সুব্রত মিত্র স্মৃতি পুরস্কার পেলেন বৈদ্যনাথ বসাক
কলকাতা: সুব্রত মিত্র স্মৃতি পুরস্কার (২০১৯) পেলেন প্রবীণ চিত্রগ্রাহক বৈদ্যনাথ বসাক। গতকাল শহরে এক অনুষ্ঠানে সুব্রত মিত্র আর্কাইভসের তরফ থেকে বৈদ্যনাথবাবুর হাতে এই পুরস্কার তুলে দেন চিত্র পরিচালক নীতিশ রায়। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন এশিয়াটিক সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক সত্যব্রত চক্রবর্তী, বিশিষ্ট গণিতজ্ঞ মিহির চক্রবর্তী, কবি দীপেন রায়, সুব্রত মিত্র আর্কাইভসের সভাপতি শিবির রঞ্জন দাস ও অন্যান্যরা।
১৯৪৭ সালে, দেশ স্বাধীন হওয়ার পরপর কলকাতায় খ্যাতনামা চিত্রগ্রাহক বিভূতি লাহার কাছে শিক্ষানবিশ হিসেবে কাজ শুরু করেন বৈদ্যনাথ। কিছুদিন পরেই তিনি রাজ কাপুরের সঙ্গে কাজ করার ডাক পান মুম্বই (তৎকালীন বোম্বে) থেকে। ‘বুট পলিশ’ ছবির অন্যতম চিত্রগ্রাহক ছিলেন তিনি। ‘বুট পলিশ’-এর সাফল্যই তাঁকে মুম্বইতে অনেকটা পরিচিতি দেয়। ততদিনে কলকাতা থেকেও কাজের প্রস্তাব আসতে শুরু করেছে। নিজের শহরে ফিরে আসতে চাইলে বাধা দেন রাজ কাপুর কারণ শীঘ্রই শুরু হবে ‘শ্রী ৪২০’-এর শ্যুটিং। নাছোড় বৈদ্যনাথ ফিরে আসেন কলকাতা।
যে জন থাকে মাঝখানে
‘সবার উপরে’ (১৯৫৫), ‘খোকাবাবুর প্রত্যাবর্তন’ (১৯৬০) ও উত্তমকুমার অভিনীত একাধিক ছবিতে চলেছে তাঁর ক্যামেরা। অগ্রদূত গোষ্ঠীর প্রায় প্রত্যেকটি ছবিতে কাজ করেছেন তিনি। সাদাকালো থেকে রঙিন ছবির বিবর্তনও ধরা পড়েছে তাঁর লেন্সে। বাংলা ও হিন্দি ছাড়াও মালায়ালম, ওড়িয়া ও ভোজপুরী ছবিতেও কাজ করেছেন তিনি।
নবতিপর বৈদ্যনাথের স্মৃতিশক্তি এখন আর সায় দেয় না। একাধিক সুপারহিট বাংলা ছবিতে কাজ করলেও, তৎকালীন রীতি মেনে খুবই অল্প পারিশ্রমিক পেতেন তিনি। তবু জানা গেল যে খুব সম্ভবত ‘নায়িকা সংবাদ’ (১৯৬৭) ছবিতে ভোরের প্রথম ট্রামটি যাওয়ার একটি শটের প্রয়োজন হয়ে পড়েছিল। এই দৃশ্যটি তোলার দায়িত্ব পড়ে বৈদ্যনাথের ওপর। রাত দুটো থেকে ভোর চারটে অবধি রাসবিহারী অ্যাভিনিউতে অপেক্ষা করে অবশেষে সেই শটটি ক্যানবন্দী করেন তিনি।
এদিন চিকিৎসার সাহায্যার্থে দশ হাজার টাকার একটি চেকও তুলে দেওয়া হয় বৈদ্যনাথবাবুর হাতে।
ছবি: প্রতিবেদক