দেশের প্রথম সিনেমা নির্মাতার বায়োপিক, মুক্তি পেল ট্রেলার

কলকাতা: এ দেশে সিনেমাশিল্পের যাঁরা সূচনা করেছিলেন, তাঁদের মধ্যে হীরালাল সেন অন্যতম। দাদাসাহেব ফালকে-কে ভারতীয় চলচ্চিত্রের জনক বলা হলেও, তাঁরও আগে প্রথম চলমান ছবি নির্মাণ করেছিলেন হীরালাল। বাংলা তথা ভারতের প্রথম সিনে-বিজ্ঞাপন ও তথ্যচিত্র নির্মাণের কৃতিত্বও ছিল তাঁর ঝুলিতে। দুঃখের বিষয়, এই মানুষটিকে বেশিদিন কেউ মনে রাখেনি।

বিস্মৃতির অতলে তলিয়ে যাওয়া সেই হীরালালকে চলচ্চিত্রপ্রেমীদের সামনে হাজির করতে চলেছেন অরুণ রায়। গতকাল শহরে মুক্তি পেল তাঁর পরিচালিত ‘হীরালাল’-এর ট্রেলার। উপস্থিত ছিলেন ছবির সঙ্গে যুক্ত শিল্পী ও কলাকুশলীরা।

‘হীরালাল’-এর নামভূমিকায় অভিনয় করেছেন কিঞ্জল নন্দ। এছাড়া গিরীশচন্দ্র ঘোষ, জামশেদজি ম্যাডান, কুসুমকুমারী দেবী, অমরেন্দ্রনাথ দত্তর চরিত্রে রয়েছেন খরাজ মুখোপাধ্যায়, শাশ্বত চট্টোপাধ্যায়, তন্নিষ্ঠা বিশ্বাস ও অর্ণ মুখোপাধ্যায়।

আরও পড়ুন: দুই বাংলার আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস স্মরণ

পরিচালক জানালেন, “বেশিরভাগ মানুষই হীরালালের নাম পর্যন্ত শোনেননি। অথচ দাদাসাহেব ফালকে নন, হীরালালই এ দেশে প্রথম সিনেমা তৈরি করেন। এই ছবি দেখার পরে দাদাসাহেব ছাড়া চলচ্চিত্রজগতের আরও এক পথিকৃতের নাম সবাই জানবে।”

এর আগে প্রথম ভারতীয় দল হিসাবে মোহনবাগান ক্লাবের ১৯১১ সালের আইএফএ শিল্ড জয় নিয়ে ‘এগারো’ (২০১১) পরিচালনা করেছিলেন অরুণ। আর এবার ‘হীরালাল’। ঐতিহাসিক ঘটনাবলির ওপর তাঁর আগ্রহ কেন? “বাঙালির ঐতিহ্যকে ছবির পর্দায় নিয়ে আসা আমার কাছে  বিশেষ আগ্রহের বিষয়। বাঙালি তো আজকাল তার ঐতিহ্য ভুলতেই বসেছে। ছবির মাধ্যমে যদি তার কিছুটাও পুনরুদ্ধার করা যায়, সেই চেষ্টাই করছি।”




কিঞ্জল জানালেন, “হীরালাল সেনের ব্যাপারে আমি কিছুই জানতাম না। প্রথম যখন এই ছবিতে অভিনয়ের প্রস্তাব আসে, আমি ভেবেছিলেন নাসিরউদ্দিন শাহের ‘হিরো হীরালাল’-এর কথা চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে। তারপর গল্পটা জানতে পেরে ও মূল ইতিহাস পড়ে চরিত্রটা খুব ভালো লেগে গেল।”

এই ছবির চিত্রগ্রহণ করেছেন গোপী ভগৎ। তৎকালীন সময়ের অভিনয় ও ক্যামেরার বিভিন্ন কাজের ব্যাপারে অরুণ ও গোপীর থেকে নানা গুরুত্বপূর্ণ মতামত তাঁর কাজটাকে আরও সহজ করে দিয়েছিল বলে জানালেন কিঞ্জল। “তবে শুটিংয়ে শুরুর দিকে একটু ভয় যে করছিল না, তা নয়। এমন তাবড় সব অভিনেতাদের সঙ্গে কাজ করার আগে বুকটা একটু ঢিপঢিপ করছিল। প্রথমদিন শাশ্বতদার সঙ্গে শট ছিল। উনি নিজেই এগিয়ে এসে গল্পের ছলে ব্যাপারগুলো অনেক সহজ করে দিয়েছিলেন। তারপর আর বিশেষ অসুবিধে হয়নি,” জানালেন কিঞ্জল।


‘হীরালাল’ চলচ্চিত্র জগতের এক মাইলস্টোন হতে চলেছে, দাবি করলেন শাশ্বত। “এই ছবি নির্মাণের জন্য বিংশ শতাব্দীর প্রথম ভাগের কলকাতার পুনর্নির্মাণের প্রয়োজন হয়ে পড়েছিল। ছবির পশ্চাৎপট দৃষ্টিনন্দন ও বিশ্বাসযোগ্য করার জন্য বহুল পরিমাণে ভিএফএক্সের ব্যবহার করা হয়েছে,” জানালেন তিনি।

‘হীরালাল’-এর ভিএফএক্সের কাজ করেছেন ইন্দ্রনীল রায়। আবহসঙ্গীতের দায়িত্বে রয়েছেন ময়ূখ-মৈনাক। ছবিটি সম্পাদনা করেছেন সুজয় দত্ত রায়।

৫ মার্চ মুক্তি পেতে চলেছে ‘হীরালাল’। 

 

Amazon Obhijaan



Like
Like Love Haha Wow Sad Angry

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *