চার দশক পেরিয়ে বৃদ্ধ হলেন সেন দম্পতি, প্রকাশ্যে লুক
RBN Web Desk: সত্যজিৎ রায়ের পর মৃণাল সেন। ‘আকালের সন্ধানে’ পরিচালকের এ বছর জন্মশতবর্ষ উদযাপন শুরু। প্রয়াত পরিচালককে শ্রদ্ধা জানাতে তাঁরই পরিচালিত ১৯৮২ সালের ছবি ‘খারিজ’ ফের বড়পর্দায় নিয়ে আসছেন কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়। এবারে ছবির নাম ‘পালান’। আজ প্রকাশিত হলো সেই ছবির লুক।
আজ থেকে ঠিক চার দশক আগে রমাপদ চৌধুরীর কাহিনী অবলম্বনে মুক্তি পেয়েছিল ‘খারিজ’। উত্তর কলকাতার এক ছোট্ট, সাধারণ মধ্যবিত্ত পরিবারে বাবার হাত ধরে গ্রাম থেকে কাজ করতে আসে পালান নামে এক কিশোর। এক রাতে তার অস্বাভাবিক মৃত্যু ঘটে। এই ছিল ‘খারিজ’-এর মূল গল্প।
আরও পড়ুন: নেপথ্যে গাইলেন জলি, স্টেজে দাঁড়িয়ে ঠোঁট মেলালেন রাহুল দেব বর্মণ
অঞ্জন দত্ত, মমতা শঙ্কর, শ্রীলা মজুমদার, দেবপ্রতিম দাশগুপ্ত অভিনীত ছবিটি ১৯৮৩ সালের কান চলচ্চিত্র উৎসবে বিশেষ জুরি পুরস্কার পায়। দুটি জাতীয় পুরস্কারও পেয়েছিল ‘খারিজ’। ৪০ বছর পর সেই ছবিই বর্তমান প্রেক্ষাপটে নিয়ে আসছেন কৌশিক। থাকবে সেই একই পরিবার, একই নাম, একই পরিচয়। তবে বদলে যাবে গল্প। অঞ্জন, মমতা শঙ্কর, শ্রীলা ও দেবপ্রতিম থাকছেন এই ছবিতে। এছাড়াও থাকছেন যিশু সেনগুপ্ত ও পাওলি দাম।
১৯৮২ থেকে ২০২২ সময়টা নেহাত কম নয়। ‘খারিজ’-এর অঞ্জন সেন (অঞ্জন), মমতা সেন (মমতা শঙ্কর) ও সৃজার (শ্রীলা) চেহারা বদলেছে, পাক ধরেছে চুলে। চার দশক বছর পর ‘পালান’-এ সেই অঞ্জন-মমতার পুত্র পুপাই (যিশু) হয়েছে মস্ত বড়।
শ্রীলা
শুধু যে চরিত্রদের বয়স বেড়েছে তা নয়। অনেকটা বয়স বেড়েছে সময়েরও। সেই সময় মধ্যবিত্ত পরিবারে শীতের রাত্রে গা গরম রাখার জন্য জ্বলন্ত কয়লার আঁচ বদলে গেছে ইলেকট্রিক হিটারে। উত্তর কলকাতার মধ্যবিত্ত মানসিকতার অপরাধবোধ, বিবেক দংশন ঘষে মেজে এখন ক্ষতিপূরণে উন্নীত হয়েছে।
আরও পড়ুন: নব্বইয়ের ‘সত্যান্বেষী’, বাদ পড়লেন ব্যোমকেশ
‘খারিজ’-এর স্মৃতি রোমন্থন করতে গিয়ে অঞ্জন বলেছিলেন, মৃণাল সেনের পাঞ্জাবি পরেই তাঁর লুক সেট হয়েছিল। পাশ্চাত্য সংস্কৃতি চর্চা করতে অভ্যস্ত অঞ্জন দত্ত থেকে নিজে হাতে উত্তর কলকাতার মধ্যবিত্ত পরিবারের ভেতো বাঙালি অঞ্জন সেনকে গড়ে তুলেছিলেন মৃণাল।
১৯৭৬ সালে মৃণাল সেন পরিচালিত ‘মৃগয়া’ ছবি দিয়ে চলচ্চিত্র জগতে পা রাখেন মমতা শঙ্কর। “মৃণালদা না থাকলে, আজ আমি এখানে থাকতাম না। আজও ক্যামেরার সামনে দাঁড়ালে মনে হয় যেন ‘মৃগয়া’র জন্য শট দিচ্ছি,” বললেন মমতা শঙ্কর।
যিশু ও পাওলি
‘কালবেলা’য় পাওলি দামের অভিনয় দেখে নিজে ফোন করে প্রশংসা করেছিলেন মৃণাল। পরবর্তীতে যদি কোনদিন ছবি পরিচালনা করেন তবে পাওলিকে নেওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন পরিচালক। তাঁর সেই অপূর্ণ ইচ্ছাই যেন এবার কৌশিকের হাত ধরে পূর্ণ হতে চলেছে।
সাংস্কৃতিক পরিবেশে বড় হয়ে ওঠা কৌশিকের দৃষ্টিভঙ্গি পাল্টে দিয়েছিলেন মৃণাল। একবিংশ শতাব্দীতে কৌশিকের ‘পালান’ মৃণালের সেই মধ্যবিত্ত মানসিকতা কতটা ছুঁয়ে যায় এখন সেটাই দেখার।
আগামী বছর, মৃণাল সেনের জন্মশতবর্ষে মুক্তি পাবে ‘পালান’।