটে ও সাধারণ মানুষের হলবিমুখ মনোভাবের কারণে একের পর এক বড় বাজেটের ছবিও মুখ থুবড়ে পড়ছে। তাই পরিচিত ধাঁচের বাইরে গিয়ে নতুন ধরণের কাহিনীতে ভরসা রাখছে নির্মাতারা। চেনা ছকের বাইরে বেরিয়ে ছবি করতেই অভ্যস্ত পরিচালক অমর কৌশিক। অরুণাচল প্রদেশের কিছু লৌকিক কাহিনী ও বিশ্বাসের ওপর ভিত্তি করে অমর নিয়ে আসছেন তাঁর নতুন ছবি ‘ভেড়িয়া’। অভিনয়ে রয়েছেন বরুণ ধবন, কৃতি স্যানন, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, দীপক দোবরিয়াল ও পালিন কাবাক। আজ শহরে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়েছিল টিম ‘ভেড়িয়া’।
ক্রিচার কমেডি কেন্দ্রিক এই কাহিনীতে ভাস্কর (বরুণ) একটি সাধারণ ছেলে যে একদিন জঙ্গলে গিয়ে নেকড়ের কামড় খায়। সেদিনের পর থেকে ভাস্করের আচরণ, তার শারীরিক ও মানসিক অবস্থা ক্রমশ পাল্টে যেতে থাকে। শ্রবণশক্তি তীক্ষ্ণ হওয়ার পাশাপাশি তার কাছে সুগন্ধ ও দুর্গন্ধের সংজ্ঞা পাল্টে যায়। প্রতিদিন রাতে তার মানবদেহ বদলে যেতে থাকে এক নেকড়ের দেহতে। কাছের বন্ধুদের সব কথা জানালেও তারা এই অদ্ভুত অতিপ্রাকৃত ঘটনাকে বিশ্বাস করতে চায় না। এই অভিশপ্ত জীবন থেকে কীভাবে মুক্তি ঘটবে ভাস্করের?
আরও পড়ুন: প্রত্যেক সংসারের চেনা গল্প
বরুণ জানালেন, “এরকম অদ্ভুত কঠিন চরিত্র আমি আগে কখনও পাইনি। তবে খুব ইচ্ছে ছিল অন্য ধরণের কিছু করার। ভাস্করের চরিত্রের জন্য প্রচুর শারীরিক পরিশ্রম করতে হয়েছে। কঠিন ছিল কাজটা। এটা অরুণাচলের গল্প, সেখানেই আমরা শুটিং করেছি। আমার ছবিতে সাধারণত কমেডি থাকেই, এখানেও আছে। তবে তা গল্পের পরিস্থিতির মধ্যে থেকেই।”
ছবির কাহিনী কিছুটা ‘নাগিন’ ও ‘জুনুন’ থেকে অনুপ্রাণিত বলে জানালেন বরুণ। প্রচুর ভিএফএক্স রয়েছে ছবিতে। ছবির সম্পূর্ণ শুটিং হয়েছে অরুণাচলের জঙ্গলে। বন্যপ্রাণীর দৃশ্য ছাড়া বাকি সব শটই শিল্পীরা নিজেরা দিয়েছেন বলে জানালেন বরুণ। মানুষ থেকে নেকড়েতে পরিবর্তিত হওয়ার দৃশ্যে যে পরিমাণ কায়িক পরিশ্রম তাঁকে করতে হয়েছে, তেমনটা এর আগে কোনও ছবির জন্য করতে হয়নি বলে জানালেন তিনি।
আরও পড়ুন: প্রত্যেক সংসারের চেনা গল্প
কৃতি এই ছবিতে এক পশু চিকিৎসকের ভূমিকায় রয়েছেন। “বরুণের সঙ্গে এর আগে আমি ‘দিলওয়ালে’ করেছি। তখন আমরা দুজনেই নতুন ছিলাম। এখন আমরা দুজনেই অনেকটা অভিজ্ঞ। বরুণের সঙ্গে আমার সম্পর্ক বরাবরই খুব ভালো। তেমনই আমাদের দুজনের কাজ করার খিদেও আগের থেকে বেড়েছে। এই ছবিতে আমি একজন ডাক্তার। সেই একমাত্র ডাক্তার যে ভাস্করের ভেতরের নেকড়েকে শান্ত করতে পারে। চরিত্রটা খুব অন্যরকম। বেশ কঠিন ছিল এরকম একটা চরিত্রে কাজ করা।”
ভাস্করের বন্ধুর চরিত্রে অভিনয় করেছেন অভিষেক। ‘পাতাললোক’ সিরিজ়ে একটি বিশেষ চরিত্রে অভিনয় তাঁকে প্রভূত পরিচিতি দেয়। এখানে তিনি রয়েছেন এক মজাদার চরিত্রে। “এর আগে ‘স্ত্রী’ ও ‘বালা’ ছবিতে আমি কমেডি চরিত্রে অভিনয় করেছি,” বললেন অভিষেক। “বরং ‘পাতাললোক’-এর চরিত্রটাই আমার জন্য একেবারে আলাদা ছিল। এখানে আমি আবারও কমেডি চরিত্রে আছি। অমর কৌশিকের ছবি আর চিত্রনাট্য, এই দুটোই আমার কাছে কাজটা করার জন্য যথেষ্ট কারণ ছিল।”
২৫ নভেম্বর সারা ভারতে মুক্তি পাচ্ছে ‘ভেড়িয়া’।