‘পাকা দেখা’য় বাধা, বিবাহ বিভ্রাটে সোহম-সুস্মিতা?
RBN Web Desk: জয় এসেছে তিয়াশাদের বাড়ি। ব্যাঙ্কের ব্যস্ত চাকুরে জয়ের সঙ্গে তথ্যপ্রযুক্তি কর্মী তিয়াশার বিয়ের কথা চলছে। সেই সূত্রেই জয় হাজির তার বাইক নিয়ে। তিয়াশার বাবা-মা জয়কে পেয়ে বেজায় খুশি। ছোট-ছোট মজার সংলাপ চলছে তাদের মধ্যে। কোনও নেশা না করা আদর্শ চরিত্রের জয়ের সঙ্গে তিয়াশার বাবা নিজের অনেক মিল খুঁজে পান। যদিও তারা এখনও জয়ের বাড়ির লোকজনের কথা জানেন না। মানুষ হিসেবে খারাপ না হলেও জয়ের বাবা, মা ও ঠাকুরদা দিনের প্রায় সর্বক্ষণই মদের নেশায় বুঁদ হয়ে থাকেন। আদর্শবান মানুষ তিয়াশার বাবা এমন বাড়িতে কি মেয়ের বিয়ে দিতে চাইবেন? নাকি বিবাহ বিভ্রাটে ভণ্ডুল হয়ে যাবে জয়-তিয়াশার পাকা দেখা?
সেদিন জয়ের আগমনে তিয়াশাদের বাড়ি সরগরম। পরিচালক প্রেমেন্দু বিকাশ চাকি জয়ের আপ্যায়নে বেজায় ব্যস্ত। দক্ষিণ কলকাতার কেয়াতলায় তাঁর আগামী ছবি ‘পাকা দেখা’র শ্যুটিং চলছিল। ছবিতে অভিনয় করছেন সোহম চক্রবর্তী (জয়), সুস্মিতা চট্টোপাধ্যায় (তিয়াশা), খরাজ মুখোপাধ্যায়, লাবণী সরকার, সুমন্ত মুখোপাধ্যায়, দোলন রায় এবং দীপঙ্কর দে।
আরও পড়ুন: নেপথ্যে গাইলেন জলি, স্টেজে দাঁড়িয়ে ঠোঁট মেলালেন রাহুল দেব বর্মণ
“ছবির সংলাপগুলো এমন যে আমরা সকলেই শ্যুট করতে-করতে হেসে লুটোপুটি খাচ্ছি,” রেডিওবাংলানেট-কে বললেন সোহম। “এটা দারুণ মজাদার একটা পারিবারিক ছবি হতে চলেছে।”
এত অভিজ্ঞ শিল্পীদের সঙ্গে কাজ করতে পেরে স্পষ্টতই খুশি সুস্মিতা। “টিটোদা (দীপঙ্কর), লাবণীদি, খরাজদা, মন্টুদা (সুমন্ত), দোলনদি এদের সকলের সঙ্গে থেকে কাজ শেখার সুযোগ পাচ্ছি। এটা সত্যি মনে রাখার মতো একটা ব্যাপার। সোহমদার সঙ্গে কাজ করতে খুব ভালো লাগছে। আমাদের মধ্যে একটা দারুণ বোঝাপড়াও রয়েছে তাই কোনও অসুবিধা হচ্ছে না। তাছাড়া চাকিদা কী চায় সেটা পরিষ্কারভাবে বুঝিয়ে দেয়। তাই কাজ করাটা এমনিই সহজ হয়ে যায়,” বললেন সুস্মিতা।
এমন কোনও চরিত্র তিনি আগে পাননি এবং ভবিষ্যতে হয়তো পাবেনও না বলে জানালেন লাবণী। খরাজও প্রায় এক সুরেই বললেন, “এরকম অভিনব একটা মজার গল্প আর এমন বিচিত্র চরিত্র আগে মনে হয় করিনি। সেই ‘হরিপদ ব্যান্ডওয়ালা’ করার এতদিন পর আবার এই ছবিতে আমি আর লাবণী স্বামী-স্ত্রীর চরিত্রে কাজ করলাম।”
ছবিতে খরাজ, লাবণী ও দীপঙ্কর সকলেই সারাক্ষণ নেশা করে থাকলেও সোহম একেবারে বিপরীত মেরুতে অবস্থান করে। ছবিতে নানারকম কমেডি সিকোয়েন্স ও দারুণ সব সংলাপ আর গান আছে বলে জানালেন খরাজ। “সবথেকে বড় কথা আমরা প্রত্যেকেই প্রচুর ইম্প্রোভাইজ করছি যেটা সবসময় করা যায় না। চাকি আমাদের এ ব্যাপারে সম্পূর্ণ স্বাধীনতা দিয়েছে। ফলে দারুণ মজা করে কাজ হচ্ছে। সেটে সারাক্ষণ জমিয়ে আড্ডা আর মজা চলছেই। কমেডি তো অনেক করি, কিন্তু এই ছবিটা যেন আলাদা রকমের মজার,” বললেন তিনি।
“গল্প তো বেশি বলা যাবে না, তবে আমি এমন একজন ঠাকুরদার চরিত্রে রয়েছি যিনি নেশা করে বেফাঁস কথাবার্তা বলে ফেলেন,” জানালেন দীপঙ্কর।
গত দু’বছরের পরিস্থিতিতে মানুষের জীবন থেকে হাসি হারিয়ে গেছে বলে মনে করেন প্রেমেন্দু। “আমার মনে হয়েছিল এরকম একটা হাসির ছবি দরকার। আমি এরকম ছবি করতেই ভালোবাসি। আগেও করেছি, আবারও করব। আমার ছবিতে কোনও ভিলেন থাকে না। আট থেকে আশি সকলে মিলে একসঙ্গে বসে দেখার মতো ছবি ‘পাকা দেখা’। যেহেতু কমেডি তাই টাইমিংটা সেখানে খুব গুরুত্বপূর্ণ। সেই জন্যই শক্তিশালী অভিনেতাদের প্রয়োজন। খুব গুণী অভিনেতাদের পেয়েছি। চিত্রগ্রাহক হিসেবে এদের সকলের সঙ্গে অজস্র কাজ করেছি। তাই সমমানসিকতার একটা ব্যাপার এদের সকলের সঙ্গেই আছে। সোহমের সঙ্গেও আমার দীর্ঘদিনের বন্ধুত্ব। আশা করব বাঙালিয়ানায় মোড়া একটা আগাগোড়া হাসির ছবি দর্শকদের উপহার দিতে পারব,” বললেন প্রেমেন্দু।
ছবির চিত্রনাট্য লিখেছেন পদ্মনাভ দাশগুপ্ত। সঙ্গীত পরিচালনার দায়িত্বে রয়েছেন জিৎ গঙ্গোপাধ্যায়।
আগামী বছর মুক্তি পাবে ‘পাকা দেখা’।