ফাটিয়ে দিয়েছিস, বলেছিলেন সৌমিত্রজ্যেঠু: যীশু

RBN Web Desk: সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় চেয়েছিলেন তাঁর চরিত্রে অভিনয় করুন যীশু সেনগুপ্ত। তাঁর আগামী ছবি ‘অভিযান’ সম্পর্কে বলতে গিয়ে জানালেন অভিনেতা যীশু। সদ্য প্রয়াত অভিনেতার জীবনের নানা ঘটনা অবলম্বনে পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়ের ছবিতে তরুণ বয়সের সৌমিত্রর চরিত্রে অভিনয় করেছেন যীশু। অন্যান্য ভূমিকায় রয়েছেন পাওলি দাম, বাসবদত্তা চট্টোপাধ্যায়, সোহিনী সরকার, রুদ্রনীল ঘোষ, সোহিনী সেনগুপ্ত, পদ্মনাভ দাশগুপ্ত। পরমব্রত, ও সৌমিত্র নিজেও রয়েছেন এই ছবিতে।

“এই ছবিটা আমার কাছে খুব অদ্ভুতভাবে আসে,” সৌমিত্রর চরিত্রে অভিনয় প্রসঙ্গে রেডিওবাংলানেট-কে জানালেন যীশু। “শুরুতে আমার অন্য একটা চরিত্রে অভিনয় করার কথা ছিল। জানুয়ারিতে একদিন সৌমিত্রজ্যেঠু ফোন করলেন, ‘পরমের সঙ্গে তোর কথা হয়েছে? তোকে কিন্তু ওই চরিত্রটা করতে হবে।’ আমি বললাম ‘হ্যাঁ কথা হয়ে গেছে, ওটা আমি করছি।’ এর কিছুক্ষণ পরেই পরম আমাকে ফোন করে জিজ্ঞাসা করে আমার সঙ্গে সৌমিত্রজ্যেঠুর কথা হয়েছে কিনা। যা কথা হয়েছে বললাম। তখন ও বলল, ‘তোর হাতে আধঘন্টা সময় হবে? আসলে সৌমিত্রজ্যেঠু চান ওঁর চরিত্রটা তুই করিস।’ আমি তো শুনে অবাক, বলেছিলাম, ‘তোর কি মাথা খারাপ হয়েছে?’ এই ফোনটা আমার জীবনে একটা বিরাট পাওনা।”

আরও পড়ুন: ঠকিয়েছিলেন সলমন, বিস্ফোরক মন্তব্য প্রাক্তন প্রেমিকার

বাংলার অন্যতম সেরা অভিনেতার ভূমিকায় রূপদানের জন্য সেই অর্থে কোনও প্রস্তুতি নেননি বলে জানালেন যীশু। “শুটিং শুরুর আগে জ্যেঠুর কয়েকটা ইন্টারভিউ দেখেছিলাম। তাঁর সিনেমা তো ছোটবেলা থেকেই দেখেছি। বহু ছবিতে একসঙ্গে অভিনয়ও করেছি। সেই দেখা থেকেই বিভিন্ন বিষয়ে ওঁর চিন্তাভাবনা, আগ্রহ এগুলো থেকে আমার মতো করে জ্যেঠুকে বুঝে আমি চরিত্রটা করেছি। কোথাও ওঁকে অনুকরণ করিনি বা করতে চাইনি। আমি ওঁর মতো দেখতে নই। হয়ত শারীরিক উচ্চতার দিক থেকে আমাদের কিছুটা মেলে। এছাড়া ওঁর মতো করে হাঁটাচলা বা কথা বলা আমি নকল করতে চাইনি, কারণ সেটা পারবও না। আমার তেইশ বছরের অভিনয় জীবনে আমি যেভাবে ওঁকে দেখেছি, সেভাবেই ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করেছি।”

এর আগে ‘মহালয়া’ ছবিতে যীশুকে উত্তমকুমারের চরিত্রে অভিনয় করতে দেখা গেছে। এই ছবিতে তিনি সৌমিত্র এবং একইসঙ্গে কখনও ফেলু, কখনও অপু আবার কখনও ময়ূরবাহন হয়ে উঠেছেন। এতগুলো চরিত্রের শরীরী ভাষা পর্দায় ফুটিয়ে তোলা কঠিন ব্যাপার। এই নিয়ে আশঙ্কায় ছিলেন যীশুও।




“কোনও ছবির জন্যেই সেভাবে হোমওয়ার্ক করি না আমি,” শুটিংয়ের দিনগুলোর স্মৃতিচারণ করে বললেন যীশু। “আমার সবটাই হয় সেটে গিয়ে। সেখানে গিয়ে চিত্রনাট্য পড়ে আমি নিজের চিন্তাভাবনা দিয়ে ঠিক করি কাজটা কীভাবে করব। তবে ‘অভিযান’-এ সেগুলো করার সুযোগ ছিল না কারণ এখানে তো আমি সৌমিত্রজ্যেঠুর চরিত্র করছি। তবে যেহেতু আমি আর উনি একই চরিত্র, তাই আমাদের একসঙ্গে কোন দৃশ্য ছিল না।”

শুটিং চলাকালীন তিনি ইচ্ছে করেই সৌমিত্রর সামনে আসতেন না বলে জানালেন যীশু। “আমি পালিয়ে বেড়াতাম। একদিন দেখা হলো, জ্যেঠু ডেকে বললেন ‘আয় বোস এখানে।’ আমি বললাম ‘তোমার সামনে আসতেই আমার ভয় করছে।’ উনি পরমের থেকে শুনেছিলেন আমার কাজের কথা, কিছু অংশ দেখেওছিলেন। বললেন, ‘ভয় কেন করবে রে, তুই যা করেছিস ফাটিয়ে দিয়েছিস!’ আমি নিশ্চিন্ত হলাম, আসল লোকটাই যখন বলে দিয়েছে, তখন আর ভয় নেই। এটা আমার কাছে সবথেকে পুরস্কার হয়ে থাকবে।”

মে মাসের শেষে মুক্তি পেতে চলেছে ‘অভিযান’। 

ছবি: গার্গী মজুমদার



Like
Like Love Haha Wow Sad Angry

Swati

Editor of a popular Bengali web-magazine. Writer, travel freak, nature addict, music lover, foody, crazy about hill stations and a dancer by passion. Burns the midnight oil to pen her prose. Also a poetry enthusiast.

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *