দুই মুখোপাধ্যায় অন্তত ভেবেছিলেন আমি ফেলুদা হওয়ার যোগ্য: টোটা

RBN Web Desk: কিছুদিন আগে মুক্তি পেয়েছে ট্রেলার। সেই ট্রেলার এতদিনে দেখে ফেলেছেন কয়েক লক্ষ মানুষ। কিছুদিনের মধ্যেই বাঙালির ফেলু তালিকায় আর একটা নতুন নাম যোগ হতে চলেছে। পরিচালক সৃজিত মুখোপাধ্যায়ের ‘ফেলুদা ফেরত’ ওয়েব সিরিজে ফেলুদার ভূমিকায় দেখা যাবে টোটা রায়চৌধুরীকে। সত্যজিৎ রায়ের ‘ছিন্নমস্তার অভিশাপ’ ও ‘যত কাণ্ড কাঠমাণ্ডুতে’ নিয়ে তাঁর প্রথম ওয়েব সিরিজ় পরিচালনা করেছেন সৃজিত।

“শতকরা নব্বই শতাংশ মানুষের ট্রেলারটা ভালো লেগেছে,” রেডিওবাংলানেট-কে বললেন টোটা। “প্রচুর মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবেই সেই কথা জানিয়েছেন, অনেকেই ব্যক্তিগতভাবে বলেছেন। এছাড়া সোশ্যাল মিডিয়াতেও সেই ভালো লাগা জানিয়েছেন অনেকে। কিছু মানুষের ভালো লাগবে না সেটা তো স্বাভাবিক। তবে কেউ-কেউ উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবেই ট্রোল করেছেন, সেটা যে হবেই তাও জানতাম।” তবে বেশিরভাগ মানুষ যেখানে তাঁকে ফেলুদা হিসেবে দেখার জন্য অপেক্ষায় রয়েছেন সেখানে অল্প কয়েকজন কী বললেন সেটাকে গুরুত্ব দিতে নারাজ টোটা।

আরও পড়ুন: সব কান্নার শব্দ হয় না, বেজে উঠল পটদীপ

যেহেতু তাঁকে কেউ ফেলুদা হিসেবে কখনো কল্পনাই করেননি, তাই প্রাথমিকভাবে তিনি এই অপছন্দ ও ট্রোলিংয়ের শিকার হয়েছেন বলে মনে করেন টোটা। “ফেলুদা হিসেবে কয়েকজন অভিনেতার নাম প্রস্তাব করে সৃজিত সোশ্যাল মিডিয়াতে একটা পোল করেছিল। সেখানে যাঁদের সঙ্গে আমার নাম রাখা হয়েছিল, তাঁরা অনেকেই ফেলুদা হিসেবে খুবই মানিয়ে যেতেন। তাঁদের বয়সও অনেক কম। সেখানে আমার নাম দেখে অনেকেই খুব অবাক হয়েছিলেন। সত্তর ভাগ মানুষ আমার বিরুদ্ধে ভোট দিয়েছিলেন। কিন্তু আমার কাছে সবচেয়ে বড় জোর ছিল পরিচালক নিজে আমাকে পছন্দ করেছেন,” বললেন টোটা।

ফেলুদা হওয়ার

সৃজিতের ফেলুদার ভাবনার সঙ্গে তিনি খাপ খেয়ে গেছেন আর সেটাই তাঁর কাছে সবথেকে বেশি গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করেন টোটা। “তাছাড়া আমি তো অন্য জেনারেশনের মানুষ, তাই ট্রোলিং নিয়ে মাথা ঘামাই না। ভয় জিনিসটা আমার চিরকালই কম। খেলাধুলা করে বড় হয়েছি। আর যিনি ট্রোলিং করছেন তার যোগ্যতা না জেনে আমি কেন তার উত্তর দিতে যাব? কাজটাই তো আসল কথা। সেটা দেখে না হয় তাঁরা বলবেন। তখন সেই বলার পিছনে যুক্তিও নিশ্চয়ই থাকবে। দু’মিনিটের ট্রেলার দেখে কতটুকুই বা বোঝা যায়?” প্রশ্ন টোটার।

আরও পড়ুন: সিনেমার মতোই ছিল যে জীবন

ফেলুদার জুতোয় তাঁর পা গলানোর ব্যাপারটা দর্শকদের কাছে যতটা অপ্রত্যাশিত ছিল, তাঁর নিজের কাছেও কি তেমনটাই ছিল? “আমি তো ভাবতেই পারিনি। আমার কোনদিনই খুব বেশি কিছু চাওয়া নেই। আমি ভালোবেসে অভিনয় করি, কখনও নায়ক হতেও চাইনি। অভিনেতা হিসেবে কাজ করতে পারলেই আমি খুশি। কোনওদিনই কোনও স্বপ্ন দেখিনি যে এই চরিত্রটা করতেই হবে। এটা ঠিক যে কাজের ব্যাপারে আমি একটু খুতখুঁতে। চরিত্র পছন্দ না হলে কাজ করি না। তবে কিছু কাজ মাঝেমধ্যে করতেই হয়। আর্থিক প্রয়োজন সকলেরই থাকে। তবে সেখানেও আমি এমন কিছু করব না যা আমার ইমেজের সঙ্গে খাপ খায় না। আমি অনেক খেটে অভিনেতা হয়েছি। সেই অর্থে আমি ট্রেইন্ড অভিনেতা নই। অনেক যুদ্ধ করে আমাকে অভিনয়ে আসতে হয়েছে। পারিবারিক নানা বাধ্যবাধকতা থাকা সত্বেও আমি অভিনয়ে এসেছি। তাই এটা আমার কাছে খুব পবিত্র একটা জায়গা। এখানে যেটা আমার পছন্দ নয় সেটা আমি করব না। শুধু এই একটা চরিত্রের প্রতি আমার একটা আকর্ষণ ছিল,” বললেন টোটা।




পরিচালক সন্দীপ রায়ের ফেলুদা সিরিজ়ের ছবি ‘টিনটোরেটোর যীশু’তে একটি গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন টোটা। সেই ছবিতে ফেলুদার ভূমিকায় ছিলেন সব্যসাচী চক্রবর্তী। সেই সময় অনেকেই তাঁকে দেখে ভেবেছিলেন ভবিষ্যতে তিনি ফেলুদার চরিত্রে মানিয়ে যেতে পারবেন। সোশ্যাল মিডিয়ায় এ কথা জানিয়েছেন অনেকেই। “আর কেউ ভেবেছিল কিনা জানি না তবে দুই মুখোপাধ্যায় অন্তত ভেবেছিলেন আমি ফেলুদা হওয়ার যোগ্য, ” বললেন টোটা।  “একজন সাহিত্যিক শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায় আর অন্যজন সৃজিত। ‘দেশ’ পত্রিকায় শীর্ষেন্দুবাবু সেটা লিখেওছিলেন। সেই কাটিং আজও আমার কাছে আছে।”

Amazon Obhijaan



Like
Like Love Haha Wow Sad Angry
1

Swati

Editor of a popular Bengali web-magazine. Writer, travel freak, nature addict, music lover, foody, crazy about hill stations and a dancer by passion. Burns the midnight oil to pen her prose. Also a poetry enthusiast.

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *