পাল্প ফিকশন লেখক শ্রীস্বপনকুমারের ভূমিকায় পরাণ
RBN Web Desk: শ্রীস্বপনকুমারের ভূমিকায় অভিনয় করতে চলেছেন পরাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। দেবালয় ভট্টাচার্যের পরিচালনায় ‘শ্রীস্বপনকুমারের বাদামী হায়নার কবলে’ ছবিতে একসময়ের বাংলা পাল্প ফিকশন ঘরানার জনপ্রিয় লেখকের চরিত্রে দেখা যাবে পরাণকে। এই ছবির কেন্দ্রীয় চরিত্র গোয়েন্দা দীপক চ্যাটার্জির ভূমিকায় থাকছেন আবীর চট্টোপাধ্যায়। অন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে থাকছেন শ্রুতি দাস।
‘এক হাতে পিস্তল ও এক হাতে টর্চ নিয়ে জলের পাইপ বেয়ে নেমে গেল দুর্ধর্ষ গোয়েন্দা দীপক চ্যাটার্জি।’ এরকম বাক্যের সঙ্গে বর্তমান প্রজন্মের অনেক পাঠকই হয়তো পরিচিত নন। পঞ্চাশের দশক থেকে শুরু করে এই গোয়েন্দা বাঙালি পাঠকের একটা বড় অংশের মন জয় করে নিয়েছিল ‘কালনাগিনী’, ‘ড্রাগন’, ‘বাজপাখি’, ‘বিশ্বচক্র’-এর মতো সিরিজ়ের মাধ্যমে। এই সিরিজের স্রষ্টা ছিলেন সমরেন্দ্রনাথ পাণ্ডে, ওরফে শ্রীস্বপনকুমার। ‘শ্রীভৃগু’ ছদ্মনামে জ্যোতিষের বই লেখার পাশাপাশি তিনি লিখতেন এই রোমহর্ষক সিরিজ়। পেশায় ডাক্তার সমরেন্দ্রনাথ স্বনামে লিখেছিলেন বেশ কিছু ডাক্তারির বইও। সেই বই এখনও বাজারে পাওয়া যায়।
অরও পড়ুন: টেলিভিশনে প্রবল অনীহা ছিল বাবার, মৃণাল সেনের স্মৃতিচারণে পুত্র কুণাল
১৯৫৩ সালে প্রকাশিত ‘অদৃশ্য সংকেত’ কাহিনিতে দীপক চ্যাটার্জির আবির্ভাব। পুলিশ প্রায়ই তার কাছে সাহায্য নিতে আসে। দীপককে অভিযানের জন্য বহুবার বিদেশেও যেতে হয়েছে। সেসব অভিযানে তার সঙ্গী হতো রতনলাল। দীপক কেবল দু’হাতে নিখুঁত তাক করে বন্দুক চালাতেই জানে না, মার্শাল আর্টেও দক্ষ। বিজ্ঞানে প্রভূত জ্ঞান থাকা দীপক বিভিন্ন পরীক্ষা-নীরিক্ষা করার জন্য বাড়িতেই একটি গবেষণাগার বানিয়ে নিয়েছে।
এহেন এক গোয়েন্দা ও তার স্রষ্টা এই প্রথম বড়পর্দায় আসতে চলেছে।
ছবির গল্প কী নিয়ে?
‘শ্রীস্বপনকুমারের বাদামী হায়নার কবলে’ সমরেন্দ্রনাথের লেখা বিশেষ কোনও কাহিনি নিয়ে তৈরি হচ্ছে না। কলকাতা শহরে কিছু কুপরিকল্পনা নিয়ে আসে আন্তর্জাতিক দুষ্কৃতি বাদামী হায়না। খোদ স্রষ্টা শ্রীস্বপনকুমারের অনুরোধে দীপক তার দীর্ঘদিনের অবসর ভেঙে ফের মাঠে নামে। স্বপনকুমার চান, দীপক ফের ‘বুম-বুম’ শব্দে বন্দুক গর্জিয়ে, লাফঝাঁপ করে কলকাতা শহরকে বাঁচাক। এতে শ্রীস্বপনকুমার আর একটি, বা হয়তো তাঁর শেষ দীপক চ্যাটার্জির কাহিনি লিখতে পারবেন। দীপকের দীর্ঘদিনের সহকারী রতনলালও এ অভিযানে তাদের সঙ্গী হয়। হাতে আসে বাদামী হায়নার জিয়নকাঠি। কিন্তু রতন খুন হয়ে যাওয়ায় তা আবার হারিয়ে যায়। তাশি বলে একটি মেয়ে এই খুন দেখে ফেলে।
আরও পড়ুন: জয়সলমেরে সত্যজিৎ রায়ের মূর্তি, উদ্যোগী রাজস্থান সরকার
ছবির এই অংশ থেকে কাহিনিতে হস্তক্ষেপ করেন খোদ শ্রীস্বপনকুমার। দীপকের অনুরোধে কলমের খোঁচায় তিনি রতনলালকে অন্য একটি চরিত্র হিসেবে নিয়ে আসেন। এই কাহিনির সূত্র কে এগিয়ে নিয়ে যাবে? লেখক না নায়ক? সেই নিয়ে চলে দ্বন্দ্ব। এদিকে দীপক বাদামী হায়নাকে ধাওয়া করে জনতে পারে এক নির্মম সত্য। দীপক ও রতনলালকে আর একবার মানুষের মননে বাঁচিয়ে তোলা এবং অমর করে রাখার জন্যই এই প্রচেষ্টা।
“দীপক চ্যাটার্জির ভূমিকায় অভিনয় করতে পারব ভেবে আমি দারুণ আনন্দিত,” মহরতে বললেন আবীর।
দেবালয় জানালেন, “পাল্প এবং থ্রিলের সংমিশ্রণে তৈরি এমন এক বাঙালি চরিত্রকে নিয়ে কাজের সুযোগ পাওয়া বড় কথা। এটা বাংলার প্রথম অ্যাকশনধর্মী গোয়েন্দাকাহিনি নির্মাণেরও সুযোগ বটে।”
কালীপুজোয় মুক্তি পেতে পারে ‘শ্রীস্বপনকুমারের বাদামী হায়নার কবলে’।
ছবি: RBN আর্কাইভ