‘চলতি হাওয়ার পন্থী আমি কোনওদিনই ছিলাম না’

১৯৯২ সাল। প্রথম অ্যালবাম ‘তোমাকে চাই’। বদলে গেল বাংলা গানের খোলনলচে। কথা, সুর সবই ছকভাঙা। একটা গোটা প্রজন্ম বেড়ে উঠল তাঁর গানে। মন খারাপ করা বিকেলেই হোক, বা গড়িয়াহাটার মোড়েই হোক, কবীর সুমন (তখন সুমন চট্টোপাধ্যায়) মানেই একটা বিপ্লব। বেপরোয়া কথা বলতে কোনওদিনই পিছপা হননি। বিতর্কিত মন্তব্যে ক্ষতবিক্ষতও হয়েছেন বহুবার। জন্মদিনে রেডিওবাংলানেট-এর সঙ্গে একান্ত সাক্ষাৎকারে মন খুলে কথা বললেন গানওলা। সঙ্গীত থেকে রাজনীতি হয়ে বাংলা খেয়াল, বাদ গেল না কিছুই।

নতুন দুটো ছবিতে সুর করলেন আপনি সেই কথা দিয়েই শুরু করা যাক ‘শঙ্কর মুদি’র সুর করতে গিয়ে কিরকম চিন্তাভাবনা ছিল?

সব কাজেরই একটা নিজস্ব ধরণ থাকে। ছবির গল্পই ঠিক করে দেয় তার গান কেমন হবে। যে কোনও ছবি আসলে পরিচালকের ছবি। আমার কাজ হল সেই ভাবনাটাকে গানের ক্ষেত্রে কাজে লাগানো। সেটাই করেছি আমি। হয়ত একটু বেশিই করেছি। শঙ্কর মুদিতে অত গান ছিল না। ছবিতে একটি বহুরুপীর চরিত্র আছে। আমার মনে হয়েছিল তার মুখে কিছু মন্তব্যমূলক গান দিলে ভালো লাগবে। আবার যেমন মুদির দোকান থেকে আমরা সবাই বাকিতে জিনিস কিনি। ধরো এমন কেউ যদি মারা যায়, যে বাকিতে জিনিস কিনত, সেক্ষেত্রে কি হবে? সেখানে গান আসছে, ‘চলে গেলে নাম কাটা যায় মুদির খাতায়।’ এরকমই তো হয়, নাম কাটা যাওয়া ছাড়া আর কিছুই হয় না। আবার যেরকম পাড়ায় একটা অটো স্ট্যান্ড ছিল। সেখানে একটা শপিং মল তৈরি হল। এতগুলো মানুষ পার্টির মর্জির কাছে বলি হল। সেখানেও বহুরুপীর গলায় একটা ছোট গান থাকছে। তারপর সব দেখে অনিকেত (চট্টোপাধ্যায়, পরিচালক) বললেন, শুরুতে একটা গান চাই। আবার শেষেও একটা লিরিকাল ব্যাপার থাকছে। এরকম করে সতেরোটা গান থাকছে শঙ্কর মুদি-তে। ছবিটা সামাজিক-রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে তৈরি। সেটা কিন্তু বিক্ষোভ বা বিপ্লবের রাজনীতি নয়। যেভাবে মানুষের জীবন চলে, সেভাবেই রাজনীতিও চলছে এরকমই দেখা যাবে।

যে জন থাকে মাঝখানে

আর একটা ছবিতেও সম্প্রতি সুর করলেন, ‘হবুচন্দ্র রাজা গবুচন্দ্র মন্ত্রী’। এই ছবিটা কি ছোটদের জন্য?

শুধু ছোটদের জন্য নয়, ছোটবড় সকলের ভালো লাগবে ছবিটা। রূপকথা নিয়ে ছবি তো এখানে হয়ই না। এটা ঠাকুরমার ঝুলি, ঠাকুরদার ঝুলির কিছু গল্প মিলিয়ে করা হচ্ছে। চিত্রনাট্যটা খুব সুন্দর। বাচ্চাদের নিয়ে অনেকগুলো গান থাকছে। ছবির প্রথম গানটাই বাচ্চারা গেয়েছে। এছাড়া অন্য গানও আছে। প্রতীক চৌধুরীর জীবনের শেষ গান থাকছে এই ছবিতে। ওঁর গলা কেউ সেভাবে ব্যবহারই করতে পারল না। শঙ্কর মুদি আর হবুচন্দ্র রাজা দু’জায়গাতেই ওঁর গলায় কয়েকটা গান রয়েছে। কিছু ছোট-ছোট চার লাইনের গান, আর একটা বড় গান থাকছে। খুবই খারাপ লাগছে ভাবতে প্রতীক এভাবে চলে গেল। ওকে দিয়ে গান গাওয়ানোটা আমার বদান্যতা নয়, বরং আমার প্রয়োজনটা প্রতীক ঠিকঠাক মেটাতে পেরেছেন, এটাই আসল কথা। খুব ভালো লাগবে যদি দুটি ছবিই প্রতীকের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে উৎসর্গ করা হয়।

১৯৯৭-তে ‘সেদিন চৈত্রমাস’ মুক্তি পেয়েছিল সেই ছবিতে আপনার সুর শ্রোতাদের এখনও মনে আছে এরপরে আপনার মনে রাখার মত কাজ ২০১৪-তে ‘জাতিস্মর’ ছবির সুরকার হিসেবে দর্শক বা শ্রোতাদের মনে ছাপ ফেলতে এতটা সময় লাগল কেন?

ছবিতে সুর করার জন্য কেউ আমাকে নেয় না, তাই। মাধবী মুখোপাধ্যায় পরিচালক হিসেবে তাঁর প্রথম ছবিতে আমাকে নিয়েছিলেন। কিন্তু সেটা ছিল এনএফডিসি’র ছবি। এসব ছবি হলে চালানো মুশকিল। ফলে ভালো হওয়া সত্বেও ছবিটা চলল না। হল মালিকরাই বা টাকা না পেলে ছবি চালাবে কেন? আর আমাকে কেউ ডাকে না কেন, সেটা তো আমার জানার কথা নয়। হয়ত আমার নাকটা খুব বিচ্ছিরি, কিংবা হয়ত আমার দাড়িটা সবুজ নয়। সঠিক কারণটা ফিল্ম লাইনের লোকেরাই বলতে পারবেন।

তিন মূর্তি ও পায়ের তলায় সরষে

একটা সময় তো আপনি সক্রিয়ভাবে রাজনীতিতে ছিলেন রাজনীতির ছাপ পড়ে গিয়েছিল বলেই কি ছবির কাজ এল না?

আমি তো গণ আন্দোলনের লোক ছিলাম। চিরকালই তাই। কোনও পার্টির লোক তো আমি ছিলাম না। আমাকে অনেক করে অনুরোধ করা হয়েছিল ভোটে দাঁড়াবার জন্য, তাই আমি দাঁড়িয়েছিলাম। আমি চিরকালই গণ আন্দোলনের পথে হেঁটেছি। শাসকদলের সঙ্গে থেকেও তাদের বহু কাজের প্রতিবাদ করেছি আমি। জঙ্গলমহলের সময় আধাসামরিক বাহিনীর অত্যাচারের বিরুদ্ধে কথা বলেছি আমি। চলতি হাওয়ার পন্থী আমি কোনওদিনই ছিলাম না। তাই আমাকে অনেকেই পছন্দ করতেন না। আমি তো সেই অর্থে কখনওই কোনও পার্টির লোক ছিলাম না। যে কাজগুলো পেয়েছি সেটা আর কেউ পারবে না। আমি পারতাম বলেই পেয়েছি। জাতিস্মরের ওই কবিগানের সুর দেওয়া, এটা আর কারোর পক্ষে সম্ভব ছিল না। গিটার নিয়ে ‘অঞ্জনা কেন এল না’ গেয়ে দিতে তো অনেকেই পারে।

জাতিস্মরের কাজটা করতে কতটা সময় লেগেছিল?

আমি খুব তাড়াতাড়ি কাজ করতে পারি। আমার স্বভাবই এরকম। মাত্র সাত-আট দিনের মধ্যে আমি সবকটা গানের সুর করে ফেলেছিলাম। গানের কথাগুলো আমাকে সরবরাহ করেছিলেন পরিচালক সৃজিত মুখোপাধ্যায়। সেখানে আমার কোনও কৃতিত্ব ছিল না। আমার লেখা কিছু গান ছিল যেমন ‘সহসা এলে কি’, বা ‘এ তুমি কেমন তুমি’ এগুলো আমার লেখা আর সুর করা। কিন্তু আগেকার যে সব কথা নিয়ে গান তাতে আমি শুধু সুর করেছিলাম। সেগুলো করতে আমার বেশি সময় লাগেনি। এই শঙ্কর মুদির সুরও করেছি দিন দশেকের মধ্যেই।

শব্দ যখন ছবি আঁকে

কিন্তু সেই সময়ে কিরকম সুর হত, সেটা নিয়েও তো পড়াশোনা করতে হয়েছিল নিশ্চয়ই?

এটা পড়ার ব্যাপার নয়। শুধু শোনার ব্যাপার। এটার ভেতরে তোমাকে থাকতে হবে।  মনে রেখ, ১৯৬৬ সালে আমি আকাশবাণীতে বি-হাইগ্রেড রবীন্দ্রসঙ্গীত ও আধুনিক গানের শিল্পী হিসেবে আত্মপ্রকাশ করি। তখন আমার বয়স ১৭। এমন কোনও আঙ্গিকের গান নেই যা আমি শুনিনি। আমি প্রচুর গান শুনতাম। তখন শোনার চলটা ছিল। আমরা স্পঞ্জের মত সব ভেতরে নিতাম। নাহলে জাতিস্মরে ওই সুর করা সম্ভব নয়। আমার নিজের গানের সুর করাও সম্ভব হত না। কীর্তন, শ্যামাসঙ্গীত, বাংলার বিভিন্ন প্রান্তের গান, তোমাকে শুনতেই হবে। না শুনলে সুর আসবে কোথা থেকে? এইসব শোনার ফলে যেটা হয়েছে—খুব আশ্চর্য ঘটনা—হাতে যখন লেখাগুলো পেলাম তখন মনে হচ্ছে, আরে এ তো আমারই লেখা। সুর করতে আমার পাঁচ মিনিটও লাগছে না। এই যে গানটা ‘শোনো হে অ্যান্টনি তোমায় একটা কথা কই…” (গেয়ে শোনালেন), ভাবতে পারো এই গান সেই কবে লেখা হয়েছে? তিনশো বছর আগে একটা লোক লিখে গিয়েছে, অথচ আজ সেটা পড়ে আমার মনে হচ্ছে, এ তো আমারই কথা। আমি তো পুরনো দিনের এক প্রাচীন দেশের প্রাচীন মানুষ। আমি মনে করি এ গুরুর কৃপা ছাড়া সম্ভব নয়। একটাই জিনিস, শুধু শোনা, শুনে যাওয়া। শোনা ছাড়া অন্য কোনও পথ নেই। আজ একটাও ভালো গান হচ্ছে না, কারণ শোনাটাই নেই। কেউ শোনে না ভাই। তাই গান আর হবে না।

সত্যজিৎ ও রেলভূত

জাতীয় পুরস্কারটা পাবেন ভেবেছিলেন?

ধুর না, ওসব কিছু ভাবিনি। (হেসে) তবে ওটা পেয়ে খুব মজা লেগেছিল। প্রথমত পঞ্চাশ হাজার টাকা পেয়েছিলাম। সেটা তখন আমার খুব কাজে লেগেছিল। আর তারপরের ভালো লাগা ছিল সৃজিতের কথা ভেবে। আমাকে নেওয়ার জন্য ওকে অনেকের সঙ্গে লড়তে হয়েছে, অনেক বাধা এসেছে। সুমন মানেই মাওবাদী, মুসলমান, কেউ নেয় নাকি! কত লড়াই যে ওকে করতে হয়েছে আমার জন্য। জাতীয় পুরস্কারটা যেদিন ঘোষণা হল, সেদিন আমি টেলিভিশনে একটা ইন্টারভিউ দিতে যাচ্ছিলাম। গাড়িতে ছিলাম, সেই সময় সৃজিতের ফোন এল। বলল, ‘সুমনদা, আমার সেই মুখগুলো মনে পড়ছে যারা এমন কোনও খারাপ কথা নেই যা তোমার নামে বলেনি, যারা চায়নি আমি তোমাকে দিয়ে কাজটা করাই।’ সৃজিত আমার ছেলের মত। না, ও আমার ছেলেই। তবু সে আমাকে সুমনদা বলে। আমারও সেদিন অনেকের কথা মনে পড়েছিল।

আপনি বরাবরই প্রতিষ্ঠান বিরোধী কথা বলে এসেছেন সেটাই কি আপনাকে অনেকের কাছে অপ্রিয় করে তুলেছিল? আপনার ভক্ত প্রচুর, আবার আপনাকে পছন্দ করে না এমন মানুষের সংখ্যাও অনেক রাস্তাঘাটে বেরোলে কেমন প্রতিক্রিয়া পান মানুষের থেকে?

সবই জানি। নতুন করে কিছুই জানার নেই। প্রথম কথা হচ্ছে চট্টোপাধ্যায় ছিলাম, নাম পাল্টালাম। এটাই তো বহু লোকের রাগ। আর রাস্তায় বেরোলে সামনে থেকে কেউ আমাকে অসন্মান করবে এমন সাহস কারোর নেই। বুড়ো হতে পারি, কিন্তু এটুকু সন্মান পাওয়ার যোগ্যতা আমার আছে। কারণ আমি কখনও অন্যায় কাজ করিনি। আমি সাংসদ ছিলাম। নিজের কাজটুকু করে তারপর যা বলার বলেছি। তাই আমাকে কিছু বলার হিম্মত কারোর নেই। তবে ভেতরে ভেতরে কি যেন একটা পাকাচ্ছে সেটা বুঝতে পারি। কি সেটা আমার জানা নেই। দেখো, সোজা কথায় লোকে কোনওকালেই আমাকে তেমন পছন্দ করত না। যখন আমার প্রথম অ্যালবামটা বেরোয় তার এক বছরের মধ্যে শাসক দল একটা লোককে দাঁড় করালো যে বিভিন্ন সভায় গিয়ে স্লোগান দিত ‘তোমাকে চাই, চাই না’ বলে। তিনি অবশ্য এখন রং বদল করেছেন। তো এসব বরাবরই হয়ে এসেছে (হাসি)।

তাশি গাঁওয়ে একদিন

আপনি একটা নতুন ধারার প্রচলন করলেন বাংলা গানে এককভাবে গান লেখা, সুর করা, গাওয়া, যন্ত্রানুসঙ্গ এবং রেকর্ডিংও সামগ্রিকভাবে আপনি একাই সবটা করতেন এই ধারাটা কি আর কেউ ধরে রাখতে পেরেছে, বা এখন আর এই ধারায় গান গাওয়া হচ্ছে বলে মনে হয় আপনার?

একেবারেই না। কারণ তার জন্য তো গানটা জানতে হবে। মিউজ়িকটা তো শিখতে হবে। গিটার বাজিয়ে তুই কেন কি যেন করলি, এসব বলে তো আর গান হয় না। ওসব করে ফেসবুকে নাম হবে, গান হবে না। সুর বুঝতে হবে, গানটা শিখতে হবে। ওসব কে করবে এখন?

বাংলা খেয়াল নিয়ে কাজ করছেন এটা কিভাবে শুরু হল?

বাংলা খেয়াল হল আমার জীবনের সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ কাজ। সেই কাজটাই করছি আমি। এই তো ৭১ বছর হয়ে গেল আজ। এতদিনে এমন একটা কাজ করছি যা আমাকে আনন্দ দিচ্ছে। বাংলায় এক সময়ে কিন্তু খেয়াল হত। এখন আর হয় না। আমি ছোটবেলা থেকে হিন্দুস্থানী খেয়ালে প্রশিক্ষণ নিয়েছি। পরে আধুনিক গানে চলে এসেছিলাম। এখন বিভিন্ন রাগরাগিণীতে বাংলায় বন্দিশ লিখছি, সুর করছি। আমার কিছু ছাত্রছাত্রী আছেন। তারা খুব আনন্দ করে শিখছেন। নবীনের দলকে কিছু দিয়ে যেতে পারছি, এটাতেই আমার আনন্দ। এটা আমার জীবনের শেষ কাজ আর সবচেয়ে গুরত্বপূর্ণ কাজ।

রক্তবরণ মুগ্ধকরণ

খেয়ালের বন্দিশ তো হিন্দীতেই লেখা হয়ে থাকে বাংলায় খেয়াল গাইবার কথা ভাবলেন কেন?

বাংলায় খেয়াল কিন্তু অনেক আগে থেকেই ছিল। আচার্য সত্যকিঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায় বাংলায় খেয়াল গাইতে চেয়েছিলেন। আকাশবাণীতে তিনি গাইতে গিয়ে বাধা পান, পরে জোর করে গেয়েছিলেন। আসলে বাংলা খেয়ালের তো সর্বভারতীয় বাজার নেই। তাই বোধহয় এটা সেভাবে গাওয়া হয়নি।

বাংলা খেয়াল গাইতে অনুষ্ঠানে ডাক পান কখনও?

খুব কম। ভারতের আট-ন’টি ভাষায় খেয়াল হচ্ছে। তাহলে বাংলায় হবে না কেন? ভোজপুরী, মুলতানি, পাঞ্জাবি, মারাঠি, গুজরাতি, হিন্দী, এতগুলো ভাষায় হলে বাংলায় হবে না কেন? হয়েছে তো। স্বামী বিবেকানন্দ বাংলায় খেয়াল গাইতেন। সত্যকিঙ্করের বই আছে বাংলা বন্দিশের। আর একটা জিনিস, পুরনো দিনের কথা দিয়ে কিন্তু এখন আর গান হতে পারে না। রাধার কথা, শাশুড়ি-বউয়ের কথা দিয়ে এককালে বন্দিশ  লেখা হত। কিন্তু এখন তাকে সমসাময়িক করতে হবে। নাহলে নতুন প্রজন্ম তাকে নেবে না। এটা হয়নি বলেই বাংলায় খেয়াল চলেনি। আমি এই কাজটাই করছি। আসলে আমার নাম শুনলেই লোকে ভাবে লোকটা আধুনিক গাইবে। আমি যে খেয়ালও গাইতে পারি সেটা তো কেউ ভাবতেই পারবে না।




কিন্তু কলকাতায় তো প্রচুর শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের অনুষ্ঠান হয় সেখানেও কি ডাকে না?

ক্ষেপেছ! বাংলা খেয়ালকে ওরা সুযোগ দেবে? তাহলে ওদের স্কুলগুলোর চলবে কি করে? দেখো, চুনী গোস্বামী ছিলেন ফুটবলের রাজা। তিনি কিন্তু ক্রিকেটেও বাংলা রঞ্জি দলকে নেতৃত্ব দিয়েছেন। আধুনিক গান থেকে খেয়ালে আসতে অসুবিধা কোথায়? কিন্তু তার জন্য তো শুনে দেখতে হবে। আমি তো ওস্তাদ আমির খানের মত গাইব না। কিন্তু লোকে এটা তো বুঝুক যে লোকটা আমাকে ঠকাচ্ছে না। যেটা গাইছে সেটা ঠিক গাইছে। কিন্তু সেই সুযোগটা কে দেবে? যাই হোক, আমি খুব আনন্দে আছি এই কাজটা করতে পেরে।

যখন সক্রিয়ভাবে রাজনীতিতে এলেন, তখন গানটা কি অবহেলিত হয়নি?

হ্যাঁ সেটা হয়েছিল। ২০০১-এর পর আমার আর কোনও অ্যালবাম বেরোয়নি। তার কারণ হল যে একজন ক্যাসেট বা সিডি কিনলে তার থেকে বাকিরা কপি করে নিচ্ছে। কোনওভাবেই এটাকে আটকানো যায় না। ফলে সেই দিনগুলো চলে গেল। এখন যেমন ইউটিউবে একটা গান দেওয়া হয়। সেজেগুজে দাঁড়িয়ে একটা গান গাওয়া। সবাই সেটা বিনা পয়সায় শুনছে। তাছাড়া এখন তো গান হয়না, কিছু কথা বলা হচ্ছে গিটার বাজিয়ে। ওটা গান নয়, প্রলাপ। মাথামুণ্ডুহীন পাগলামি হচ্ছে। এখন তো সবাই গায়ক, সবাই গিটার বাজায়, সবাই সব জানে। কি হচ্ছে কেন হচ্ছে কিছুই মাথায় ঢোকে না।

Amazon Obhijaan



Like
Like Love Haha Wow Sad Angry
311

Swati

Editor of a popular Bengali web-magazine. Writer, travel freak, nature addict, music lover, foody, crazy about hill stations and a dancer by passion. Burns the midnight oil to pen her prose. Also a poetry enthusiast.

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *