প্রেমের পাপে
গত কয়েকদিনে সকলেরই প্রায় খবরটা জানা হয়ে গেছে। শ্রীদেবী তনয়া জাহ্নবী কাপুর ও ইশান খট্টর, প্রযোজক-পরিচালক করণ জোহরের ছবি ধড়ক-এর শ্যুটিং করে গেলেন কলকাতায়। ছবির কাহিনী মারাঠি ছবি সাইরাত থেকে অনুপ্রাণিত। খবরটা পড়েই কৌতূহলী হয়ে ছবিটা দেখে ফেললাম। অনার কিলিং নিয়ে গল্প। দুটি ছেলেমেয়ে, যাদের আর্থ-সামাজিক পটভূমি ভিন্ন, একই কলেজে পড়ার দরুণ একে অপরকে ভালবাসে। যথারীতি দুজনের বাড়িতেই তাদের সম্পর্ক মেনে নেয় না। পরিস্থিতির চাপে দুজনে ঘর ছাড়ার সিদ্ধান্ত নেয়। আলাদা শহরে এসে ঘর বাঁধে তারা। এরপর নানান ঘটনার মধ্যে দিয়ে সময় বয়ে চলে। কিছুদিন পরে তাদের একটি ছেলে হয়। ছেলেটি যখন একটু বড় হয়ে ওঠে, তখন হঠাৎ একদিন মেয়েটির বাড়ির লোকজন তাদের খোঁজ পেয়ে সেখানে এসে দুজনকেই খুন করে, বাড়ির অমতে অন্য সম্প্রদায়ের ছেলেকে বিয়ে করার অপরাধে।
অর্থাৎ এত করেও শেষরক্ষা হয়না। পরিবারের অমতে নিজেদের জীবনের সিদ্ধান্ত নেবার মূল্য দিতে হয় দুটি মানুষকে।
দেখতে দেখতে মনে পড়ল কিছুদিন আগে NH10 নামে একটা ছবি দেখেছিলাম এই একই বিষয়ে। এক শহুরে দম্পতি ঘটনাচক্রে এমন এক পরিস্থিতির শিকার হয় যেখানে একটি গ্রামের দুটি ছেলেমেয়েকে ভালবাসার অপরাধে খুন করা হচ্ছে। বাধা দিতে গেলে পরিস্থিতি ভয়াবহ হয়ে ওঠে। এমনকি পুলিশও কোনও সাহায্য করতে এগিয়ে আসে না। ইন্টারনেট ঘেঁটে দেখলাম একের পর এক ছবি হয়েছে এই বিষয় নিয়ে, যার মধ্যে আক্রোশ (২০১০), খাপ (২০১১), রামলীলা (২০১৩), এবং অনার কিলিং (২০১৫) অন্যতম।
কিন্তু কেন? প্রেমের পাপে মৃত্যুর ছবিটা বাস্তবে কেমন? সেটা জানাতেই এই লেখা।
২০০০ সালের একটি সমীক্ষা অনুযায়ী প্রতি বছর ভারতে ৫,০০০ জনেরও বেশি ছেলেমেয়েকে খুন করা হয় অনার কিলিং-এর নামে। এই সংখ্যা শুধুমাত্র সেইসব ঘটনার যেগুলো জানা যায় বা সংবাদমাধ্যমের কানে পৌঁছয়। এর বাইরেও এমন বহু ঘটনা ঘটে যা হয়তো আমাদের অগোচরেই থেকে যায়। বেশীরভাগ ক্ষেত্রে খুন হয় মেয়েরাই, অর্থাৎ কন্যা, বোন বা পরিবারের অন্য কোনও মহিলা সদস্য। কিন্তু সবক্ষেত্রেই কি ভিন্ন সম্প্রদায়ের সঙ্গে বৈবাহিক সম্পর্ক স্থাপন করলেই অনার কিলিং-এর শিকার হতে হয়, নাকি অন্য কারণও আছে?
অনার কিলিং অর্থাৎ সম্মানরক্ষার্থে খুন। যেখানে কেউ কোনও পরিবার অথবা কোনও সম্প্রদায় বা গোষ্ঠীর বেঁধে দেওয়া নিয়মের বাইরে পা রাখার সাহস দেখায়, তখনই শাস্তিস্বরূপ তার মৃত্যুদণ্ড ঘোষণা করেন তার নিজের পরিবারেরই কেউ, যেমন বাবা, কাকা, দাদা প্রভৃতি, অথবা কোনও গোষ্ঠীপ্রধান।
অন্ধকারের দেবী
অনার কিলিং মূলত তিন-চারটি কারণের ক্ষেত্রে ঘটে থাকে।
প্রথমত, বাড়ির মেয়েদের এমন কোনও পোশাক পরা বা এমন কোনও কাজ করা যা তার পরিবার বা সম্প্রদায় অনুমোদন করে না। বাধা দেয়া সত্বেও মেয়েটি তার আচরণ না পাল্টালে তাকে খুন করে সমস্যার সমাধান করা হয়ে থাকে। দ্বিতীয়ত, বাড়ির মতে বিয়ে করতে না চাওয়া অথবা বাড়ির অমতে নিজের পছন্দের কাউকে বিয়ে করতে চাওয়া, সে হয়তো ভিন্ন সম্প্রদায় বা ধর্ম অথবা ভিন্ন সামাজিক প্রেক্ষাপটের কেউ হতে পারে। এটাই অনার কিলিং-এর সবচেয়ে বড় কারন। এক্ষেত্রেও বেশীরভাগ মেয়েদের ওপরেই শাসনের খাঁড়া নেমে এলেও অনেকক্ষেত্রে ছেলেদেরও খুন করা হয়ে থাকে। তৃতীয়ত, বিবাহ বহির্ভূত কোনও সম্পর্ক থাকলে অথবা সেই সংক্রান্ত সন্দেহে স্ত্রী বা স্বামীকে খুন হতে হয়। আমাদের চারপাশেই এমন ঘটনা মাঝে মাঝেই ঘটে থাকে। এবং চতুর্থত, সমকামিতার অপরাধে এখনও ভারত, পাকিস্তান ও মধ্যপ্রাচ্যের অনেক দেশে খুন করা ও করানো হয়ে থাকে।
অনার কিলিং যে শুধু গ্রামাঞ্চলেই হয় এমন ভাবার কোনও কারণ নেই। শহরে ও যথেষ্ট শিক্ষিত পরিবারেও প্রায়শই এমন ঘটনা ঘটে । কিছু ঘটনার উদাহরণ দেওয়া যাক।
১৭ বছরের তরতাজা মেয়ে শাফিলিয়া আহমেদ। পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ পরিবারে তার জন্ম। বাবা ইফতিকার ও মা ফরজানা। ওয়ারিংটন, চেশায়ারের বাসিন্দা। ইফতিকার ও ফরজানার পছন্দের ছেলেকে বিয়ে করতে রাজি না হওয়ায় বাবা মা’র হাতে খুন হতে হয় শাফিলিয়াকে, তার ছোট দুই ভাইবোনের সামনে। ২০০৩ সালে।
মন আজ ঈষৎ ভারাক্রান্ত
দিল্লির মেয়ে ২১ বছরের ভাবনা ছিল রাজস্থানের যাদব সম্প্রদায়ের, অন্যদিকে ২৪ বছরের অভিষেক ছিল পাঞ্জাবি। বাড়ি থেকে কোনওভাবেই তাদের সম্পর্ক মেনে নেবে না জেনেই দুজনে আর্য সমাজে গিয়ে বিয়ে করেন। বিয়ের পর ভাবনার বাড়িতে মেয়েকে ডেকে পাঠানো হয় এই মর্মে যে তাদের ভুল ক্ষমা করে দেওয়া হয়েছে, বাড়ি থেকে আবার ধুমধাম করে তাদের বিয়ে দেওয়া হবে। কিন্তু বাড়ি ফেরার পর ভাবনাকে গলা টিপে খুন করেন তার বাবা ও মা। ২০১৪ সালের ঘটনা।
আই এ এস অফিসারের ছেলে, নামী বেসরকারী সংস্থায় কর্মরত, নীতিশ কাটারা ২০০২ সালে খুন হন উত্তরপ্রদেশের রাজনীতিবিদ ডি পি যাদবের ছেলে বিকাশ যাদবের হাতে। কারন বিকাশের বোন ভারতীর সঙ্গে নীতিশের প্রণয়ের সম্পর্ক ছিল বহুবছর ধরে। নীতিশ ও ভারতীর এক বন্ধুর বিয়ের রাতে, হাইওয়ের ওপর ডেকে নিয়ে গিয়ে, প্রথমে হাতুড়ি মেরে ও পরে গায়ে ডিজেল ঢেলে অগ্নিসংযোগ করে খুন করা হয় নীতিশকে। সারা দেশ তোলপাড় হয়ে যায় এই হত্যায়।
১৯৯৫ সালের ২ জুলাই দিল্লিতে ঘটে যাওয়া বিখ্যাত তন্দুর হত্যাও সন্মানরক্ষার্থে খুনের আরও একটি উদাহরণ। তৎকালীন রাজনৈতিক নেতা সুশীল শর্মা, তার স্ত্রী নয়না সাহানি শর্মাকে, জনৈক মতলুব করিমের সঙ্গে পরকীয়ার অপরাধে গুলি করে খুন করেন। সুশীল পরে তার স্ত্রীর দেহ টুকরো টুকরো করে কেটে একটি রেস্তোঁরার তন্দুরের মধ্যে ফেলে দেন। ২০১৩ সালে সুপ্রিম কোর্ট সুশীলকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডিত করে।
২০১৬ সালের মার্চ মাসে তামিলনাড়ুর তিরুপর জেলায় বড় রাস্তার ওপর দিনের আলোয় ২২ বছরের দলিত যুবক শঙ্করকে অনেকে মিলে ঘিরে ধরে জবাই করে হত্যা করে। উচ্চবংশজাত কৌশল্যাকে বিয়ে করার অপরাধে মেয়েটির বাবা এই খুন করিয়েছিলেন। ২০১৭ সালের ডিসেম্বর মাসে তামিলনাড়ুর হাইকোর্ট কৌশল্যার বাবা সমেত ছয়জনকে মৃত্যুদণ্ড দেয়।
শব্দ যখন ছবি আঁকে
পড়শি দেশ পাকিস্তানের পেশোয়ারে আবদুল গনি নামে এক ব্যক্তি তার দুই মেয়ে শামিম (২০) ও নৌরিনকে (১০) হত্যা করেন এই অপরাধে কারণ তারা নিজেদের ইচ্ছেমতো ঘোরাফেরা করতো, এবং তাদের এই স্বেচ্ছাচারিতা তাদের পিতাকে লজ্জায় ফেলতো। ঘটনাটি গত বছর সেপ্টেম্বর মাসের।
তবে সম্মানরক্ষার্থে খুনের সব নজির বোধহয় ছাপিয়ে গেছে পাকিস্তানের করাচির আরও একটি ঘটনা। ১৮ বছরের গনি রেহমান ও ১৫ বছরের বাকতাজাকে এক রাতে তাদের পরিবারের লোকেরা ঠাণ্ডা মাথায় খুন করে। অপরাধ, একই পাড়ায় একসঙ্গে বড় হয়ে ওঠা প্রতিবেশী গনি ও বাকতাজা একে অপরকে ভালবেসে বিয়ে করেছিল। যথারীতি বাড়ি থেকে তাদের ডেকে পাঠানো হয় এই বলে যে তাদের ক্ষমা করে দেওয়া হবে ও পরিবার থেকে আবার বিয়ের ব্যবস্থা করা হবে। সরল মনে বাড়ি ফিরে আসে তারা।
কিন্তু বাড়ি ফেরার পর বিয়ে দেয়া দূরে থাক, বাড়ির লোকজন তাদের ‘মৃত্যুদণ্ড’ ঘোষণা করে। ঠাণ্ডা মাথায় একই দিনে দুজনের বাড়িতে আলাদাভাবে দুজনকে হাত পা বেঁধে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট করে মেরে ফেলা হয়। সবটাই করা হয় আগে থেকে তাদেরকে জানিয়ে। শেষবারের মতো বাড়ির সকলের সঙ্গে বসে রাতের খাবারও খেতে বলা হয় গনিকে। যদিও সেদিনকার খাবার তার গলা দিয়ে নামেনি, কারণ সে জানতো আর কিছুক্ষণ পরেই তার নিজের আব্বা ও চাচা তার জীবন শেষ করে দেবে। সবচেয়ে সহজ হাতিয়ার, বাড়ির ভেতরে থাকা খোলা বিদ্যুতের তার, যার ছোঁয়া কিশোরী বাকতাজা মাত্র দশ মিনিট সহ্য করতে পেরেছিল। গনির প্রাণ যেন তাতেও বেরোতে চাইছিল না। বিদ্যুতের ছোঁয়ায় শরীরের মাংস পুড়তে শুরু করলেও ছটফট করে যাচ্ছিল দেহটা। অবশেষে গনির কাকা দয়া করে তাকে গলা টিপে শ্বাসরুদ্ধ করে তার জীবনলীলা সাঙ্গ করে দেন। দুজনকে তাদের বাড়ির সামনের মাঠে কাছাকাছির মধ্যেই সমাধিস্থ করা হয়। এই ঘটনাও গত বছরের। এখনও পর্যন্ত শাস্তি হয়নি কারোর।
আমার মুক্তি আলোয় আলোয়
ফিরে আসি ভারতে। মিডিয়া কাঁপানো আরুশি তলওয়ার হত্যা মামলা। ২০০৮ সালে নয়ডাতে ঘটে যাওয়া এই ঘটনায় এখনও অবধি যা বোঝা গেছে তাতে একে সন্মানরক্ষার্থে খুন বলেই মনে করা হয়। ১৩ বছর বয়সী আরুশিকে মে মাসের এক সকালে মৃত অবস্থায় তার ঘরে পাওয়া যায়। প্রথম অবস্থায় পরিচারক হেমরাজকে সন্দেহ করা হলেও পরেরদিন যখন ছাতে তার বিকৃত মৃতদেহ পাওয়া যায় তখন সন্দেহের তির ঘুরে যায় আরুশির বাবা মা চিকৎসক দম্পতি রাজেশ ও নূপুর তলওয়ারের দিকে। পুলিশের দাবি ছিল আরুশি ও হেমরাজকে আপত্তিকর অবস্থায় দেখে রাজেশ ও নূপুর দুজনকেই একইভাবে গলা কেটে খুন করেন। যদিও আদালতে এখনও পর্যন্ত কিছুই প্রমাণিত হয়নি। ২০১৭ সালে এলাহাবাদ হাইকোর্ট আরুশির বাবা মাকে বেকসুর খালাস ঘোষণা করে। সিবিআই সুপ্রিম কোর্টে আপিল করবে বললেও এখনও তা করেনি। তবে হেমরাজের স্ত্রী যদি সর্বোচ্চ আদালতে যেতে চান তাহলে দেখা যাবে কোথাকার জল কোথায় গড়ায়।
সত্যজিৎ ও রেলভূত
সবশেষে কলকাতার একটি চাঞ্চল্যকর অনার কিলিং-এর ঘটনার কথা স্মরণ করা যাক। ২০০৭ সালের ২১ সেপ্টেম্বর পাতিপুকুর রেললাইনের ওপর থেকে উদ্ধার হয় পার্ক সার্কাসের রিজওয়ানুর রহমানের দেহ। শুরুতে কারণ বোঝা না গেলেও পরে জানা যায় বেশ কিছুদিন ধরেই খুনের হুমকি পাচ্ছিলেন রিজওয়ানুর। শহরের নামী ব্যবসায়ী অশোক টোডির মেয়ে প্রিয়াঙ্কাকে বিয়ে করার অপরাধে অবশেষে খুন হতে হয় তরুণ গ্রাফিক ডিজাইনার রিজওয়ানুরকে। অনেকভাবে বিয়ে ভাঙার চেষ্টা করেছিলেন প্রিয়াঙ্কার বাবা। বিপদ আঁচ করে পুলিশের দ্বারস্থ হয়েও কোনও সাহায্য পাননি রিজ-প্রিয়াঙ্কা। শেষ পর্যন্ত যা হয় এইসব ক্ষেত্রে, পুরো মৃত্যু রহস্যটাই আত্মহত্যার নাম দিয়ে চালিয়ে দেওয়া হয়। বিভিন্ন মহলে প্রচুর চাপানউতোর চলে সেই সময় এই ঘটনা নিয়ে। গোটা শহরের জনগনের ওপর প্রবল প্রভাব বিস্তার করেছিল এই মৃত্যু। মোমবাতি হাতে পথে নেমেছিলেন আম বাঙালি। যদিও তাতে রহস্যের সমাধান হয়নি। সময়ের গভীরে চাপা পড়ে গেছে হতভাগ্য রিজওয়ানুরের নাম।
এ সবই সন্মানরক্ষার্থে খুন-এর বিভিন্ন উদাহরণ। যুগ যুগ ধরে চলে আসছে শাসনের নামে এই বর্বরতা। বংশমর্যাদা আর ঐতিহ্যের এমনই অহঙ্কার যে তার এতটুকু বিচ্যুতিতে পিতামাতা নিজের সন্তানকেও ক্ষমা করেন না। হাত কাঁপে না নিজের আদরের পুত্র বা কন্যাকে খুন করতে। কত দূর বেপরোয়া ও নিষ্ঠুর হলে শুধু সন্মানহানির কারণে একজন আর একজনকে নির্মমভাবে হত্যা করতে পারে তা সুস্থ মস্তিষ্কের মানুষের দ্বারা বোঝা অসম্ভব। শুধু ভারত-পাকিস্তান বা মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতেই নয়, বিদেশের নানান দেশ যেমন ডেনমার্ক, ফ্রান্স, বেলজিয়াম, জার্মানি, সুইটজারল্যান্ড, ইতালি, ব্রাজিল, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, এমনকি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রেও এই ধরণের হত্যার ঘটনা ঘটে থাকে। প্রণয়ের অপরাধ ছাড়াও পরকীয়া ও সমকামিতার কারণে খুনও এই সমস্ত দেশে বহুল প্রচারিত । গুলি করে, বিষ খাইয়ে, মাথা কেটে, অ্যাসিড ছুঁড়ে, শ্বাসরোধ করে, ঘুমের ওষুধ খাইয়ে, পাথর ছুঁড়ে, এমন নানান অমানবিক ও নির্মম উপায়ে বিভিন্ন দেশে অনার কিলিং করা হয়ে থাকে।
আসল গোয়েন্দা
প্রকৃতির নিয়মে দুটি মানুষ একে অপরের প্রেমে পড়ে, সমগ্র প্রাণীজগতেই এই নিয়ম প্রচলিত। কিন্তু প্রকৃতির সর্বশ্রেষ্ঠ প্রাণী, তথাকথিত সভ্য মানুষ, আজও তার সমস্ত যুক্তিবুদ্ধি দিয়েও এই সাধারণ ঘটনাকে মেনে নিতে পারে না। অথচ পৃথিবী প্রতিনিয়ত আধুনিক হয়ে চলেছে। সুদূর ১৬০০ শতকে লেখা শেক্সপিয়রের রোমিও জুলিয়েট–এর সময়ের মধ্যযুগীয় চিন্তাভাবনা যে আজ অবধি একচুলও পাল্টায়নি, বরং নৃশংসতায় হয়ত তাদের পূর্বসূরীদেরও ছাপিয়ে গেছে, তার উদাহরণ খবরের কাগজ খুললেই পাওয়া যায়। শিক্ষার অভাব নয়, গ্রামগঞ্জের কুসংস্কার নয়, বরং এই সমস্ত কিছুর সম্পূর্ণ উল্টোপিঠে অবস্থান করা মানুষও মানসিক দৈন্য কাটিয়ে উঠতে পারে না শুধুমাত্র বংশ ও শ্রেণীর অহঙ্কারে। আরও কত নিষ্পাপ প্রাণকে এইভাবে ঠুনকো সন্মানের গিলোটিনে বলি হতে হবে তা কে জানে।
সভ্যতার মোড়কে মোড়া মানুষ আজও আদিম বর্বর। কুসংস্কারের অন্ধকূপ থেকে না কেউ টেনে তুলবে না আমাদের ইচ্ছে হবে উঠে আসতে । দেখাযাক কতদিন এই নৃশংসতা জারি থাকে।
লেখিকা কে অসংখ্য ধন্যবাদ আরও একবার কলমের জোরে এগুলি প্রস্ফুটিত করার জন্যে। অপূর্ব লেখা 😍😍☺☺☺