টেলিভিশনে অভিনয় শুধুমাত্র রোজগারের কারণ হয়ে দাঁড়ালে সরে যাব: দেবেশ
RBN Web Desk: এবার মেগাধারাবাহিকে অভিনয় করতে চলেছেন নাট্যকার দেবেশ চট্টোপাধ্যায়। ‘হারানো সুর’ ধারাবাহিকে সঙ্গীতগুরু শশাঙ্কশেখরের ভূমিকায় থাকছেন তিনি। দীর্ঘ ১৭ বছর পর আবার টেলিভিশনের পর্দায় দেখা যাবে তাঁকে।
তবে নাটকের জগৎ থেকে ধারাবাহিকে আসাকে এক ধরণের ঐতিহ্য রক্ষা বলেই মনে করছেন তিনি। “এর আগেও নাটকের বহু শিল্পী ধারাবাহিকে অভিনয় করেছেন। রমাপ্রসাদ বণিক, গৌতম হালদার, সোহিনী সেনগুপ্ত সকলেই করছেন। আমিও করেছি। আর আমি যেহেতু অভিনেতা বা অভিনেতা-পরিচালক নই, বরং শুধুমাত্র পরিচালক, তাই এটা একটা নতুন কাজ হিসেবেই দেখছি। আমি সচরাচর অভিনয় করি না। কিছু ব্যতিক্রমী ক্ষেত্রে, যেমন কোনও অভিনেতার মৃত্যুর কারণে হয়তো আমি অভিনয় করেছি,” রেডিওবাংলানেট-কে জানালেন দেবেশ।
আরও পড়ুন: সব কান্নার শব্দ হয় না, বেজে উঠল পটদীপ
শশাঙ্কশেখরের চরিত্রে অভিনয় করতে রাজি হলেন কেন? “চরিত্রটা খুব ভালো লেগেছিল,” বললেন দেবেশ। “শশাঙ্কশেখর শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের এক প্রবাদপ্রতিম গুরু, যার নিজস্ব ঘরানা আছে। আবার ছেলে নক্ষত্রের সঙ্গে আদর্শগত বিরোধও আছে। সেটাকে তিনি নিজের ব্যর্থতা বলেই মনে করেন। ছেলে অন্য ধরণের গান গেয়ে বিখ্যাত হয়েছে, সে বাবার ঘরানাকে এগিয়ে নিয়ে যাবে না। হঠাৎই একদিন একটি মেয়ের গান শুনে, সঙ্গীতের বিশুদ্ধতা যা তিনি এতদিন খুঁজছিলেন, তা শশাঙ্কশেখর খুঁজে পেলেন। এখনও অবধি চরিত্রটা করতে ভালো লাগছে। চিত্রনাট্য করছে অদিতি মজুমদার আর সংলাপ লিখছে খেয়ালী দস্তিদার। দুজনেই যথেষ্ট নির্ভরযোগ্য। এরা আছে বলেই চরিত্রটার ওপর ভরসা রাখছি,” বললেন ‘উইঙ্কল টুইঙ্কল’-এর পরিচালক।
শশাঙ্কশেখরের মতো শক্তিশালী চরিত্রকেই তাঁর ধারাবাহিকে আসার কারণ হিসেবে ব্যাখ্যা করলেন দেবেশ। “আমার সাঙ্গীতিক পরিবেশে জন্ম। ছোট থেকেই বাড়িতে গান শুনে বড় হয়েছি। শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের পরিবেশে ছোট থেকেই থাকার ফলে গান শোনার কান তৈরি হয়ে গিয়েছিল। এই চরিত্রটা যে আমাকে আলাদা করে আকর্ষণ করেছিল এ কথা অস্বীকার করার জায়গা নেই,” বললেন তিনি।
তবে চরিত্রটিকে উপভোগ করার মতো উপাদান ফুরিয়ে গেলে তখন আর অভিনয় করবেন না বলে জানালেন দেবেশ। “আমি টাকার জন্য কাজটা করছি না। যখন ধারাবাহিকে অভিনয় শুধুমাত্র রোজগারের কারণ হয়ে দাঁড়াবে, তখনই আমি সরে যাব,” বললেন তিনি।
সব কাজ থেকেই কিছু না কিছু শেখা যায় বলে মনে করেন দেবেশ। “আমি কাজ না করে বসে থাকতে পারি না। ফাঁকা ছিলাম কিছুদিন। এই লকডাউনে লেখালেখি বা ছোট ছবি বানানো, এসব করেও কিছুটা সময় বেঁচে গেল। তাই ভাবলাম এই কাজটা করি। এই কাজ থেকেও নিশ্চয়ই কিছু শেখার থাকবে। তবে অভিনয় আর করব না, পরিচালনাতেই থাকতে চাই,” জানালেন তিনি।
আজ থেকে প্রতিদিন রাত ৯.০০টায় সান বাংলায় দেখা যাবে ‘হারানো সুর’।