মূল সত্যজিৎ কি পড়েছিলেন তিনি? নীরেনের বক্তব্যে ধোঁয়াশা

RBN Web Desk: সম্প্রতি মুক্তি পেয়েছে সত্যজিৎ রায়ের চারটি ছোটগল্প অবলম্বনে ওয়েব সিরিজ় ‘রে’। পরিচালনা করেছেন সৃজিত মুখোপাধ্যায়, অভিষেক চৌবে ও ভাসান বালা। মুক্তির পর থেকেই দর্শকদের একাংশের ক্ষোভের মুখে পড়েছেন তিন পরিচালক, বিশেষ করে সৃজিত। অতি আধুনিক করতে গিয়ে মূল কাহিনীর সম্পূর্ণ বিনির্মাণ বহু দর্শকই মেনে নিতে পারেননি।

এই সিরিজ়ের দুটি পর্ব ‘হাঙ্গামা হ্যায় কিউ বরপা’ ও ‘স্পটলাইট’-এর চিত্রনাট্য লিখেছেন নীরেন ভট্ট। নীরেন মুম্বইয়ের প্রতিষ্ঠিত চিত্রনাট্যকার। ‘রং সাইড রাজু’, ‘বালা’, ‘লাভযাত্রী’র মতো ছবির চিত্রনাট্য লিখেছেন তিনি। ‘তারক মেহতা কা উল্টা চশমা’র মতো বিপুল জনপ্রিয় ধারাবাহিকও বেড়িয়েছে তাঁর কলম থেকে।

আরও পড়ুন: গার্হস্থ্য হিংসার শিকার, তবুও ঔজ্জ্বল্যে অম্লান

বহু দর্শকের দাবি, ‘হাঙ্গামা হ্যায় কিউ বারপা’য় সত্যজিতের মূল রচনার স্বাদ থাকলেও, ‘স্পটলাইট’-এ তা একেবারেই অনুপস্থিত। এ প্রসঙ্গে গতকাল এক ভার্চুয়াল আলোচনাসভায় তাঁকে প্রশ্ন করা হলে নীরেন জানান, “ছোটগল্পটির নির্যাস নিয়ে এক ঘন্টার উপযোগী একটি কাহিনী রচনা করার স্বাধীনতা আমাকে দেওয়া হয়েছিল।” এরপর যখন তিনি মূল কাহিনীর সারসংক্ষেপ শোনান, তা থেকেই বোঝা যায় যে চিত্রনাট্য লেখার আগে সত্যজিতের ‘স্পটলাইট’ গল্পটি সম্ভবত তিনি পড়েননি।




মূল সত্যজিৎ থেকে ‘রে’ অনেকটাই আলাদা বলে সোশ্যাল মিডিয়ায় ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন দর্শকদের একাংশ। “সত্যজিৎ বড়দের জন্য ছবি বানাতেন। যদিও কিছু ছবি তিনি ছোটদের জন্য বানিয়েছেন। তবে তাঁর লেখা সবকটি কাহিনীই শিশুতোষ এবং আট-দশ পাতার মধ্যে শেষ হয়ে যায়। সেই কাহিনীকে একইরকম রেখে ছবি তৈরি করতে হলে পর্বগুলি দশ মিনিটের বেশি হতো না। বিনির্মাণের স্বাধীনতা পেলে এটুকু করাই যায়, যা দিবাকর বন্দ্যোপাধ্যায় ‘পটলবাবু ফিল্মস্টার’ নিয়ে ‘বম্বে টকিজ়’-এ করেছিলেন,” বললেন নীরেন।  

আরও পড়ুন: বেহিসেবী জীবনযাপন, আজ স্মৃতির অতলে সৌমিত্র

‘স্পটলাইট’-এর শেষ অংশে দেখানো হয় দিদির (রাধিকা মদন) আগে বিক্রম বা ভিক (হর্ষবর্ধন কাপুর) এগিয়ে চলেছে। ভিকের ঠোঁট নড়লেও গলা শোনা যাচ্ছে দিদির। এই অংশের ব্যাখ্যা একমাত্র ভেন্ট্রিলোক্যুইজম দিয়েই করা সম্ভব, যা সত্যজিতের ‘ভূতো’ গল্পে রয়েছে। তবে ইচ্ছাকৃতভাবে ‘ভূতো’র রেফারেন্স ‘স্পটলাইট’-এ আনেননি বলেই দাবি করেছেন নীরেন। “দিদির অলৌকিক কার্যকলাপ প্রমাণ করার জন্য ঘটনাক্রম যেভাবে বিন্যাস করেছি, তা কাকতালীয়ভাবে ‘ভূতো’র সঙ্গে মিলে গেছে,” বললেন নীরেন।

তবে ‘রে’র অন্তর্গত ‘ফরগেট মি নট’ ও ‘বেহরূপীয়া’ তিনি এখনও পর্যন্ত দেখেননি বলে জানিয়েছেন নীরেন।



Like
Like Love Haha Wow Sad Angry

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *