ডেডিকেশন কী তা ওদের থেকে শেখা উচিত: মনামী

RBN Web Desk: বিশ্বনাথ আর আরতির চার ছেলেমেয়ে। চারজনেই যে যার জীবনে ব্যস্ত। হঠাৎ বাবার জরুরী তলব পেয়ে সকলে পুজোয় বাড়ি আসে। পুজো শেষে বিজয়ার মিটিংয়ে বিশ্বনাথ ঘোষণা করেন তাঁর চার ছেলেমেয়ের মাকে তিনি ডিভোর্স দিতে চান। শুনেই ক্ষোভে, বিস্ময়ে ফেটে পড়ে ছেলেমেয়েরা। সকলেই বাবার বিরুদ্ধে নিজেদের অভিযোগের ঝুলি উপুড় করে দেয়। প্রতিবাদ করেন না শুধু আরতি নিজে। বাড়িভর্তি লোকের নানা কৌতূহল, বিস্ময়, অভিযোগের মাঝেও তিনি অদ্ভুতভাবে নিস্পৃহ হয়ে থাকেন। পঞ্চাশ বছরের পুরনো স্বামীর অবাধ্য হবার কথা তো তিনি ভাবতেও পারেন না।

এমনই কিছু অব্যক্ত আবেগ  ও পারিবারিক রিইউনিয়নের ককটেল নিয়ে ২০১৫ সালে মুক্তি পেয়েছিল শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় ও নন্দিতা রায়ের ছবি ‘বেলাশেষে’। বিশ্বনাথ ও আরতির ভূমিকায় ছিলেন সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় ও স্বাতীলেখা সেনগুপ্ত। গত ডিসেম্বরে চলে গেছেন সৌমিত্র। দিন তিনেক আগে চলে গেলেন স্বাতীলেখাও। এর আগে সত্যজিৎ রায়ের ‘ঘরে বাইরে’ ছবিতেও তাঁরা একসঙ্গে অভিনয় করেছিলেন। এ ছবি বাঙালির কাছে মূলত সেই স্মৃতিকে ফিরে দেখারই এক মাধ্যম হয়ে উঠেছিল।   

আরও পড়ুন: সব কান্নার শব্দ হয় না, বেজে উঠল পটদীপ

‘বেলাশেষে’র পরে একই শিল্পীদের নিয়ে অন্য কাহিনীতে আসতে চলেছে ‘বেলাশুরু’ ছবিটি। তার আগেই গল্পের মূল দুই চরিত্রের প্রয়াণকে কেন্দ্র করে সহশিল্পীরা প্রত্যেকেই বিমর্ষ। দুটি ছবিতেই গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে অভিনয় করেছেন অভিনেত্রী মনামী ঘোষ। স্বাতীলেখা সম্পর্কে স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে মনামি রেডিওবাংলানেট-কে জানালেন, “এক একজন মানুষ থাকেন যাঁরা খুব মায়ায় মোড়া হন। স্বাতীলেখাদি ছিলেন তেমনই একজন মানুষ। সারাক্ষণ ওঁর কথাবার্তায় সেই মায়া লেগে থাকতো। উনি আমাদের মায়ের মতো করেই দেখতেন।”




শুটিং চলাকালীন কোনও বিশেষ ঘটনার কথা কি মনে আছে তাঁর? “তেমন কিছু এই মুহূর্তে মনে না পড়লেও, একটা কথা বলতেই হবে যে স্বাতীলেখাদির ডেডিকেশনের কোনও তুলনা হয় না। শুটিংয়ের সময় ওঁর শরীর বেশ খারাপ যাচ্ছিল। অথচ উনি সেটা কাউকেইবুঝতে দিতেন না। আমরা যারা এখন অভিনয় করি, একটু কিছু হলে বা কোনওভাবে আঘাত পেলে তাদের অনেক ট্যানট্রাম থাকে। অথচ বয়স্ক অভিনেতাদের অনেককেই দেখেছি বাকি সবকিছুর থেকে কাজের প্রতি দায়বদ্ধতা তাঁদের অনেক বেশি। স্বাতীলেখাদি কাজের সময় শারীরিক অসুস্থতাকে গুরুত্ব দিতেন না। বোঝাও যেত না উনি অসুস্থ বলে। এই ডেডিকেশন সত্যিই শেখার জিনিস” বললেন মনামী। 

আরও পড়ুন: শেষ যাত্রায় ব্রাত্য, পথ হেঁটেছিলেন মাত্র কয়েকজন

আর কিছুদিন পরে ‘বেলাশুরু’ মুক্তি পাবে। কতটা মিস করবেন মনামি তাঁর অন-স্ক্রিন পরিবারের দুই অন্যতম মুখ্য চরিত্রকে?

“মাত্র কয়েকমাসের মধ্যে দুজনেই আমাদের ছেড়ে চলে গেলেন। এই ধরণের অভিনেতাদের সঙ্গে কাজ করার সবথেকে ভালো দিক হলো অনেক কিছু শেখা যায়। আমিও প্রচুর শিখেছি এঁদের দেখে। যখন ভালো শট দিতাম, স্বাতীলেখাদি কাছে ডেকে প্রশংসা করতেন, আদর করে দিতেন। এগুলোই আমার কাছে প্রাপ্তি। এগুলো চিরকাল মনে থেকে যাবে,” বললেন মনামী। 



Like
Like Love Haha Wow Sad Angry

Swati

Editor of a popular Bengali web-magazine. Writer, travel freak, nature addict, music lover, foody, crazy about hill stations and a dancer by passion. Burns the midnight oil to pen her prose. Also a poetry enthusiast.

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *