পারিশ্রমিক বকেয়া থাকলে ছবি সেন্সর ছাড়পত্র পেত না, দাবি অরিন্দমের
RBN Web Desk: কলাকুশলী কারও পারিশ্রমিক বকেয়া থাকলে ‘দুর্গাপুর জংশন’ (Durgapur Junction) সেন্সর ছাড়পত্র পেত না, দাবি করলেন পরিচালক অরিন্দম ভট্টাচার্য। ২৫ এপ্রিল প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পেয়েছে স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায় (Swastika Mukherjee), বিক্রম চট্টোপাধ্যায় ও একাবলী খান্না (Ekavali Khanna) অভিনীত ছবিটি।
‘দুর্গাপুর জংশন’ মুক্তি পাওয়ার পর থেকেই বিতর্ক শুরু হয়েছে। অরিন্দম পরিচালিত এটি পঞ্চম ছবি। মুক্তির তিন-চারদিনের মাথায় সহ-পরিচালক মধুবন্তি মুখোপাধ্যায় ওরফে রাই সমাজ মাধ্যমে একটি পোস্ট করে অভিযোগ জানান, প্রযোজক অরিন্দম এখনও তাঁকে প্রাপ্য পারিশ্রমিক দেননি। এছাড়াও তাঁর অভিযোগ, ছবির বেশিরভাগ অংশ পরিচালনা করেছেন তিনি ও চিত্রগ্রাহক প্রসেনজিৎ চৌধুরী। পরিচালক নাকি কিছুই করেননি। এমনকী ছবির চিত্রনাট্য থেকে শট ডিভিশন, সবটাই করেছেন মধুবন্তি এবং তার টিম। উল্লেখ্য, মধুবন্তি প্রবীণ অভিনেতা সুমন্ত মুখোপাধ্যায়ের কন্যা। এই অভিযোগে মধুবন্তির পাশে দাঁড়িয়েছেন তাঁর খুড়তুতো দিদি স্বস্তিকা।
আরও পড়ুন: একেনের সঙ্গে বেনারসে ন’টি রূপে শাশ্বত
তবে এই সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করছেন অরিন্দম। আজ সংবাদ মাধ্যমকে দেওয়া এক বিজ্ঞপ্তিতে তিনি জানান, “কোনও ইউনিট সদস্যের পারিশ্রমিক বাকি থাকলে ছবি সেন্সরে যেতে পারে না। এক্ষেত্রে ‘দুর্গাপুর জংশন’ সেন্সর সার্টিফিকেট নিয়ে মুক্তি পেয়েছে। তাই এখন কেউ আমার দিকে অভিযোগ ছুঁড়ে দিলে তাঁকে প্রমাণ করতে হবে তিনি পারিশ্রমিক পাননি। তাছাড়া এই ধরনের অভিযোগ জানাবার জন্য পরিচালক গিল্ড রয়েছে। সমাজ মাধ্যম এই বিষয়ে কথা বলার জায়গা নয়। আমি এই নিয়ে পাঁচটি ছবি পরিচালনা করেছি। এই ছবিগুলোর প্রযোজনায় বরাবরই আমার নিজের সংস্থা ড্রিমলাইনার এন্টারটেইনমেন্ট ছিল। কখনও কারও পারিশ্রমিক বাকি পড়েছে বলে শোনা যায়নি।”
তবে এরপরেও তিনি অভিযোগকারীর সঙ্গে আলোচনায় বসতে ইচ্ছুক বলে জানিয়েছেন অরিন্দম।
ট্রেলার মুক্তির দিন (বাঁদিক থেকে) অরিন্দম, প্রসেনজিৎ, স্বস্তিকা, একাবলী ও বিক্রম
ট্রেলার মুক্তির দিন স্বস্তিকা সংবাদ মাধ্যম জানিয়েছিলেন, ছবির ক্লাইম্যাক্সের শেষ কুড়ি-পঁচিশ মিনিট তিনি বিক্রম, প্রসেনজিৎ এবং মধুবন্তি মিলে শুট করেছেন কারণ সেই সময় অরিন্দম “অসুস্থ” ছিলেন। অরিন্দম, বিক্রম ও প্রসেনজিতের উপিস্থিতিতেই এ কথা বলেন স্বস্তিকা। ট্রেলার মুক্তির দিন পরিচালকের সঙ্গে নায়িকার কোনও সমস্যা রয়েছে বলে জানা যায়নি। গতকাল এক পোস্টে স্বস্তিকা জানিয়েছেন, ‘দুর্গাপুর জংশন’ ছবির ফলাফল ভালো বা খারাপ যাই হোক না কেন, তার জন্য দায়ী তিনি, বিক্রম, প্রসেনজিৎ এবং মধুবন্তি। ক্লাইম্যাক্স অংশের চিত্রনাট্য, সংলাপ, শট ডিভিশন সবটাই তাঁরা নিজেরা করেছেন। পরিচালক কোনওভাবেই দায়ী নন কারণ তিনি শুটিংয়ের সময় ঘুমোচ্ছিলেন। এমনকি বাকি ছবির অংশও পরিচালনা করেছেন ওই দুই টেকনিশিয়ন। এক্ষেত্রেও পরিচালকের নাম করা যাবে না। স্বস্তিকার দাবি, তিনি বলা সত্বেও নাকি ছবির মেকআপ আর্টিস্ট অভিরূপ গঙ্গোপাধ্যায়কে প্রিমিয়রে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। সম্ভবত সেই কারণে স্বস্তিকা নিজেও ছবির প্রিমিয়রে অনুপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: একেনের সঙ্গে বেনারসে ন’টি রূপে শাশ্বত
তিনদিন আগের একটি পোস্টে স্বস্তিকা জানিয়েছিলেন, এরপর থেকে তিনি আর কোনও ছবির প্রিমিয়রে যাবেন না। আন্দাজ করা যায় ‘দুর্গাপুর জংশন’ নিয়ে তিক্ততার কারণেই স্বস্তিকা ওই পোস্ট করেছিলেন।
অরিন্দমের আগের ছবি ‘শিবপুর’ নিয়েও নানা বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছিল। প্রযোজকদের সঙ্গে নানা সমস্যার সৃষ্টি হয়। অবশেষে দু’পক্ষের মধ্যস্থতায় ছবি মুক্তি পায়। তবে সেই সময় প্রযোজকদের পছন্দের সঙ্গে পরিচালকের পছন্দ, সঙ্গীত পরিচালক নির্বাচন করা নিয়ে নানা সমস্যার সৃষ্টি হয়েছিল বলে জানা যায়।
ছবি: স্বাতী চট্টোপধ্যায়