হঠাৎ বরকর্তা হিসেবে হাজির উত্তমকুমার: মাধবী
RBN Web Desk: নেমন্তন্ন করেছিলাম। আসবেন কথা দিয়েছিলেন। ইণ্ডাস্ট্রির অনেকেই উপস্থিত ছিলেন সেদিন। হঠাৎ দেখি আমার বিয়েতে বরকর্তা হিসেবে হাজির উত্তমকুমার। চারিদিকে বেশ শোরগোল পড়ে গেল। এরকম চমক সত্যিই আশা করিনি, বললেন মহানায়কের সাথে একাধিক ছবির নায়িকা মাধবী মুখোপাধ্যায়।
গতকাল ছিল উত্তমকুমারের ৩৮তম মৃত্যুবার্ষিকী। ১৯৮০ সালের ২৪ জুলাই ওগো বধূ সুন্দরী ছবির শ্যুটিং চলাকালীন হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান উত্তম। আর তার পর থেকে প্রতি বছর এই দিনে নিয়ম করে সংবাদমাধ্যমের ফোন ধরতে হয় মাধবীকে।
যে জন থাকে মাঝখানে
আর হবে নাই বা কেন? মহানায়কের সঙ্গে তার সবকটি ছবি হিট, যা বোধহয় আর অন্য কোনও নায়িকার নেই। থানা থেকে আসছি (১৯৬৫) দিয়ে শুরু, যদিও এই ছবিতে একসাথে কোনও দৃশ্যে ছিলেন না দুজন। মাধবীর চরিত্রটি নিয়েই গল্প অথচ প্রায় গোটা ছবিতে কোনও সংলাপ ছিল না তার। শুধু চোখমুখের অভিব্যক্তি দিয়ে তাক লাগিয়ে দেন নায়িকা। তারপর একে একে এসেছে শঙ্খবেলা (১৯৬৬), গড় নাসিমপুর (১৯৬৮), ছদ্মবেশী (১৯৭১), বিরাজ বৌ (১৯৭২), ছিন্নপত্র (১৯৭২), বনপলাশীর পদাবলী (১৯৭৩) ও অগ্নিশ্বর (১৯৭৫)।
তিন মূর্তি ও পায়ের তলায় সরষে
অত্যন্ত বড় মাপের মানুষ ছিলেন উত্তমকুমার। কাজ করলাম, পারিশ্রমিক নিলাম, চলে গেলাম, এমন মানসিকতা ছিল না তাঁর। শিল্পকে সাধনার জায়গায় পৌঁছে দিয়েছিলেন তিনি, স্মৃতিচারণ মাধবীর। একটা একান্নবর্তী পরিবারের মত ছিল আমাদের ইণ্ডাস্ট্রি। সবাই সবার খবর রাখতেন। না হলে আমার বিয়েতে উনি বরকর্তা হয়ে আসেন? এখন তো সবাই আত্মকেন্দ্রিক। হয়ত আগের থেকে কাজ অনেক বেশি প্রফেশনাল হয়েছে, কিন্তু সেই সম্পর্কগুলো সব হারিয়ে গেছে। এটা এখনকার কাউকে বলে বোঝানো মুশকিল। আমারা যারা দুই সময়েই কাজ করেছি, তারাই একমাত্র বুঝব, আক্ষেপ ঝরে পড়ে চারুলতার গলায়।
প্রেমের পাপে
সকালে উত্তমকুমার প্রতিষ্ঠিত শিল্পী সংসদের অনুষ্ঠান। সেখান থেকে নন্দনে উত্তম চলচ্চিত্র উৎসব। তারপর পশ্চিমবঙ্গ সরকারের মহানায়ক সম্মান প্রদান। সবশেষে টিভি সিরিয়ালের শ্যুটিং। সব নিয়ে গতকাল ব্যস্ত দিনই কাটালেন সত্তরোর্ধ অভিনেত্রী।