দেবীর বোধন না নারীর বিসর্জন? প্রশ্ন তুলবে ‘মহিষাসুরমর্দ্দিনী’
কলকাতা: দুর্গাপুজো শেষ হয়েছে মাত্র ক’দিন হলো। সামেনই কালি পুজো। পরের পর শক্তির আরাধনায় ব্যস্ত বাঙালি। যে নারীশক্তির পুজো হয় ঘরে-ঘরে, সেই নারী বাস্তবে কতটা সন্মান পায়? এই প্রশ্ন নিয়েই আসছে পরিচালক রঞ্জন ঘোষের ছবি ‘মহিষাসুরমর্দ্দিনী’। অভিনয়ে রয়েছেন ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত, শাশ্বত চট্টোপাধ্যায়, পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়, শ্রীতমা দে, অর্জুন ঘোষ, অরুণিমা হালদার, অভ্যুদয় দে, পূর্বাশা মাল, কৌশিক কর, সাহেব ভট্টাচার্য ও পৌলমী দাস। গতকাল শহরে এক অনুষ্ঠানে মুক্তি পেল ছবির ট্রেলার।
একটি মূক ও বধির বাচ্চা মেয়েকে ধর্ষণ ও খুন করা হয় দুর্গাপুজোর আগের রাতে। কাছেই একটি বাড়িতে তখন চলছে পুজোর শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি। বাড়ির মালকিন ছাড়াও সেখানে উপস্থিত তার চার পেয়িং গেস্ট ছেলেমেয়েরা। পঞ্চমীর সেই রাতে কয়েকজন লোক আসে সেই বাড়িতে। হয়তো তারা এই ঘটনা সম্পর্কে কিছু জানে, হয়তো জানে না। নারীশক্তির বোধনের আগে সমাজের সামনে এ কেমন প্রশ্ন তুলে দিয়ে গেল সেদিন গভীর রাতের ঘটনা?
আরও পড়ুন: শেষ দৃশ্যে ভাঙা হোল্ডার, সত্যজিতের জয়জয়কার
“এখানে আমার চরিত্রটা একজন রাজনৈতিক নেতার,” জানালেন শাশ্বত। “চরিত্রটা ধূসর এটুকু বলেত পারি। ছবির নামটা কিন্তু একেবারেই চমক নয়। নারীশক্তির একটা ব্যাপার আছে চিত্রনাট্যে যেটা ছবির মূল বক্তব্য। বিভিন্ন বয়সের নারীকে নিয়েই গল্প। আর নামটা যে একেবারে সঠিক সেটা ছবি দেখলে বোঝা যাবে।”
ছবির মূল চরিত্রে রয়েছেন ঋতুপর্ণা। এক নভশ্চরের ভূমিকায় দেখা যাবে তাঁকে। তিনি জানালেন, “রঞ্জনের সঙ্গে এটা আমার তৃতীয় ছবি। তবে ‘মহিষাসুরমর্দ্দিনী’ তার মধ্যে সবচেয়ে তীব্র ও কঠিন চরিত্রের ছবি। এখানে চরিত্রগুলো কিছুটা হলেও রূপকধর্মী। সমাজে মেয়েদের সঠিক অবস্থান সম্পর্কে কথা বলবে ছবিটা।”
বাস্তব জগতে কোনও প্রত্যন্ত অঞ্চলে নারী বা শিশু নির্যাতন ও ধর্ষণের ঘটনা শুনলে সকলকেই এক অদ্ভুত অসহায়তা ঘিরে ধরে। এই ছবিতে সেরকম একটি ঘটনাকেই তুলে আনা হয়েছে বলে জানালেন ঋতুপর্ণা।
“আমার অভিনীত চরিত্রের মুখে সংলাপ খুব বেশি নেই। সেই জন্যই চরিত্রটা খুব শক্তিশালী। ছবির বিষয়বস্তু দর্শককে ভাবতে বাধ্য করবে,” দাবি তাঁর।
আরও পড়ুন: তিনবার অভিনেতা পাল্টে ‘গুপী’ হলেন তপেন
“‘মহিষাসুরমর্দ্দিনী’ নামকরণের পিছনে কতটা ট্র্যাজেডি লুকিয়ে আছে সেটা ছবিটা দেখলে বোঝা যাবে,” বললেন রঞ্জন। “সারা বছর ধরে আমরা এত দেবী পূজা করি। অথচ বাস্তবে সেই নারীদের ঠিক কী চোখে দেখা হয়! সেই পুরুষতান্ত্রিকতা, যা শুধু পুরুষদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকে না, সেই দৃষ্টিভঙ্গি থেকেই এই ছবি।”
ছবির কাহিনীকার রঞ্জন। চিত্রগ্রহণে রয়েছেন শুভদীপ দে। সম্পাদনা করেছেন অমিত পাল। ছবিতে সুরারোপ করেছেন অভিজিৎ কুন্ডু।
নভেম্বরে প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পাবে ‘মহিষাসুরমর্দ্দিনী’।