কলাভবনে বিকৃত সুরে ‘সেদিন দুজনে’, বিতর্কে বিভক্ত রবীন্দ্র অনুরাগীরা
RBN Web Desk: বিকৃত সুরে রবীন্দ্রসঙ্গীত গাওয়া নিয়ে বিতর্কের সৃষ্টি হলো বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে। গতকাল সন্ধ্যায় বিশ্বভারতী চত্বরে নন্দনমেলায় কলাভবনের ছাত্রছাত্রীদের একাংশ জমায়েত হয়ে ভিন্ন সুরে, নিজেদের কথা বসিয়ে ‘সেদিন দুজনে’ গানটি প্রতিবাদী ভঙ্গিতে গাইতে থাকেন। সেই ঘটনার ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়তেই শুরু হয় বিতর্ক।
বিকৃত সুরে ‘সেদিন দুজনে’ গাওয়ার প্রাথমিক প্রতিক্রিয়াস্বরূপ প্রবল নিন্দা শুরু হয়। এমন কি এই গানের সঙ্গে জনৈক রোদ্দুর রায়ের প্রভাবকে যুক্ত করে তীব্র নিন্দায় ফেটে পড়েন অনেকেই। যেহেতু সাম্প্রতিককালে রোদ্দুর রায় বিকৃত ভঙ্গিতে ‘সেদিন দুজনে’ গেয়ে প্রবল সমালোচিত হয়েছেন, তাই অনেকেই এই গানটিকে সেই একই অর্থে গাওয়া বলে ধরে নেন। এমনকি এও শোনা যায় যে গতকাল রোদ্দুর নিজে শান্তিনিকেতনে উপস্থিত ছিলেন যদিও এখনও পর্যন্ত তার কোনও প্রমাণ পাওয়া যায়নি।
আরও পড়ুন: পাকদণ্ডীর পথে পথে দেওরিয়াতাল
বিশিষ্ট চিত্রশিল্পী ও বিশ্বভারতীর প্রাক্তন উপাচার্য নন্দলাল বসুর স্মরণে নানা শিল্পকার্য নিয়ে অনুষ্ঠিত হয় নন্দনমেলা।
তবে রবীন্দ্র অনুরাগীদের একাংশের মত, ভাইরাল হওয়া ভিডিওটি একটু মন দিয়ে দেখলে বোঝা যায় গানটিতে যে সমস্ত কথা ব্যবহার করা হয়েছে তা বিশ্বভারতীর কিছু নিয়মের প্রতিবাদ করেই করা। এর সঙ্গে রোদ্দুর রায়ের কোনও সম্পর্ক নেই। কিংবা এমনও হতে পারে এই অভিনব পন্থা অবলম্বন করে ছাত্রছাত্রীরা একদিকে যেমন বিশ্বভারতীর সেমিস্টার পদ্ধতির বিরোধিতা করে মুক্ত বিদ্যালয়ের ভাবনাকে ফিরিয়ে আনা ও ফি বৃদ্ধির প্রতিবাদ করছেন, তেমনই একই সঙ্গে রোদ্দুর রায়ের গানের ভঙ্গির বিরুদ্ধেও সোচ্চার হয়েছেন। ঠিক কী উদ্দেশ্যে তাঁরা এই গানটিকে বেছে নিয়েছেন তা এখনও স্পষ্ট নয়।
আরও পড়ুন: ফাগুন লেগেছে বনে বনে
তবে সোশ্যাল মিডিয়াতে এই নিয়েও অনেকে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তাঁদের মতে, যদি প্রতিবাদ করতে হয় তাহলে অন্যভাবে নয় কেন, কিংবা এই গানটিকেই হঠাৎ বেছে নেওয়া হলো কেন? অনেকের মতে, এভাবে রোদ্দুরের মতো ‘উন্মাদ’কে উৎসাহ দেবার কোনও অর্থ হয় না। রবীন্দ্রনাথের গান নিয়েই কেন প্রতিবাদ করা হলো, অন্যভাবেও তো এই দাবিগুলো জানানো যেত, প্রশ্ন করেছেন অনেকে।
তবে কলাভবনের ছাত্রছাত্রীদের তরফে এই প্রসঙ্গে এখনও পর্যন্ত কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি। এই ঘটনায় বিশ্বভারতীর আশ্রমিক, অধ্যাপক ও প্রাক্তনীদের একাংশও তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।