সেই সংলাপের পুরো কৃতিত্ব পরিচালকের: সুমন্ত
RBN Web Desk: সালটা ১৯৮৬। সেই বছর পুজোয় মুক্তি পেল তপন সিংহ পরিচালিত ছবি ‘আতঙ্ক’। সেই ছবির প্রথম দৃশ্য বাঙালি দর্শককে নাড়িয়ে দিয়েছিল। এক বৃষ্টির রাতে কয়েকজন দুষ্কৃতি একটি ছেলেকে খুন করে। অলক্ষ্যে এই ঘটনার সাক্ষী হন এক নির্বিবাদী, আদর্শবান অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক। মিহির নামের যে ছেলেটি ছুরি চালায়, সে সেই মাস্টারমশাইয়ের প্রাক্তন ছাত্র। একদা মেধাবী সেই ছাত্রকে দেখে অবাক হয়ে যান মাস্টারমশাই। মিহির এগিয়ে এসে বলে, ‘মাস্টারমশাই, আপনি কিন্তু কিছুই দেখেননি।’ এরপরও একাধিকবার এই হুমকির সম্মুখীন হন মাস্টারমশাই।
কাল্ট হয়ে যাওয়া এই সংলাপ যাঁর মুখে শোনা গিয়েছিল তিনি সুমন্ত মুখোপাধ্যায়। সম্প্রতি সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের এক স্মরণসভায় ‘আতঙ্ক’-এর স্মৃতি হাতড়ে রেডিওবাংলানেট-কে সুমন্ত বললেন, “আমি তখন ইন্ডাস্ট্রিতে নতুন। সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়, তপন সিংহ সব মিলিয়ে আমার কাছে একটু ঘাবড়ে যাওয়া ব্যাপার। যদিও তার আগে একটি ছবিতে অভিনয় করেছিলাম কিন্তু সৌমিত্রদার সঙ্গে এই ছবি আমার অভিনয়জীবনে এক মাইলস্টোন। আর সেই সংলাপকে বিখ্যাত করেছেন পরিচালক। তিনি এমন এমন জায়গায় এই সংলাপ ব্যবহার করেছিলেন যা দর্শকের মনে জায়গা করে নিয়েছিল। এখানে আমার কোনও কৃতিত্ব নেই।”
তবে প্রথমে সৌমিত্রর সঙ্গে একই ফ্রেমে থাকা নিয়ে ভীষণ নার্ভাস ছিলেন সুমন্ত। পরবর্তীকালে ছবি ছাড়াও থিয়েটার ও টেলিভিশন ধারাবাহিকে একসঙ্গে কাজ করেছেন।
আরও পড়ুন: জটায়ুর সাহস
এই ছবিতে মাস্টারমশাইয়ের চরিত্রে বাঙালির তিন ভুবনের হার্টথ্রব সৌমিত্রর মুখের নীচে ফোলা ঠোঁটের প্রস্থেটিক্স দর্শককে অবাক করে দিয়েছিল। রাজনীতি, গুণ্ডাগিরি এবং তার সঙ্গে পুলিশি আঁতাত নিয়ে ছবির চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন শতাব্দী রায়, প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়, অনিল চট্টোপাধ্যায়, মনোজ মিত্র, ও নির্মল কুমার। ‘আতঙ্ক’ ছবির মাধ্যমেই অভিনয়জগতে পা রাখেন শতাব্দী।
সৌমিত্রবিয়োগে স্বাভাবিকভাবেই অভিভাবকহীন বাংলা চলচ্চিত্র জগৎ। “উত্তমকুমারের মৃত্যুর পরেও আমাদের একইভাবে মনে হয়েছিল এরপর কী হবে। কিন্তু সময়ের সঙ্গে-সঙ্গে আমাদেরও এগোতে হয়েছে,” জানালেন সুমন্ত।
ছবি: প্রতিবেদক