আদ্যোপান্ত ভয় পাওয়ানোর গল্প বলতে আসছে ‘ভূত চতুর্দশী’
কলকাতা: ভূত নিয়ে মানুষের কৌতূহল চিরকালীন। যারা বিশ্বাস করে তারা তো বটেই, যারা বিশ্বাস করে না তারাও ভূতের গল্প পড়তে বা শুনতে ছাড়ে না। অনেকেই দাবী করেন বিদেহী আত্মা বা প্রেতাত্মার সঙ্গে তাদের দেখা হয়েছে। আবার কেউ কেউ নিজে থেকেই তাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে চান। যদিও দেখা করতে চাইলেই যে তাঁরা দেখা দেবেন তেমন নয়।
তবে এই ২০১৯-এ দাঁড়িয়ে ভূতের দেখা পাওয়াও ক্রমশ কঠিন হয়ে যাচ্ছে। শহরে লোডশেডিং আর হয় না বললেই চলে। সন্ধ্যের অন্ধকারে একা একা ঘরে বসে ভূতের ভয় পাওয়ার দিন আর নেই। কিন্তু তার মানেই কি প্রেতাত্মারা নেই ? ঘরভর্তি লোকের মাঝেও কি আমরা জানি কতজন আসলে সত্যি মানুষ আর কতজন মানুষের বেশে অন্য কিছু?
এই বিশ্বাস অবিশ্বাসের মাঝখানে দাঁড়িয়ে একটা আদ্যোপান্ত ভয় পাওয়ানোর গল্প বলতে আসছে পরিচালক শাব্বির মালিকের প্রথম ছবি ‘ভূত চতুর্দশী’। বাংলা ছবিতে ভয় পাওয়ার মত ভূতের গল্প নিয়ে কাজ হওয়া প্রায় বন্ধই হয়ে গেছে। সেটাকে মাথায় রেখেই মৈনাক ভৌমিক লিখেছেন এই ছবির গল্প।
খেল দিখা সকোগে না?
চারজন অল্পবয়সী ছেলেমেয়ে বোলপুরের কাছেই এক রাজবাড়িতে যায় একটি তথ্যচিত্র বানানোর উদ্দেশ্যে। চার বন্ধুর সেই মজাদার রোড ট্রিপ দিয়েই গল্পের শুরু। কিন্তু বোলপুরের সেই বাড়িতে, ভেঙে পড়া খিলানের মাঝে এক অতিপ্রাকৃত শক্তির মুখোমুখি হয় তারা। অদ্ভুত সব ঘটনা ঘটতে থাকে তাদের ঘিরে। জানা যায়, কাছের গ্রামের একটি অভাগী, ছোট মেয়ে লক্ষ্মীর গল্পও জড়িয়ে রয়েছে এইসবের পিছনে। তারপর কি হয়, তাই নিয়েই এই ছবি।
‘ভূত চতুর্দশী’র মুখ্য ভূমিকায় অভিনয় করেছেন আরিয়ান ভৌমিক, এনা সাহা, দীপশ্বেতা মিত্র, সৌমেন্দ্র ভট্টাচার্য ও প্রদীপ মুখোপাধ্যায়। ছবিতে সঙ্গীতের দায়িত্বে আছেন ইন্দ্রদীপ দাশগুপ্ত।
যে জন থাকে মাঝখানে
আজ এই ছবি সংক্রান্ত এক সাংবাদিক সম্মেলনে মৈনাক জানালেন, “ভূতের ছবি তো অনেকরকম হয়। মজার ভূত বা ছোটদের ভূত। এটা কিন্তু সত্যিকারের ভূতের ছবি যেটা দেখে ভয় পেতে হবে।”
ছবির শ্যুটিং করতে গিয়ে নানারকম ভৌতিক অভিজ্ঞতাও হয়েছে বলে দাবী করলেন ছবির কলাকুশলীরা। এনা সাহা জানালেন, “ভূতে আমি যথেষ্ট বিশ্বাস করি। একদিন আরিয়ানের সঙ্গে দূর থেকে একটা শট দিতে গিয়ে ঘাড়ের কাছে কারোর একটা নিঃশ্বাস পড়ে আমার, কিন্তু সেখানে কেউ ছিল না তখন।”
বোলপুরের অদূরেই রাইপুর রাজবাড়িতে ক্যানবন্দী করা হয় এই ছবি। আরিয়ান বললেন, “লোকেশনটাই এমন ভূতুড়ে ছিল যে আলাদা করে আর ভূত দেখার দরকার পড়েনি।”
তিন মূর্তি ও পায়ের তলায় সরষে
শাব্বির জানালেন, “‘ভূত চতুর্দশী’ একটা অ্যাডভেঞ্চার হরর থ্রিলার ছবি। আমি চেয়েছিলাম বাঙালি দর্শক নতুন করে ভূতের ছবি দেখুক। দারুণ গল্প লিখেছে মৈনাকদা। তবে এই ছবিটা দেখতে বসে দর্শক ভূত ছাড়াও আরও নানারকম চিন্তার খোরাক পাবে।”
প্রধান চরিত্রে অল্পবয়সী শিল্পীদের নিয়ে কাজ করা প্রসঙ্গে শাব্বির জানালেন, “ছবির গল্পটা ওই বয়সের কয়েকজন ছেলেমেয়েকে নিয়েই। তাছাড়া আমি নিজেও নতুন। তাই নতুনদের নিয়ে কাজ করার আগ্রহ আমার ছিলই।”
তবে শুধুমাত্র ভূত বা থ্রিলারে আটকে না থেকে আগামী দিনে নানা ধরণের গল্প নিয়ে কাজ করতে চান বলে জানালেন শাব্বির।
১৭ মে মুক্তি পাচ্ছে ‘ভূত চতুর্দশী’।
ছবি: প্রতিবেদক