কেন নন্দনে দেখানো যাবে না সত্যিই জানি না: তথাগত

RBN Web Desk: দর্শকের মতে ভালো ছবি, তবু সরকারি হল পাচ্ছে না ‘রাস’। কী সমস্যা? সেটাই জানেন না পরিচালক। গত সপ্তাহে মুক্তি পেয়েছে তথাগত মুখোপাধ্যায় (Tathagata Mukherjee) পরিচালিত ছবি ‘রাস’ (Raas)। সাধারণত দ্বিতীয় সপ্তাহে সরকারি হল নন্দন এবং রাধা স্টুডিওতে ছবি দেখানোর অনুমতি পাওয়া যায়। সেইভাবেই দরখাস্ত জমা দিয়েছিলেন পরিচালক। কিন্তু নন্দনের রিভিউ কমিটি ছবিটি দেখানোর অনুমতি দেননি। তাঁদের মনে হয়েছে ছবিটি সরকারি হলে দেখানোর উপযুক্ত নয়। এই মতামতের কোনও ব্যাখ্যাও তাঁরা দেননি। তথাগতর বক্তব্য কী?

“ওনারা মনে করছেন ছবিটা সরকারি হলে দেখানোর যোগ্য নয়, এর কারণ আমার জানা নেই। ওনারাও কারণ জানাতে বাধ্য নন। এর আগে আমার ছবি ‘পারিয়া’ দীর্ঘদিন নন্দনে চলেছে। সেক্ষেত্রে ভায়োলেন্সের কারণে নন্দন ১ এ না দিয়ে নন্দন ২ তে দেখানোর অনুমতি মিলেছিল” রেডিওবাংলানেট কে জানালেন তথাগত।

কিন্তু এক্ষেত্রে তো সেই সমস্যা হওয়ার কথা নয়। এটি একটি পারিবারিক ছবি। তাহলে কীসের সমস্যা?

“আমি সত্যিই জানি না। এই ছবিতে ভায়োলেন্স বা আপত্তিকর মনে হতে পারে এমন কোনও দৃশ্যই নেই। সহজ সাধারণ একটা পারিবারিক গল্প। সমস্ত হল থেকে আমরা পজিটিভ রিপোর্ট পাচ্ছি। দর্শকের ভালো লাগছে ছবিটা” বললেন তথাগত।

রিভিউ কমিটির সদস্য পরিচালক প্রেমেন্দু বিকাশ চাকি জানিয়েছেন কমিটি কোনও সিদ্ধান্ত নিতে পারে না। কোনও ছবি দেখে তারা মতামত দিতে পারেন শুধু, বাকিটা সরকারের সিদ্ধান্ত। “রিভিউ কমিটির মতামতের ওপরেই তো সরকার সিদ্ধান্ত নেয়” পাল্টা উত্তর তথাগতর। “সরকার তো নিজে দেখবে না। রিভিউ কমিটি যা রিপোর্ট দেবে তার ওপর ভিত্তি করেই সরকার ঠিক করবে কোন ছবি দেখানো হবে, কোনটা নয়।”

আরও পড়ুন: আবার হিন্দিতে ঋতুপর্ণা, এবার ওয়েবে

তাহলে কি অন্য কোনও শত্রুতা?

“কীসের শত্রুতা? আমি তো রাজনীতি করি না। প্রেমেন্দু বিকাশ চাকির সঙ্গে আমার পরিচয়ও নেই, তাই বলতে পারব না” হতাশ উত্তর তথাগতর। ওই কমিটির কারোর সঙ্গেই তাঁর কোনও ব্যক্তিগত শত্রুতা নেই বলে জানালেন তিনি। তাহলে যে ছবি সর্বত্র ভালো ফল করছে তাকে সরকারি হল দিতে অসুবিধা হবে কেন? তবে কি ইন্ডাস্ট্রির ভেতরে অন্য কোনও রাজনীতি চলছে? ডিরেক্টরস গিল্ডের সিদ্ধান্ত মেনে শুটিং বন্ধ না রাখাই কি তথাগতর কাল হলো?

“আমি সেই সময় বাইরে শুট করছিলাম, তাই বন্ধ করা সম্ভব ছিল না”, উত্তর দিলেন তথাগত, “সেটা আদৌ কারণ কিনা তাও আমার জানা নেই। প্রযোজকের লাখ লাখ টাকা খরচ করে শুটিং শিডিউল রেখে তারপর আচমকা সেটা ক্যানসেল করা যায় না, বাইরে হলে তো আরও যায় না।”

আরও পড়ুন: টিকে থাকা নয়, বেঁচে থাকার রসদ জোগাবে ‘রাস’

তাহলে এই মুহূর্তে কী ভাবছেন তিনি? কীভাবে লড়বেন এই সমস্যার সঙ্গে?

“আমি কিছুই ভাবছি না। কারণ আদালতের সিদ্ধান্তে খুশি না হলেও আপিল করা যেতে পারে, কিন্তু এখানে দ্বিতীয়বার এই নিয়ে ওদের ভেবে দেখতে অনুরোধ করার কোনও পদ্ধতিই নেই। তাই এখন যেমন ছবিটা অন্যান্য হলে চলছে চলবে। খুব ভালো সময় শো আমরা পাইনি। কিন্তু তার মধ্যেও মানুষ ছবিটা দেখতে আসছেন, ভালো ফিডব্যাক পাচ্ছি। এরপর যখন ছবিটা ওটিটিতে আসবে তখনও বহু মানুষ দেখবেন সেটা জানি। তবু বড়পর্দার জন্য তৈরি যে ছবিটা সেটা মানুষ হলে এসে দেখুন সেটাই চাইবো আমরা। এখনও অবধি ছবিটা খারাপ লেগেছে এমন কেউ বলেননি।”

তবে এরকমটা বার বার হতে থাকলে নতুন প্রযোজকরা আর বাংলা ইন্ডাস্ট্রিতে লগ্নি করবেন কি?

“এটাই আসল কথা। এই ধরনের ঘটনায় আসল ক্ষতি কিন্তু প্রযোজকদের। যারা নতুন আসছেন এখানে কাজ করতে, লগ্নি করতে, তাদের আর্থিক লাভ না হলে পরবর্তীতে তারা আর আসবেন না। শুধু আমার ক্ষেত্রে নয়, স্বাধীন ছবি যারা বানাচ্ছেন সেই সব নতুন পরিচালকদের ছবিগুলো অনেকটা ঝুঁকি নিয়েই বানানো হয়। তারপর যদি এইসব কারণে ছবির ব্যবসা ক্ষতিগ্রস্ত হয় তাহলে পরবর্তী সময়ে এরা কি আর বাংলায় ছবি করতে আগ্রহী হবেন?” প্রশ্ন রাখলেন তথাগত।

নন্দন কর্তৃপক্ষ উত্তর দেবেন কি? 




Like
Like Love Haha Wow Sad Angry
1

Swati

Editor of a popular Bengali web-magazine. Writer, travel freak, nature addict, music lover, foody, crazy about hill stations and a dancer by passion. Burns the midnight oil to pen her prose. Also a poetry enthusiast.

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *