অনেকে থাকতেই পারেন, সিনেমার ফেলুদা একমাত্র আমিই: ইন্দ্রনীল
একই সময়ে অন্যান্য অভিনেতারা ফেলু চরিত্রে অভিনয় করলেও এই মুহূর্তে সিনেমার ফেলুদা একমাত্র তিনিই। বড়পর্দায় ফেলুদার ভূমিকায় চতুর্থ অভিনেতা হিসেবে আত্মপ্রকাশ করতে চলেছেন ইন্দ্রনীল সেনগুপ্ত। প্রদোষচন্দ্র মিত্র ওরফে ফেলুদার স্রষ্টা সত্যজিৎ রায় নিজে সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়কে বেছে নিয়েছিলেন। পরবর্তীকালে তাঁর পুত্র সন্দীপ রায়ের ছবিতে এই চরিত্রে দেখা যায় সব্যসাচী চক্রবর্তীকে। শুধুমাত্র ‘বাদশাহী আংটি’ ছবিতে ফেলু চরিত্রে অভিনয় করেন আবির চট্টোপাধ্যায়। এবার ‘হত্যাপুরী’ ছবিতে নতুন ফেলু হিসেবে অভিষেক হতে চলেছে ইন্দ্রনীলের। বাংলা সাহিত্যের অন্যতম জনপ্রিয় চরিত্রে অভিনয় করা নিয়ে ইন্দ্রনীল কথা বললেন রেডিওবাংলানেট-এর সঙ্গে।
ফেলুদা বাঙালির আইকন। সেই চরিত্রে নিজেকে ভাবা ও রূপদান করা এবং ফেলুভক্তদের চাপ, সব মিলিয়ে ফেলুদাকে কতটা ভারী লাগল?
ফেলুদা হিসেবে নিজেকে ভাবার কাজটা অনেকদিন আগে থেকেই শুরু করেছিলাম। সৌমিত্রদা নিজেই আমাকে বলেছিলেন চরিত্রটার জন্য চেষ্টা করতে। তাছাড়া আমি সোশ্যাল মিডিয়াতে খুব একটা থাকি না। শুধু ইনস্টাগ্রাম করি, যেখানে মানুষের মতামত বিনিময় কম, ছবি বেশি দেওয়া হয়। বেশি কথা হয় ফেসবুক বা টুইটারে। সেগুলো আমি অনেকদিন হলো ছেড়ে দিয়েছি। তাই এইসব তর্কবিতর্ক আমার চোখে পড়ে না। সেই কারণে ফেলুদাকে আমার খুব একটা ভারী লাগেনি।
একই সময়ে দুটি ডিজিটাল মাধ্যমে আরও দুজন নামী অভিনেতাকে ফেলুদার চরিত্রে দেখা যাচ্ছে। একজন ইতিমধ্যে বেশ জনপ্রিয়। অন্যজন আসছেন খুব তাড়াতাড়ি। এগুলো নিয়ে টেনশন কি একেবারেই নেই?
টেনশন করে কী করব? আমার তো কিছু করার নেই। দু’জন কেন, আরও বেশি অভিনেতা একই চরিত্রে অভিনয় করতে পারেন। যাঁরা এখন করছেন তাঁরা সকলেই ভালো অভিনেতা। তাঁরা তাঁদের মতো করে কাজ করুন, আমিও করব। আমি যদি সৌমিত্রদা বা বেণুদার (সব্যসাচী) চাপ না নিই তাহলে এই চাপগুলো কেন নেব? অভিনয়টা তো যে যার মতো করেই করবে। এটুকু বলতে পারি, এই সময়ে দাঁড়িয়ে একমাত্র আমিই সেলুলয়েডের ফেলুদা।
আরও পড়ুন: শেষের সেদিন, উপস্থিত ছিলেন শুধু মহেশ ও ড্যানি
ফেলুদা হয়ে উঠতে কতটা পরিশ্রম করতে হয়েছে?
আমি বাংলা বলা নিয়ে সবথেকে বেশি পরিশ্রম করেছি। প্রবাসী বাঙালি বলে আমার বাংলায় সামান্য টান ছিল, যদিও সেটা এমন কিছু বেশি নয় বলেই আমার বিশ্বাস। আমার চেয়ে খারাপ বাংলা বলে এমন বহু মানুষ এখানে থাকেন। তবে যেহেতু চরিত্রটা ফেলুদার, তাই আমাকে সবদিক থেকে উপযুক্ত হয়ে উঠতে হবে, এটা মাথায় রেখেই বাংলা বই পড়েছি, বলা অভ্যাস করেছি। ফেলুদার গল্প তো অজস্রবার পড়েছি, আগেও পড়েছিলাম। তবে অন্যান্য বই পড়ার ফলে বাংলা বলাটা আগের থেকে অবশ্যই আরও ভালো হয়েছে।
ফেলুদার সঙ্গে চরিত্রগত দিক থেকে নিজের কোনও মিল খুঁজে পাও কি?
(খানিকটা ভেবে) এটা বেশ কঠিন প্রশ্ন, এভাবে ভাবিনি কখনও। শরীরচর্চা তো আজকাল সকলেই করে তাই সেই মিলের দিকে যাব না। তবে আমার মনে হয় আমি মেন্টালি বেশ শার্প। অন্য অনেকের থেকে একটু বেশিই শার্প মনে করি নিজেকে। হ্যাঁ, তবে ফেলুদার মতো একেবারেই নই। নিউ গিনিতে কোন বিশেষ জিনিস পাওয়া যায় সেটা বলতে বললে পারব না (হাসি)। তবে চিন্তাভাবনার দিক থেকে আমার একটা ধারালো দিক আছে।
ছবি: প্রবুদ্ধ নিয়োগী