সহকারী ও গোয়েন্দা, এবার একই সিরিজ়ে সুপ্রভাত দুটোই
RBN Web Desk: বাংলা সাহিত্যে গোয়েন্দার সংখ্যা নেহাত কম নয়। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই তাদের একজন করে সহকারীও থাকে। তবে সেই সহকারীরা নিজেই কোনওদিন গোয়েন্দা হয়ে উঠছেন এমনটা কখনও দেখা যায়নি। বরং গোয়েন্দার সহকারী চরিত্রাভিনেতা নিজেই গোয়েন্দার ভূমিকায় অভিনয় করছেন এমনটা ইদানিং মাঝেমধ্যে ঘটেই থাকে। তবে অভিনেতা সুপ্রভাত দাস সম্ভবত প্রথম বাঙালি অভিনেতা যিনি এই দুই শর্তই পূরণ করতে চলেছেন একই সিরিজ়ে।
অঞ্জন দত্তের পরিচালনায় ‘ড্যানি ডিটেকটিভ আইএনসি’ সিরিজ়ে সুপ্রভাতকে দেখা যাবে ড্যানির সহকারী সুব্রত শর্মা হিসেবে। পরে তিনিই সিরিজ়ের মূল গোয়েন্দা হয়ে উঠবেন। অন্যদিকে প্রায় একইসঙ্গে ব্যোমকেশ সিরিজ়ে সুপ্রভাত অজিতের ভূমিকায় যথেষ্ট বিশ্বাসযোগ্য হয়ে উঠেছেন।
আরও পড়ুন: নব্বইয়ের ‘সত্যান্বেষী’, বাদ পড়লেন ব্যোমকেশ
আচমকা এমন একটা গোয়েন্দার চরিত্রে অভিনয়ের সুযোগ পেলে যে কোনও বাঙালি অভিনেতাই খুশি হবেন। সুপ্রভাতও ব্যতিক্রম নন। “গোয়েন্দা বলতে বাংলা সাহিত্যে আমরা যাদের দেখেছি তারা সকলেই কিছুটা সুপারহিরোর মতো। তবে সুব্রত সেরকম কেউ নয়,” রেডিওবাংলানেট-কে বললেন সুপ্রভাত। “বরং গোয়েন্দা হয়ে ওঠার তার কোনও ইচ্ছেই ছিল না। পরিস্থিতি তাকে গোয়েন্দা হতে বাধ্য করেছে। সুব্রত বেড়াতে ভালবাসে। রহস্যের পিছনে ছোটার চেয়েও বেশি সে নতুন জায়গায় যেতে ভালবাসে। ফলে কলকাতার কেসে বেশি টাকা পাওয়া সত্বেও কম পারিশ্রমিকের কোনও কাজ নিয়ে শিলং বেরিয়ে পড়তে সুব্রত দু’বার ভাবে না।”
বেদানাবালা, আঙুরবালার মতো সঙ্গীতশিল্পীর পরিবারে জন্মালেও সুপ্রভাতের ইচ্ছে ছিল ফুটবলার হওয়ার। বাড়ির সমর্থন না থাকায় তাঁকে পুরুলিয়া রামকৃষ্ণ মিশনে পড়তে চলে যেতে হয়। পরে ফিরে এসে ফুটবল খেলার বয়স চলে যাওয়ায় বাধ্য হয়েই চাকরিতে যোগ দেন তিনি। শুরুর দিকে গৌতম ঘোষের ‘শঙ্খচিল’, রাজা সেনের ‘মানবপ্রেমী মহাপুরুষ’ দিয়ে অভিনয় জগতে পা রাখেন সুপ্রভাত।
অঞ্জনের সঙ্গে বেশ কয়েক বছর ধরে কাজ করছেন তিনি। যে কোনও ছবি তৈরির সময় অঞ্জনের এনার্জিই তাঁকে সবচেয়ে বেশি উদ্বুদ্ধ করে বলে জানালেন সুপ্রভাত। “এই বয়সেও অঞ্জনদার যা এনার্জি ভাবা যায় না। ওই এনার্জিটাই যেন অভিনেতাদের ভেতর থেকে সেরাটা বার করে দেয়। শ্যুটিংয়ের সময় এটা আমি সবসময় অনুভব করি। কদিন আগে ‘মার্ডার ইন দ্য হিলস’-এর জন্য দার্জিলিং-এ খাদের ধারে আমি আর অর্জুন (চক্রবর্তী) একটা শট দিচ্ছিলাম। দুজনেই দৌড়তে-দৌড়তে প্রায় কাঁপছি বলা যায়। আমাদের সঙ্গে সমান তালে অঞ্জনদাও দৌড়চ্ছিলেন। নিচে চল্লিশ-পঞ্চাশ ফুট খাদ, পা ফসকালে সোজা কংক্রিটের জমিতে পড়তে হবে,” বললেন সুপ্রভাত।
ছেষট্টি বছর বয়সেও অঞ্জন এত এনার্জি কোথা থেকে পান তা জানেন না সুপ্রভাত। “আর অঞ্জনদা নিজে একজন অসাধারণ অভিনেতা, তবে এই ইন্ডাস্ট্রি ওঁর অভিনয় ক্ষমতাকে সেভাবে ব্যবহারই করতে পারেনি। নিজে অভিনেতা হওয়ার কারণেই একটা দৃশ্য উনি যেভাবে বুঝিয়ে দেন তারপরে কাজটা অনেক সহজ হয়ে যায়,” বললেন সুপ্রভাত
৩ নভেম্বর ক্লিক ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে মুক্তি পেতে চলেছে ‘ড্যানি ডিটেকটিভ আইএনসি’।
ছবি: স্বাতী চট্টোপাধ্যায়