সাহানা, স্যমন্তকের গাওয়া রবীন্দ্রসঙ্গীতে কপিরাইট দাবি আইপিআরএস-এর
RBN Web Desk: রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সমস্ত সৃষ্টির ওপর থেকে বিশ্বভারতীর কপিরাইট উঠে গেছে ২০০১ সালে। কিন্তু তার ১৮ বছর পর গত অক্টোবর থেকে একটি সংস্থা ইউটিউবে রবীন্দ্রনাথের গান আপলোড করতে গেলে কপিরাইট সংক্রান্ত জটিলতা দেখিয়ে তা করতে দিচ্ছে না বলে অভিযোগ জানিয়েছেন সঙ্গীতশিল্পী সাহানা বাজপেয়ী ও স্যমন্তক সিনহা। ইন্ডিয়ান পারফর্মিং রাইটস সোসাইটি (আইপিআরএস) নামক এক সংস্থা থেকে এই স্বত্ব দাবি করা হচ্ছে বলে জানা গিয়েছে।
“যাঁরা স্বাধীনভাবে গান গেয়ে ইউটিউবে আপলোড করতে চাইছেন সেখানেই কপিরাইট দাবি করা হচ্ছে,” রেডিওবাংলানেট-কে জানালেন সাহানা। “যেখানে বিশ্বভারতীর কোনও কপিরাইট নেই, সেখানে আর কেউ কীভাবে বাধা দিতে পারে? আইপিআরএস-এর দাবি তারা ভারতীয় শিল্পীদের হয়ে কাজ করেন যাতে তাঁরা ইউটিউবে গান গেয়ে তার থেকে আয় করতে পারেন। কিন্তু কোন গানটা ঠিক বা কোনটা ভুল, এটা বিচার করার অধিকার তাঁদের কে দিয়েছে? এমনিও ইউটিউবে গান গেয়ে বিশাল কিছু আয় হয় না। ভিউ সংখ্যা ৩০,০০০ হলে শিল্পী পাবেন ছ’ডলার। কটা গানে আর ৩০,০০০ ভিউ হয়? তবুও সেই সামান্য পরিমাণ অর্থও তাঁরা শিল্পীকে পেতে দিচ্ছেন না।”
আরও পড়ুন: ফাগুন লেগেছে বনে বনে
অক্টোবরে শান্তিনিকেতনে তাঁর বাড়িতে ঘরোয়া পরিবেশে ‘মহারাজ একি সাজে’ গানটি গেয়েছিলেন সাহানা। সঙ্গে ছিলেন শান্তিনিকেতন শিশুতীর্থর অধ্যক্ষ সুদৃপ্ত ঠাকুর। গিটারে সঙ্গত করেছিলেন স্যমন্তক সিনহা ও সেতারে ছিলেন নীল সরকার। সেই গানটি ইউটিউবে আপলোড করার সময় প্রথমবার বাধা পান সাহানা।
“শুধুমাত্র স্বাধীনভাবে গাওয়া রবীন্দ্রনাথের গানের ক্ষেত্রেই এই বাধা আসছে। অতুলপ্রাসাদ সেনের গান আপলোড করতে কোনও সমস্যা হচ্ছে না। উনিও তো সমসাময়িক। যেখানে কোনও ব্যানার আছে সেখানে কপিরাইট দাবি করা হচ্ছে না। এই সময় যখন সকলে বাড়িতে বসে গান করছে, তখনও এভাবে বাধা পেতে হচ্ছে। আমার বেশ কিছু বন্ধুর সঙ্গেও একই ঘটনা ঘটেছে। তাঁদের মধ্যে কেউ-কেউ ডিসপিউট দাবি করে তার জবাবে রিলিজ় পেয়েছে। আমি এখনও পাইনি। তবে সেটা পরের কথা। “পাবলিক ডোমেইনে গান আপলোড করার জন্য কপিরাইট দাবি করা হবে কেন,” প্রশ্ন সাহানার।
আরও পড়ুন: সিনেমার মতোই ছিল যে জীবন
“আমি লাইভ গান ও রেকর্ড করা গান আপলোড করতে গিয়ে কপিরাইট সমস্যায় পড়েছি,” জানালেন স্যমন্তক। “রবীন্দ্রনাথের গান ছাড়া অন্য গানে সমস্যা হচ্ছে না। ২০১৮-তে একটি গান আমি আপলোড করেছিলাম, সেটাতেও এই কপিরাইটের দাবি এসেছে। সেটা এতদিন খেয়াল করিনি। এখন বেশি গান আপলোড করছি বলে ব্যাপারটা সামনে এল। কতজন শিল্পীর এই অভিজ্ঞতা হয়েছে জানি না। শুনেছি বাংলাদেশের একটি ব্যান্ডও নাকি এই সমস্যায় পড়েছে।”
এই ঘটনা বন্ধ না হলে সকলে মিলে কোনও পদক্ষেপ নেওয়া যায় কিনা সেটাও তাঁরা চিন্তাভাবনা করছেন বলে জানালেন স্যমন্তক। যেহেতু ইউটিউবে সরাসরি যোগাযোগ করা যায় না, তাই স্বাধীন রবীন্দ্রসঙ্গীত শিল্পীদের পক্ষ থেকে আইপিআরএস-এর সভাপতি জাভেদ আখতারকে এই সমস্যার কথা জানিয়ে একটি ইমেল করতে চলেছেন সুদৃপ্ত ঠাকুর। সংস্থার তরফে কী জবাব আসে তা দেখে আগামী পদক্ষেপ নেবেন শিল্পীরা।