জমজমাট অনুষ্ঠান উস্কে দিল বেতার নস্টালজিয়া
কলকাতা: রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রথম বেতারের অফিসে আসা থেকে পঙ্কজ কুমার মল্লিকের সঙ্গীত জগতে পদার্পণ, জ্ঞানেন্দ্রকুমার গোস্বামী থেকে সুকুমার রায়, আকাশবাণীর নামকরণ থেকে ইতিহাস সৃষ্টিকারী ‘মহিষাসুরমর্দিনী’র প্রস্তাবনা, গল্পকথায় উঠে এল কতকিছু। সম্প্রতি এক কুষ্ঠরোগ হাসপাতালের সহায়তা প্রকল্পের জন্য এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিল শহরের এক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন।
‘বেতারের গল্প ও বেতালের নাটক’ শীর্ষক এই অনুষ্ঠান এক লহমায় ফিরিয়ে নিয়ে গেল বেশ কয়েক দশক। দুটি পর্বে ভাগ করা হয়েছিল এই অনুষ্ঠান। প্রথম পর্ব ‘বেতারের গল্প’, এবং দ্বিতীয় পর্বে ‘বেতালের নাটক’। শুরুতেই বেজে উঠল আকাশবাণীর সিগনেচার টিউন, নাটক বা ছবিতে ভোরবেলার দৃশ্য বোঝাতে আজও যা ব্যবহার করা হয়ে থাকে। বেতারের প্রথমদিকের গল্প শোনালেন জগন্নাথ বসু, প্রণতি ঠাকুর, সুব্রত সরকার, বন্দনা মুখোপাধ্যায়রা, সঙ্গে গানের আসরে গলা মেলালেন উপালী চট্টোপাধ্যায়, জয়তী ঘোষ, অশোক দত্ত, অরিজিৎ চক্রবর্তীর মত শিল্পীরা।
পঁচিশে ‘উনিশে এপ্রিল’
অজয় বসু, পুস্পেন সরকারের খেলার ধারাবিবরণী থেকে শুরু করে সলিল চৌধুরীর কথায় ও সুরে লতা মঙ্গেশকরের ‘সাত ভাই চম্পা’, বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে বেতারের ভূমিকা থেকে শুরু করে ‘শিশুমহল’ আর ‘গল্পদাদুর আসর’, বাদ গেল না কিছুই। রম্যগীতি, হাস্যরস, রেডিও নাটক প্রসঙ্গ, ভৌতিক কাহন সবমিলিয়ে জমজমাট ছিল প্রথম অর্ধ। এ যেন টাইম মেশিনে চড়ে দীর্ঘ পথ ফিরে যাওয়া। আর বলতেই হয় সম্ভাবনাময় শিল্পী অরুণা দাসের কথা।
দ্বিতীয়ার্ধে ‘বেতালের নাটক’ সোজা নিয়ে গেল ‘ভূষণ্ডির মাঠে’। পরিবেশনায় অবনী নাট্যদল। সরল ও পরিমার্জিত একটি প্রযোজনা মাধ্যমে সমাপ্তি হল অনুষ্ঠানের।
খেল দিখা সকোগে না?
১৯২৭ থেকে ২০১৯, শতবর্ষের দোরগোড়ায় দাঁড়িয়ে থাকা আকাশবাণী কলকাতার এই দীর্ঘ যাত্রাপথ দু’ঘন্টার অনুষ্ঠানে ধরে রাখা কার্যত অসম্ভব। সেই চেষ্টা করেনওনি উদ্যেক্তারা। শুধু খিদেটা বাড়িয়ে দিলেন, আর ফিরিয়ে নিয়ে গেলেন এমন একটা সময়ে যখন কোনও কোল্ড স্টোরেজের দ্বারোদ্ঘাটন টেলিভিশন ও ইন্টারনেটে ‘ব্রেকিং নিউজ়’ হত না। খবরটা সত্যিই ‘খবর’ হত আর তার বিশ্লেষণ নিয়ে আসত ‘সংবাদ বিচিত্রা’ ও ‘সংবাদ পরিক্রমা’। মোবাইল ফোনে আঙুল ঘষে খিচুড়ি ভাষায় নয়, রীতিমত চিঠি লিখে গান শোনানোর জন্য বসত ‘অনুরোধের আসর’।