শেক্সপিয়র নিয়ে ট্রিলজি করার ইচ্ছে আছে: রাজর্ষি

ছবির কাজ শেষ হয়ে গিয়েছিল বছর দুয়েক আগেই। বাংলায় বড়পর্দায় এর আগে উইলিয়াম শেক্সপিয়রের কাহিনি নিয়ে সরাসরি কোনও কাজ হয়নি, তাই আগ্রহ এবং উত্তেজনা ছিলই। অবশেষ প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে শেক্সপিয়রের ‘ম্যাকবেথ’ অবলম্বনে মুক্তি পেতে চলেছে পরিচালক রাজর্ষি দে’র ছবি ‘মায়া’। তনুশ্রী চক্রবর্তী, গৌরব চক্রবর্তী, রাফিয়াত রশিদ মিথিলা, সুদীপ্তা চক্রবর্তী, রাহুল বন্দোপাধ্যায়, কমলেশ্বর মুখোপাধ্যায় এবং আরও অনেককে নিয়ে এ ছবির শিল্পীতালিকা দীর্ঘ। গতকাল বিকেলে সাংবাদমাধ্যমের সামনে তাঁর ছবির শিল্পীদের নিয়ে হাজির ছিলেন রাজর্ষি। ‘মায়া’ নিয়ে রেডিওবাংলানেট-এর নানা প্রশ্নের উত্তর দিলেন তিনি। 

‘মায়া’ মুক্তি পেতে এত দেরি হলো কেন? 

রাজর্ষি: দুটো কারণে দেরিটা হয়েছে। আমরা সেন্সরের কাছে ছবিটা পাঠিয়েছিলাম অনেকদিন আগে। কিন্তু প্রচুর ছবি জমে থাকায় সার্টিফিকেট দিতে ওদের অনেকটা সময় লাগল। সেই কারণে আমরা মুক্তির তারিখ ঠিক করতে পারছিলাম না। সেই শংসাপত্র আসার পর যে দু’-তিনটে তারিখ আমরা চেয়েছিলাম, সেগুলো দেখে নিয়ে ফাইনাল করতে একটু সময় লেগে গেল। অবশেষে ৭ জুলাই ছবিটা মুক্তি পাচ্ছে। 



ট্রেলার দেখে মনে হলো অনেকটা ছবি জুড়েই ভায়োলেন্স রয়েছে। সেন্সরের সার্টিফিকেট পেতে কি কোনও সমস্যা হয়েছিল?

রাজর্ষি: না। সেন্সরের সার্টিফিকেট পেতে কোনও সমস্যা হয়নি। ছবিটা ‘প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য’ সার্টিফিকেট নিয়ে মুক্তি পাচ্ছে। তবে সেটা ভায়োলেন্সের জন্য নয়, সংলাপের জন্য। ওরা আমাকে বলেছিল কিছু সংলাপ যদি বাদ দেওয়া যায় তাহলে ছবিটা ইউ/এ সার্টিফিকেট পেয়ে যাবে। আমি সেই শর্তে রাজি হইনি। কারণ ছবিতে যে চরিত্রের মুখে যে সংলাপ রয়েছে সেটা তার বেড়ে ওঠা, তার ব্যাকগ্রাউন্ডকে বোঝাচ্ছে। ওটা বাদ দেওয়া যাবে না। আমার ‘এ’ সার্টিফিকেটে কোনও সমস্যা ছিল না। 

আরও পড়ুন: রোড ট্রিপে বন্ধুত্বের গল্প

‘এ’ সার্টিফিকেট কি ছবির দর্শক সংখ্যা কিছুটা হলেও কমিয়ে দেয় না? সিরিজ় হলে তো ‘এ’ বলে উল্লেখ করতে হতো না

রাজর্ষি: আমার সেটা মনে হয় না। ‘দ্বিতীয় পুরুষ’ও ‘এ’ সার্টিফিকেট পেয়েছিল। সাংঘাতিক ভালো ব্যবসা করেছিল ছবিটা। ‘দৃষ্টিকোণ’ও তাই। খুব ভালো চলেছিল সেটা। ‘রাজকাহিনী’, ‘নির্বাক’ এই ছবিগুলো প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য ছিল। মৈনাকের (ভৌমিক) ছবি ‘ফ্যামিলি অ্যালবাম’, যেটার নামেই ফ্যামিলি আছে, সেটাও প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য। ‘এ’ সার্টিফিকেটের জন্য ছবিগুলোর ব্যবসা করতে তো কোথাও অসুবিধা হয়নি। দর্শক এখন অনেক পরিণত। শুধুমাত্র ছবির সার্টিফিকেট দেখে কেউ প্রেক্ষাগৃহে আসেন বলে আমার মনে হয় না। 

শেক্সপিয়র নিয়ে ট্রিলজি

টিম ‘মায়া’

বাংলা ছবিতে এত বড় স্টার কাস্ট এর আগে তেমন দেখা যায়নি। এতজন অভিনেতাকে নিয়ে কাজ করতে সমস্যা হয়নি? 

রাজর্ষি: একেবারেই না। আমরা টানা শ্যুটিং করেছি। সকলেই আমার বন্ধু। আমরা অনেক আগে থেকে প্ল্যান করে এগিয়েছি। বৃষ্টির মধ্যেও কাজ করেছি। খুব আনন্দ করে কাজ হয়েছে। মিথিলা প্রথমবার বাংলাদেশ থেকে এসে আমার ছবিতে কাজ করল। সকলেই আমার জন্য ডেট ম্যানেজ করেছে। 

আরও পড়ুন: “আর ভালো লাগছে না”

শেক্সপিয়রের গল্প নিয়ে কাজ করলে কেন? 

রাজর্ষি: আমার শেক্সপিয়র নিয়ে ট্রিলজি করার ইচ্ছে আছে। ‘মায়া’ যেমন করেছি ‘ম্যাকবেথ’ অবলম্বনে, তেমনই ব্রাত্য বসুর নাটক ‘হেমলার, দ্য প্রিন্স অফ গরানহাটা’, যেটা ‘হ্যামলেট’ অবলম্বনে, সেটা আমার পরের ছবি। তারপর ‘কিং লিয়র’ নিয়ে ছবি করার ইচ্ছে রয়েছে। মঞ্চে হয়ে থাকেলও, বাংলা ছবিতে সরাসরি কিং লিয়রকে নিয়ে কোনও কাজ হয়নি। আমার মনে হয় নাটক থেকে ছবি হওয়া দরকার। ‘বল্লভপুরের রূপকথা’ যেমন খুব ভালো ছবি হয়েছে। ইদানিং নাটক নিয়ে আরও নানারকম কাজ হচ্ছে। 

আরও পড়ুন: ‘মাসুম’-এর সিক্যুয়েল করবেন শেখর?

এর মধ্যে আরও একটা ছবির কাজ শেষ করলে, ‘সাদা রঙের পৃথিবী’। এই ছবিটা কী নিয়ে?

রাজর্ষি: এটা বেনারসের পটভূমিতে বিধবাদের ওপর অত্যাচার এবং পাচার করার ঘটনা নিয়ে ছবি। বাংলায় এই বিষয়ে এর আগে কোনও ছবি হয়নি। এই ছবিতে শ্রাবন্তী চট্টোপাধ্যায় রয়েছে দ্বৈত চরিত্রে। ওটার ডাবিংয়ের কাজ বাকি রয়েছে। ‘মায়া’ মুক্তি পাওয়ার পর খুব তাড়াতাড়ি ওটার পোস্টপ্রোডাকশন শেষ করে ওটাও রিলিজ় করব। 




Like
Like Love Haha Wow Sad Angry

Swati

Editor of a popular Bengali web-magazine. Writer, travel freak, nature addict, music lover, foody, crazy about hill stations and a dancer by passion. Burns the midnight oil to pen her prose. Also a poetry enthusiast.

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *