‘সোনার কেল্লা’কে ট্রিবিউট দিতে চলেছেন রিঙ্গো
RBN Web Desk: ১৯৭৪ সালে মুক্তি পেয়েছিল বাঙালির সর্বকালের অন্যতম প্রিয় ছবি ‘সোনার কেল্লা’। সত্যজিৎ রায়ের পরিচালনায় সেই আইকনিক ছবি ৫০ বছর পূর্ণ করেছে গত ডিসেম্বরে। সেই উপলক্ষে ‘সোনার কেল্লা’কে শ্রদ্ধার্ঘ দিতে চলেছেন পরিচালক অর্ণব রিঙ্গো বন্দ্যোপাধ্যায় (Riingo Banerjee)। তৈরি করেছেন তাঁর আগামী ওয়েব সিরিজ় ‘জয়সলমীর জমজমাট’ (Jaisalmer Jomjomat)। থর মরুভূমির পটভূমিকায় তৈরি এই অ্যাডভেঞ্চার থ্রিলার সিরিজ় ‘সোনার কেল্লা’ থেকে অনুপ্রাণিত। বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন সব্যসাচী চৌধুরী, মেঘলা দাশগুপ্ত, অভিষেক সিংহ, দেবতনু, অমৃতা দেবনাথ, দেবাশীষ নাথ, শাহির রাজ, মৌমিতা পাল, রাজদীপ পাল, সৌমিত্র বসু (ডিউক), সৌম্য মুখোপাধ্যায়, স্বর্ণাভ সাধুখা, প্রতীক রায় ও ওঙ্কার ভট্টাচার্য।
‘সোনার কেল্লা’ দেখে জয়সলমের যাবার ইচ্ছা প্রায় সব বাঙালিরই থাকে। ব্যাঙ্ক ম্যানেজার রজতবাবুরও হয়েছিল। মুকুলের বাড়ি, অর্থাৎ যেখানে ছবির শুটিং হয়েছিল, সেই কেল্লা দেখতে উদগ্রীব হয়ে ওঠেন তিনি। অগত্যা জয়সলমের যাত্রা, সঙ্গে স্ত্রী, কন্যা ও ছোট পুত্র। কিন্তু বেড়াতে গিয়ে রজতবাবুর পরিবার জড়িয়ে পড়ে মাদক ব্যবসায়ীদের ভয়ঙ্কর চক্রের ফাঁদে। একটি মাদক দ্রব্যের প্যাকেট হারানো নিয়ে ক্রমশ জটিল হয়ে ওঠে রহস্য। মরুভূমিতে বেড়াতে এসে কি তাহলে সর্বনাশ হয়ে যাবে রজতবাবুর পরিবারের? নাকি তারা কাটিয়ে উঠবেন এই সংকটকাল? সবটা জানা যাবে পাঁচ পর্বের এই সিরিজ়ে।
আরও পড়ুন: মিলিয়ন ডলারের স্বপ্ন, ‘বাড়ুজ্জ্যে ফ্যামিলি’র নতুন পর্ব
সিরিজের কাহিনি, চিত্রনাট্য, চিত্রগ্রহণ, সম্পাদনা এবং সঙ্গীত সবটাই সামলেছেন রিঙ্গো। তিনি জানালেন, “ছোটবেলা থেকে যদি কোনও একটা বই, একটা সিনেমা, একটা জায়গা বা একটা অভিযান আমাকে বিশেষভাবে প্রভাবিত করে থাকে তবে তা হলো ‘সোনার কেল্লা’। আমার একার নয়, বিশ্বের লক্ষ-লক্ষ ফেলুদা ভক্তের ক্ষেত্রেই এই ঘটনা ঘটেছে। তাই সেই ছবির পঞ্চাশ বছর পূর্তিতে সত্যজিৎ রায়ের উদ্দেশ্যে আমার ট্রিবিউট এই সিরিজ়।”
থর মরুভূমির বুকে ১৪ দিনের শুটিং এক রোমাঞ্চকর ও মনে রাখার মতো স্মৃতি হয়ে থাকবে বলে জানালেন রিঙ্গো। বিস্তীর্ণ মরুভূমির রুক্ষ প্রান্তরে, কুলধারার রহস্যজনক ধ্বংসাবশেষে, জয়সলমেরের সোনালী দুর্গে এবং ভারত-পাকিস্তান সীমান্তের সীমাবদ্ধ অংশে হয়েছে ছবির শুটিং।
“এই সমস্ত লোকেশনে গিয়ে শুট করা যে কোনও পরিচালকের পক্ষেই এক দুর্লভ অভিজ্ঞতা। আমার জীবনের এক অন্যতম রোমাঞ্চকর সঞ্চয় বলা যেতে পারে। আমরা একেবারে সেইসব জায়গায় গিয়ে শুট করেছি যেখানে সত্যজিৎ রায় তাঁর ইউনিট নিয়ে শুটিং করেছিলেন। সেই মুকুলের বাড়ি, সেই যোধপুরের মেহরানগড় দুর্গ, সেই আকাশ থেকে দেখা সোনার কেল্লার আইকনিক শট। বাংলা ছবির ইতিহাসে থাকা অন্যতম স্মরণীয় একটি ছবিকে শ্রদ্ধা জানানো সহজ কাজ হবে না সেটা জানতাম। তাই এই কাজকে সবদিক থেকে মনে রাখার মতো করে তুলতে পারিবারিক বিনোদনের রূপ দেওয়া হয়েছে। বইয়ের নানা রেফারেন্স এবং সোনালী দুর্গের রাজকীয় ঐতিহ্যের কথা মাথায় রেখেই তৈরি হয়েছে এই সিরিজ়” জানালেন পরিচালক।
আরও পড়ুন: বিপ্লবী না ডাকাত? প্রথমবার বায়োপিকে জিৎ
ছবির কালার গ্রেডিংয়ে ব্যবহার করা হয়েছে ইয়েলো লাইমস্টোনের রং, ফলে কেল্লার সৌন্দর্য আরও উজ্জ্বলভাবে পর্দায় ফুটে উঠবে বলে দাবি রিঙ্গোর। এছাড়াও সিরিজ়ে থাকছে সত্যজিতের ব্যবহৃত বিশেষ টাইপফেসের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ ফন্টের ব্যবহার, যা দর্শকের নস্টালজিয়াকে উস্কে দেবে।
এ মাসের শেষের দিকে ক্লিক ডিজিট্যাল মাধ্যমে মুক্তি পাবে ‘জয়সলমীর জমজমাট’ ওয়েব সিরিজ়।