চলো নিয়ম মতে, ডিরেক্টরস অ্যাসোসিয়েশনের ১৪ দফা প্রস্তাব
RBN Web Desk: প্রায় দেড়মাসের বেশি সময় ধরে বন্ধ সমস্ত ছবি ও ধারাবাহিকের শুটিং। ১৭ মার্চ ডিরেক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অফ ইস্টার্ন ইন্ডিয়ার পক্ষ থেকে জানানো হয় যে ৩১ মার্চ অবধি শুটিং বন্ধ রাখা হবে। তারপর গোটা দেশে লকডাউন ঘোষিত হওয়ার পর সেই মেয়াদ স্বাভাবিকভাবেই বেড়েছে।
প্রশ্ন উঠছে, এরপর কী? লকডাউন উঠে যাওয়ার পর অবস্থা কি আবার আগের মতোই স্বাভাবিক হবে? নাকি নতুন কোনও পরিবর্তন আনতে চলেছে কর্তৃপক্ষ? সেই উদ্দেশ্যে একটি ১৪ দফা প্রস্তাব নিয়ে চিন্তাভাবনা করছে অ্যাসোসিয়েশন। কী থাকছে এই প্রস্তাবিত নিয়মাবলীতে?
১. শুটিং ফ্লোরে ঢোকার আগে প্রত্যেকের থার্মাল স্ক্রিনিং বাধ্যতামূলক।
২. কোনও ব্যক্তি বাইরের পোশাক পরে ফ্লোরের ভিতর ঢুকতে পারবেন না। প্রত্যেকের জন্য সেটে পড়ার আলাদা পোশাকের ব্যবস্থা থাকবে। ফ্লোরে ঢোকার পরে এবং সেট থেকে বেরোনোর আগে নিয়ম করে বদলাতে হবে পোশাক। রোজ সেই পোশাক ধুয়ে ফেলাও আবশ্যক।
৩. কোনও শিল্পী অসুস্থ থাকলে ফিটনেস সার্টিফিকেট জমা দিয়ে তবেই ফ্লোরে ঢুকতে পারবেন।
৪. শুটিং চলাকালীন প্রত্যেক টেকনিশিয়নকে বাধ্যতামূলক ভাবে জুতো, গ্লাভস এবং মাস্ক পরে থাকতে হবে।
৫. শুটিং চত্বরে থাকবে স্যানিটাইজ়েশন টানেল।
৬. টেকনিশিয়নরা তাঁদের বাড়ি থেকে খাবার আনবেন। এই খাবারের খরচ বহন করবে প্রযোজনা সংস্থা।
৭. যে টেকনিশিয়নরা ১৪ দিনের জন্য কোয়ারেন্টাইনে ছিলেন, তাঁদের কোভিড-১৯ পরীক্ষার নেগেটিভ সার্টিফিকেট জমা করতে হবে। নচেৎ হতে পারে ছ’মাসের সাসপেনশন।
৮. যেহেতু সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখাটাই বড় কথা, সেহেতু কিছুদিনের জন্য ধারাবাহিকের শুটিংয়ের সময় বেশিরভাগ দৃশ্যে অনধিক দুই থেকে তিনজন শিল্পীকে রাখার প্রস্তাব দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। নন-ফিকশন অনুষ্ঠানের ক্ষেত্রে শুটিং চলাকালীন সঞ্চালক এবং প্রতিযোগীদের মধ্যে নূন্যতম তিন থেকে পাঁচ ফুটের ব্যবধান রাখা বাঞ্ছনীয়।
৯. শিল্পীদের সঙ্গে তাদের কোনও সহযোগী বা গাড়ির চালক, কেউই ঢুকতে পারবেন না শুটিং ফ্লোরে।
১০. এছাড়া নিয়মিত বাথরুম পরিষ্কার এবং পরিশুদ্ধ পানীয় জলের ব্যবস্থার কথাও মাথায় রাখতে হবে।
১১. প্রত্যেককে বাড়ি থেকে নিয়ে আসা ও দিয়ে আসার জন্য গাড়ির ব্যবস্থা করার কথাও ভাবা হচ্ছে। গাড়ি নিয়মিত স্যানিটাইজ়েশন করা হবে।
১২. শিল্পীদের ব্যবহার করতে হবে নিজস্ব মেকআপ সামগ্রী।
১৩. শিল্পীদের মেনে চলতে হবে নির্দিষ্ট কলটাইম। সকাল ৯টা থেকে রাত ৯টা বা সকাল ১০টা থেকে রাত ১০টা এরকম কোনও সময়সীমা চালু করা হতে পারে।
১৪. টেকনিশিয়ন, শিল্পী বা তাঁদের বাড়ির কোনও সদস্য অন্তঃসত্ত্বা থাকলে, তাঁরা কোনওভাবেই শুটিং ফ্লোরে আসতে পারবেন না।
আরও পড়ুন: যন্তর মন্তর কক্ষের নেপথ্যে
এই নিয়মের জেরে বিপদে পড়তে পারেন টালিগঞ্জের বেশ কিছু প্রযোজনা সংস্থা, পরিচালক ও কলাকুশলীরা। এই নির্দেশিকা জারি হলে, ছবি বা ধারাবাহিকের চিত্রনাট্যও লিখতে হবে নিয়ম মেনে। শিশুশিল্পীদের খুব প্রয়োজন না থাকলে শুটিংয়ে আনা যাবে না। এদিকে শুটিং মানেই জমাটি ব্যাপার, অনেক লোকের সমাগম। তাই অবস্থার পরিবর্তন ঘটলে এই নিয়ম কতটা মেনে চলা যাবে তাই নিয়ে আশঙ্কা থেকেই যাচ্ছে।
ছবি: ওড়িশা টাইমস