আবারও উদ্ধার বেনামী টাকা, নেপথ্যে ক্রাইম ড্রামা
কলকাতা: প্রতিটি মানুষকে অর্থ উপার্জন করতে হাড়ভাঙা পরিশ্রম করতে হয়। কিন্তু কেউ যদি হঠাৎ করে অগাধ টাকার মালিক হয়ে যায়, কী করবে সে? এরকমই এক বিষয় নিয়ে তাঁর প্রথম ছবি ‘সিটি অফ জ্যাকলস’ পরিচালনা করেছেন সুজিত দত্ত (রিনো)। বিভিন্ন ভূমিকায়
অভিনয় করেছেন জয় সেনগুপ্ত, সায়নী ঘোষ, শান্তিলাল মুখোপাধ্যায়, খরাজ মুখোপাধ্যায়, দেবপ্রসাদ হালদার ও অমিত সাহা। গতকাল শহরে এক অনুষ্ঠানে হলো ছবির পোস্টার।
নিম্নমধ্যবিত্ত, খেটে খাওয়া এক শ্রমিকের হাতে হঠাৎ করেই একদিন এসে পড়ে টাকাভর্তি একটা ব্যাগ। এত টাকা একসঙ্গে দেখা তো দূর, সে কখনও কল্পনাও করেনি। দারিদ্র্যের সঙ্গে লড়াই করে যাকে প্রতিদিন দু’বেলা পেট ভরাতে হয়, সে এতগুলো টাকা দিয়ে কী করবে? জীবনের অপূর্ণ সাধগুলো মেটাবে নাকি কোনও অন্ধকার জগতে পা রাখবে?
আরও পড়ুন: নেপথ্যে গাইলেন জলি, স্টেজে দাঁড়িয়ে ঠোঁট মেলালেন রাহুল দেব বর্মণ
“হঠাৎ করে অনেকগুলো টাকা যদি কারও হাতে চলে আসে, যা সে উপার্জন করেনি, তখন তো তার মাথা ঘুরে যেতেই পারে। সেটাই স্বাভাবিক। প্রত্যেক মানুষের কিছু স্বপ্ন বা ইচ্ছে থাকে। সেগুলো সে পূরণ করবে নাকি অপরাধের ফাঁদে পা দেবে, তাই নিয়েই এই ছবি,” বললেন সায়নী। তবে ছবিতে তাঁর অভিনীত চরিত্রটি নিয়ে এখনই কিছু বলতে চাইলেন না তিনি।
চিত্রনাট্য ছাড়াও রিনোর চিন্তাভাবনা তাঁর ভালো লেগেছে বলে জানালেন সায়নী। “প্রথম ছবির ক্ষেত্রে প্রত্যেকেই খুব প্যাশনেট হয়। যেটা হয়তো পরিচালকের পনেরো বা ষোলোতম ছবিতে তেমনটা আর থাকে না। সেই প্যাশনটা এই ছবির ক্ষেত্রে আমি রিনোর মধ্যে দেখেছি। এছাড়া ছবির চিত্রনাট্য তো ভালো লাগার অনত্যম প্রধান কারণ,” বললেন তিনি।
আরও পড়ুন: শেষ দৃশ্যে ভাঙা হোল্ডার, সত্যজিতের জয়জয়কার
ছবির মুখ্য ভূমিকায় রয়েছেন জয়। করোনা অতিমারী ও লকডাউনের জন্য ছবি শেষ করতে দু’বছর লেগেছে বলে জানালেন তিনি। “এটা একেবারেই স্বল্প বাজেটের ছবি। খুব কষ্ট করেই ছবিটা করা হয়েছে। আমাদের সকলের লক্ষ্য ছিল যেন ছবিটা শেষ হয়। অথচ এই ছবিগুলোর পাশে কেউ দাঁড়াতে বলে না। এই ছবিতে আমি একজন পরিযায়ী নির্মাণশ্রমিক সুপারভাইজ়ারের চরিত্রে আছি। এই চরিত্রগুলো খুব চেনা হলেও আমরা দৈনন্দিন জীবনে সাধারণত এদের এড়িয়ে যাই। একটা শহর চলেই এই শ্রমিক শ্রেণীকে নিয়ে, অথচ শহরের মূলস্রোতে এদের দেখা যায় না। আজকাল এদের নিয়ে কেউ ছবি করে না। আমার মনে হয় এদের গল্পগুলোও উঠে আসা উচিত,” বললেন জয়।
আরও পড়ুন: বেহিসেবী জীবনযাপন, আজ স্মৃতির অতলে সৌমিত্র
তাঁর প্রথম ছবিকে ক্রাইম ড্রামা বলে উল্লেখ করলেন রিনো। “ছবিটা সমাজের নিচুশ্রেণীর মানুষের স্বপ্নপূরণের গল্প বলে। যে মানুষগুলো সারা জীবন ধরে অজস্র ইচ্ছে আর স্বপ্ন নিয়ে বেঁচে থাকে, তবু কোনওদিনই কিছু পায় না এটা তাদের গল্প। তারা চোখের সামনে সবই দেখে অথচ টাকার অভাবে ছুঁয়ে দেখতে পারে না, তাদের হাতে যদি অনেকগুলো টাকা এসে যায় তাহলে তারা কী করবে? সমাজের এই কঠিন সত্যটাই আমি বিনোদনের মোড়কে তুলে ধরার চেষ্টা করেছি,” বললেন রিনো।
নভেম্বরে মুক্তি পাবে ‘সিটি অফ জ্যাকলস’।