দুর্গাকে ট্রেন নাও দেখাতে পারতেন সত্যজিৎ: মিত্রা বন্দ্যোপাধ্যায়
কলকাতা: পর্দা জুড়ে ঘন কাশফুলের মাঝে একখণ্ড জমি। আখ চিবোতে ব্যস্ত অপু কিছু একটা জিজ্ঞেস করতে যায় দুর্গাকে। অপুকে থামিয়ে দেয় দুর্গা। ততক্ষণে তার কানে চলে এসেছে রেলগাড়ি ছুটে আসার শব্দ। উঠে দাঁড়িয়ে ঘাড় ঘুরিয়েই দূরে ট্রেনটাকে দেখতে পায় তারা। কিছুক্ষণ আগে এই রেলগাড়ি আসার শব্দই টেলিগ্রাফের খুঁটিতে কান লাগিয়ে শোনার চেষ্টা করেছিল দুর্গা। এখন কাছ থেকে সেই রেলগাড়ি দেখতে কাশবনের ভেতর দিয়ে ছুটে যায় দুই ভাইবোন।
পরিচালক সত্যজিৎ রায়ের ‘পথের পাঁচালী’ ছবির প্রসঙ্গ উঠলেই অবধারিত ভাবে এসে পড়ে বিশ্ব চলচ্চিত্রে আইকন হয়ে যাওয়া এই দৃশ্য। তবে বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের রচনায় অপু-দুর্গার একসঙ্গে ট্রেন দেখার কোনও উল্লেখ নেই। “‘পথের পাঁচালী’ মূল উপন্যাসে দুর্গার রেলগাড়ি দেখার ইচ্ছে থাকলেও সেটা সে দেখে যেতে পারেনি,” সম্প্রতি কলকাতা আন্তর্জাতিক বইমেলায় পরিচালক শুভ্রজিৎ মিত্রর ‘অভিযাত্রিক’ ছবির টিজ়ার মুক্তি অনুষ্ঠানে বললেন বিশিষ্ট সঙ্গীত শিক্ষিকা, বিভূতিভূষণের পুত্রবধূ মিত্রা বন্দ্যোপাধ্যায়। “কাহিনীতে ট্রেন দেখার আগেই মৃত্যু হয় দুর্গার। দিদিকে রেলগাড়ি দেখাতে পারেনি বলে গভীর আক্ষেপ ছিল অপুর। এটাই ‘পথের পাঁচালী’ কাহিনীর সবথেকে বড় ট্র্যাজেডি। সত্যজিৎ তাঁর ছবিতে ভাইবোনের একসঙ্গে ট্রেন দেখার দৃশ্যটি নাও রাখলে পারতেন। এই নিয়ে আমাদের পরিবারে একটু ক্ষোভও আছে।”
আরও পড়ুন: বিশিষ্টজনের স্মৃতিচারণে জেগে রইলেন নবনীতা
বিভূতিভূষণের ‘অপরাজিত’ উপন্যাসের বাকি অংশ, যা সত্যজিৎ তাঁর ‘অপু ট্রিলজি’তে রাখেননি, তাই নিয়েই ‘অভিযাত্রিক’ পরিচালনা করেছেন শুভ্রজিৎ। ছবিতে অপু ও কাজলের ভূমিকায় থাকছেন অর্জুন চক্রবর্তী ও আয়ুষ্মান মুখোপাধ্যায়। এছাড়া অন্যান্য চরিত্রে রয়েছেন অর্পিতা চট্টোপাধ্যায়, সব্যসাচী চক্রবর্তী, শ্রীলেখা মিত্র, দিতিপ্রিয়া রায়, সোহাগ সেন, বরুণ চন্দ ও রূপাঞ্জনা মিত্র। ছবির সঙ্গীত পরিচালনার দায়িত্বে রয়েছেন বিক্রম ঘোষ।