ইন্দুবালা জীবনের সেরা চরিত্র হয়ে থাকবে: শুভশ্রী
RBN Web Desk: এপার বাংলা আর ওপার বাংলা। একসময় পাশাপাশি হাত ধরে চলা দুই বাংলা যেদিন একে অপরের থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে স্বতন্ত্র পরিচয়ে পথ চলা শুরু করল সেদিন থেকেই বাংলার আকাশে দুর্ভাগ্যের শুরু। কত জানা-অজানা উচ্ছেদের কাহিনী, কত না শুনতে পাওয়া বিদায়ের ব্যথা, কত না বলতে পারা মনকেমনের গল্প সেই দিন থেকে দুই বাংলার অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ হয়ে দাঁড়াল তার বুঝি কোনও হিসেব হয় না।
সে সময়ে বাংলাদেশ থেকে কলকাতায় চলে আসা তেমনই এক মেয়ে ইন্দুবালাকে নিয়ে ২০২০ সালে কল্লোল লাহিড়ীর উপন্যাস ‘ইন্দুবালা ভাতের হোটেল’ প্রকাশিত হয়। সেই গল্প নিয়ে একই নামে আসছে পরিচালক দেবালয় ভট্টাচার্যের ওয়েব সিরিজ়। ইন্দুবালার ভূমিকায় অভিনয় করেছেন শুভশ্রী গঙ্গোপাধ্যায়। এছাড়া রয়েছেন প্রতীক দত্ত, দেবপ্রতিম দাশগুপ্ত, অঙ্গনা রায়, পারিজাত চৌধুরী, সুহোত্র মুখোপাধ্যায়, স্নেহা চট্টোপাধ্যায়, রাহুল বন্দোপাধ্যায়, তীর্থঙ্কর চক্রবর্তী, মিঠু চক্রবর্তী ও দেবদত্ত রাহা।
আরও পড়ুন: হারিয়ে যাওয়া চিঠির দিন ফেরাবে ‘ডাকঘর’
বাংলাদেশ তখন পূর্ব পাকিস্তান। সেখানেই ছিল ইন্দুবালার গ্রাম আর বাড়ি। ইন্দুবালার বিয়ে হলো কলকাতা শহরে। নিজের গ্রাম ছেড়ে কলকাতায় এসে তার জীবনটা অনেকটাই পাল্টে গেল। তবু ইন্দুবালা কোনওদিন ভুলতে পারল না ফেলে আসা দিনগুলোকে। একদিন নিজের বাড়িতেই সে একটা ছোট্ট হোটেল খুলে ফেলল যেখানে অফিসযাত্রী, স্কুল-কলেজ ফেরত মানুষ খেতে আসবে। সেই হোটেলে নিজের রান্না করা প্রত্যেক পদের মধ্যে দিয়ে ইন্দুবালা তার গ্রামের স্মৃতিকে ফিরে পেতে চাইল। সেই হোটেলের প্রত্যেক রান্নায় জড়িয়ে থাকে কোনও এক ফেলে আসা গল্প।
“ভারতবর্ষে কোনও ওটিটি এরকম একটা গল্প নিয়ে কাজ করতে চাইত না। কারণ এই গল্পটা আসলে অনুভব করার। তবু প্রযোজনা সংস্থা আমার ওপর ভরসা রেখে এরকম একটা কাজ করতে দিয়েছে তার জন্য আমি কৃতজ্ঞ। এই কাজটা আমার নিজের এত কাছের যে কিছু বলা সত্যিই খুব কঠিন। তবে শুভশ্রী রাজি না হলে এই কাজটাই হয়তো হতো না,” বললেন দেবালয়।
আরও পড়ুন: আজকাল তাড়াহুড়ো করে ছবি তৈরি হচ্ছে, মনে করেন ঋত্বিক
এক অল্পবয়সী গৃহবধূর চরিত্র থেকে বয়স্ক নারীর চরিত্র ইন্দুবালা। এরকম একটা দীর্ঘ জীবনকালের চরিত্র করতে পেরে একইসঙ্গে উচ্ছ্বসিত ও কৃতজ্ঞ শুভশ্রী জানালেন, “ইন্দুবালা আমার ভেতরে এমনভাবে ঢুকে গেছে যে চিরত্রটি চিরকাল আমার মধ্যে দিয়ে বেঁচে থাকবে। আমি যেহেতু মেথড অ্যাক্টিং করি তাই এই কাজটার সময় আমি ওই চরিত্রটার মধ্যেই বেঁচেছি। শুধু আমি নই, আমাদের ইউনিটের প্রত্যেক অভিনেতা-অভিনেত্রী এ ক’দিন ওই চরিত্র হয়ে উঠেছিল। অভিনয়জীবনে নানারকম চরিত্রে আমাদের কাজ করতে হয়। তবে খুব কম চরিত্র আছে যেগুলো চিরকাল আমাদের সঙ্গে থেকে যায়। যেমন ‘পরিণীতা’র মেহুল। একইভাবে ইন্দুবালাও আমার সঙ্গে থেকে যাবে। এটা আজ অবধি আমার অভিনীত সেরা চরিত্র বলে আমি মনে করি।”
সিরিজ়ে সুরারোপ করেছেন অমিত চট্টোপাধ্যায়। ৮ মার্চ হইচইতে মুক্তি পাবে ‘ইন্দুবালা ভাতের হোটেল’।
ছবি: RBN আর্কাইভ